শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ১২:৪৩ অপরাহ্ন

যারা বিনা হিসাবে জান্নাতে যাবে

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২৩
  • ৮১ Time View

পরকালে হিসাবের সময় মানুষের পূর্বাপর সব আমল উপস্থিত করা হবে। আল্লাহ বলেন, ‘সেদিন মানুষকে অবহিত করা হবে সে কী আগে পাঠিয়েছে এবং কী পেছনে রেখে গেছে।’ (সুরা : কিয়ামা, আয়াত : ১৩)

কিয়ামতের বিভীষিকাময় ময়দানে কেউ কারো হবে না। সবাই ইয়া নাফসি, ইয়া নাফসি করতে থাকবে।

এ প্রসঙ্গে কোরআনে এসেছে, ‘সেদিন মানুষ নিজের ভাই, নিজের মা, নিজের পিতা, নিজের স্ত্রী ও সন্তানাদি থেকে পালাবে। তাদের মধ্যে প্রত্যেক ব্যক্তির ওপর সেদিন এমন সময় এসে পড়বে, সে নিজেকে ছাড়া আর কারো প্রতি লক্ষ করার মতো অবস্থা থাকবে না।’ (সুরা : আবাসা, আয়াত : ৩৪-৩৭)
আল্লাহ তাঁর কতিপয় বান্দার প্রতি বিশেষ অনুগ্রহ করবেন। ফলে তিনি তাদের হিসাব থেকে মুক্তি দেবেন।

তিনি তাদের বলবেন, ‘নিশ্চয়ই আমি দুনিয়ায় তোমার অপরাধ আড়াল করেছিলাম, আজ আমি তোমার সে অপরাধ ক্ষমা করে দিলাম।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬০৭০)
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, আমার মহান প্রতিপালক আমাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে তিনি আমার উম্মতের ৭০ হাজার লোককে বিনা হিসাবে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন এবং তাদের কোনো রকম শাস্তিও হবে না। প্রতি হাজারের সঙ্গে থাকবে আরো ৭০ হাজার করে এবং আরো থাকবে আমার মহান প্রতিপালকের তিন মুঠো পরিমাণ। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৪২৮৬)

হাশরের মাঠে ভয়াবহ অবস্থা সত্ত্বেও কিছু মানুষ বিনা বিচারে বা বিনা হিসাবে জান্নাতে যাবে।

এ বিষয়ে হাদিস শরিফে এসেছে, আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রহ.) বলেন, একদিন রাসুল (সা.) বলেন, আমার কাছে সব উম্মতের লোকদের উপস্থাপন করা হলো। আমি দেখলাম, কোনো নবীর সঙ্গে মাত্র সামান্য কয়জন (তিন থেকে সাতজন অনুসারী) আছে। কোনো নবীর সঙ্গে একজন অথবা দুজন লোক রয়েছে। কোনো নবীকে দেখলাম তাঁর সঙ্গে কেউ নেই! এরই মধ্যে বিরাট একটি জামাত আমার সামনে পেশ করা হলো। আমি মনে করলাম, এটাই বুঝি আমার উম্মত।

কিন্তু আমাকে বলা হলো যে এটা হলো মুসা আলাইহিস সালাম ও তাঁর উম্মতের জামাত। কিন্তু আপনি অন্য দিগন্তে তাকান।
অতঃপর আমি সেই দিকে তাকাতেই আরো একটি বিরাট জামাত দেখতে পেলাম। আমাকে বলা হলো যে এটি আপনার উম্মত। আর তাদের সঙ্গে এমন ৭০ হাজার লোক আছে, যারা বিনা হিসাবে ও বিনা আজাবে সরাসরি জান্নাতে প্রবেশ করবে। এ কথা বলে তিনি (আল্লাহর রাসুল) উঠে নিজ ঘরে প্রবেশ করলেন। এদিকে লোকেরা (উপস্থিত সাহাবিরা) ওই সব জান্নাতি লোকের ব্যাপারে বিভিন্ন আলোচনা শুরু করে দিল, (কারা হবে সেই লোক) যারা বিনা হিসাবে ও বিনা আজাবে জান্নাতে প্রবেশ করবে?

কেউ কেউ বলল, সম্ভবত, ওই লোকেরা হলো তারা, যারা আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর সাহাবা তারা। কিছু লোক বলল, বরং সম্ভবত ওরা হলো তারা, যারা ইসলামে জন্মগ্রহণ করেছে এবং আল্লাহর সঙ্গে কখনো কাউকে শরিক করেনি। আরো অনেকে অনেক কিছু বলল। কিছুক্ষণ পরে আল্লাহর রাসুল (সা.) তাদের কাছে বের হয়ে এসে বলেন, তোমরা কী ব্যাপারে আলোচনা করছ? তারা ব্যাপারটি খুলে বললে আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, (বিনা বিচারে জান্নাতি লোক) হলো তারা, যারা—

(ক) দাগ কেটে রোগের চিকিৎসা করায় না,

(খ) অন্যের কাছে রুকইয়া বা ঝাড়ফুঁক করে দিতে বলে না এবং

(গ) কোনো জিনিসকে অশুভ লক্ষণ বলে মনে করে না,

(ঘ) বরং তারা শুধু আল্লাহর ওপর ভরসা রাখে।

এ কথা শুনে উক্কাশাহ ইবনু মিহসান নামের একজন সাহাবি উঠে দাঁড়ালেন এবং বলেন, (হে আল্লাহর রাসুল!) আপনি আমার জন্য দোয়া করুন, আল্লাহ যেন আমাকে তাদের দলভুক্ত করে দেন! তিনি বলেন, তুমি তাদের মধ্যে একজন। অতঃপর আর এক ব্যক্তি উঠে দাঁড়িয়ে বলল, আপনি আমার জন্যও দোয়া করুন, যেন আল্লাহ আমাকেও তাদের দলভুক্ত করে দেন। তিনি বলেন, উক্কাশাহ (এ ব্যাপারে) তোমার অগ্রগামী হয়ে গেছে। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫৭০৫, ৩৪১০; তিরমিজি, হাদিস : ২৪৪৬)

মহান আল্লাহ আমাদের বিনা হিসাবে জান্নাতে যাওয়ার তাওফিক দান করুন।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2019 bhabisyatbangladesh
Developed by: A TO Z IT HOST
Tuhin