রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১১:২০ পূর্বাহ্ন

পাপমুক্ত জীবন গড়তে মহানবী (সা.)-এর নির্দেশনা

Reporter Name
  • Update Time : শনিবার, ২৭ জানুয়ারি, ২০২৪
  • ৮৬ Time View

একজন মুমিনের জন্য পাপমুক্ত থাকা অত্যন্ত জরুরি। পাপ জাহান্নামের পথ দেখায়। অন্যদিকে নেকি বা পুণ্য জান্নাতের পথ দেখায়। বেশি বেশি নেক কাজ পাপ মিটিয়ে দেয়।

মানুষ তার সঙ্গী-সাথির দ্বারা প্রভাবিত হয়, পাপীদের সঙ্গ পাপপ্রবণতা বৃদ্ধি করে। নিম্নে পাপমুক্ত থাকার উপায় বর্ণনা করা হলো—
১. পাপকে বড় মনে করা : গোনাহ যে পর্যায়েরই হোক না কেন, তাকে ছোট মনে না করা; বরং তাকে পরকালে শাস্তির কারণ মনে করে তা থেকে বিরত থাকা জরুরি। রাসুল (সা.) বলেন, মুমিন ব্যক্তি তার গুনাহগুলোকে এত বিরাট মনে করে, যেন সে একটা পর্বতের নিচে উপবিষ্ট আছে, আর সে আশঙ্কা করছে যে হয়তো পর্বতটা তার ওপর ধসে পড়বে। আর পাপিষ্ঠ ব্যক্তি তার গুনাহগুলোকে মাছির মতো মনে করে, যা তার নাকের ওপর দিয়ে চলে যায়। (বুখারি, হাদিস : ৬৩০৮)

২. পাপীদের সঙ্গে অবস্থান না করা : পাপী ব্যক্তিদের সঙ্গে ওঠাবসা না করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘যখন তুমি দেখবে যে লোকেরা আমাদের আয়াতসমূহে ছিদ্রান্বেষণ করছে, তখন তুমি তাদের থেকে সরে যাও, যতক্ষণ না তারা অন্য কথায় লিপ্ত হয়। আর যদি শয়তান তোমাকে এটা ভুলিয়ে দেয়, তাহলে স্মরণ হওয়ার পর আর জালিম সম্প্রদায়ের সঙ্গে বসবে না।’ (সুরা : আনআম, আয়াত : ৬৮)

 

৩. পাপের দিকে ঝুঁকে না যাওয়া : মানুষের অন্তর মন্দপ্রবণ।

মহান আল্লাহ ইউসুফ (আ.)-এর ভাষ্য এভাবে উল্লেখ করেন, ‘আর আমি নিজেকে নির্দোষ মনে করি না। নিশ্চয়ই মানুষের মন মন্দপ্রবণ, শুধু ওই ব্যক্তি ছাড়া, যার প্রতি আমার রব দয়া করেন। নিশ্চয়ই আমার রব ক্ষমাশীল ও দয়াবান।’ (সুরা : ইউসুফ, আয়াত : ৫৩)
সুতরাং মানুষের অন্তরকে পাপের পঙ্কিলতা ও কলুষ-কালিমা মুক্ত রাখার চেষ্টা করা জরুরি, যাতে তা পাপের দিকে ঝুঁকে না পড়ে।

৪. উত্তম লোকদের সঙ্গে অবস্থান করা : মানুষ তার সঙ্গী-সাথির দ্বারা প্রভাবিত হয়।

যেমন—রাসুল (সা.) বলেন, মানুষ তার বন্ধুর ধ্যান-ধারণার অনুসারী হয়ে থাকে। সুতরাং তোমাদের সবার খেয়াল রাখা উচিত সে কার সঙ্গে বন্ধুত্ব স্থাপন করছে। (তিরমিজি, হাদিস : ২৩৭৮)

৫. পাপ থেকে সর্বদা তাওবা-ইস্তেগফার করা : শয়তান সর্বদা মানুষকে পথভ্রষ্ট করতে ব্যাপৃত আছে। তার প্ররোচনায় মানুষ পাপাচারে লিপ্ত হয়। পাপ হয়ে গেলে সঙ্গে সঙ্গে তাওবা করতে হবে। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘(আল্লাহর একনিষ্ঠ বান্দা তারা) যারা কখনো কোনো অশ্লীল কাজ করলে কিংবা নিজের ওপর কোনো জুলুম করলে আল্লাহকে স্মরণ করে। অতঃপর স্বীয় পাপসমূহের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে। বস্তুত আল্লাহ ছাড়া পাপসমূহ ক্ষমা করার কে আছে? আর যারা জেনেশুনে স্বীয় কৃতকর্মের ওপর হঠকারিতা প্রদর্শন করে না।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১৩৫)

৬. পাপ প্রকাশ না করা : পাপ করার পর তা প্রকাশ করা যাবে না। কেননা আল্লাহ বান্দার পাপ গোপন রাখেন। কিন্তু বান্দা নিজে তা প্রকাশ করলে ওই ব্যক্তিকে আল্লাহ ক্ষমা করেন না। রাসুল (সা.) বলেন, আমার সব উম্মতকে মাফ করা হবে, তবে প্রকাশকারী ছাড়া। আর নিশ্চয়ই এ বড়ই অন্যায় যে কোনো ব্যক্তি রাতের বেলা অপরাধ করল, যা আল্লাহ গোপন রাখলেন। কিন্তু সে সকাল হলে বলে বেড়াতে লাগল, হে অমুক! আমি আজ রাতে এই এই কাজ করেছি। অথচ সে এমন অবস্থায় রাত কাটাল যে, আল্লাহ তার কর্ম লুকিয়ে রেখেছিলেন, আর সে ভোরে উঠে তার ওপর আল্লাহর দেয়া আবরণ খুলে ফেলল। (মুসলিম, হাদিস : ২৯৯০)

৭. পাপের পর নেকির কাজ করা : শয়তানের প্ররোচনায় পাপ হয়ে গেলে, বুঝতে পারার পর তাওবা করা এবং তারপর নেকির কাজ করা জরুরি। হাদিসে এসেছে, আবু জার (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) আমাকে বলেছেন, তুমি যেখানেই থাকো আল্লাহকে ভয় করো, মন্দ কাজের পরপরই ভালো কাজ করো, তাতে মন্দ দূরীভূত হয়ে যাবে এবং মানুষের সঙ্গে উত্তম আচরণ করো।’ (তিরমিজি, হাদিস : ১৯৮৭)

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2019 bhabisyatbangladesh
Developed by: A TO Z IT HOST
Tuhin