শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ০৫:০৭ অপরাহ্ন

যে কারণে মানুষ বিপদে পড়ে

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ৫ নভেম্বর, ২০২৩
  • ৭৬ Time View

মানুষ কঠিন বিপদে পড়ে অনেক সময় ধৈর্যশক্তি হারিয়ে ফেলে। অথচ আল্লাহ মানুষের মর্যাদা বৃদ্ধির জন্য নানাভাবে পরীক্ষা করেন। আস্থা ও বিশ্বাসের স্তর অনুসারে মানুষ বিপদে পড়ে। ইরশাদ হয়েছে, ‘মানুষ কি মনে করে যে আমরা ঈমান এনেছি বললেই তাদের পরীক্ষা না করে ছেড়ে দেওয়া হবে।

আমি তাদের আগে অনেককে পরীক্ষা করেছি, আল্লাহ জানাবেন কারা সত্য বলেছে এবং তিনি জানাবেন কারা মিথ্যাবাদী।’
(সুরা : আনকাবুত, আয়াত : ৩)

আল্লাহর সবচেয়ে আস্থাভাজন হিসেবে নবী-রাসুলরা নানাভাবে পরীক্ষার মুখোমুখি হয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘আপনার আগে অনেক রাসুলকে মিথ্যারোপ করা হয়েছে, মিথ্যা প্রতিপন্ন করার পরও তারা ধৈর্য ধারণ করেছে, তাদের কষ্ট দেওয়া হয়েছে, অবশেষে তাদের কাছে আমার সাহায্য এসেছিল, আমার নির্দেশনার কোনো পরিবর্তনকারী নেই, আপনার কাছে রাসুলদের সংবাদ এসেছে।’

 

(সুরা : আনআম, আয়াত : ৩৪)

আল্লাহ মানুষকে পরীক্ষা করার ক্ষেত্রে কিছু নীতিমালা অনুসরণ করেন।

পবিত্র কোরআনে এ বিষয়ে বিবরণ রয়েছে। নিম্নে তা উল্লেখ করা হলো—
সম্মান ও মর্যাদা বৃদ্ধি : বিপদে ধৈর্য ধারণ করলে মর্যাদা বৃদ্ধি পায়। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, আল্লাহর পক্ষ থেকে কোনো বান্দার জন্য যখন এমন কোনো অবস্থান নির্ধারিত হয়, যেখানে সে নিজ আমল দিয়ে পৌঁছতে পারে না; তখন আল্লাহ তাকে তার শরীর বা সম্পদ বা সন্তান-সন্ততির মাধ্যমে পরীক্ষা করেন। অতঃপর সেই ব্যক্তি ধৈর্য ধারণ করে সেই অবস্থানে পৌঁছে, যা আল্লাহ তার জন্য নির্ধারণ করে রেখেছিলেন।

(আবু দাউদ, হাদিস : ৩০৯০)

জুলুমের পরিণতি : আল্লাহর পরীক্ষার আরেকটি বিশেষত্ব হলো, বিপদ-আপদ যতই কঠিন হোক, মুমিনরা সফলকাম হবে এবং জালিমরা অপদস্থ হবে। শেষ পর্যন্ত কাফির ও অপরাধীরা নিজেদের অন্যায় আচরণের শাস্তি ভোগ করবে। আল্লাহ বলেন, ‘তাদের আগে মিথ্যারোপ করেছি তাদের কাছে এমনভাবে আজাব এসেছিল যে তারা তা উপলব্ধি করতে পারেনি। আমি তাদের দুনিয়ার জীবনে লাঞ্ছনা উপভোগ করাব এবং আখিরাতের শাস্তি আরো বড়, যদি তারা তা জানত।’

(সুরা : জুমার, আয়াত : ২৬)

শাস্তিদানে ধীরগতি : সাধারণত আল্লাহ কাউকে শাস্তি দিতে চাইলে তাকে অবকাশ দেন এবং কালবিলম্ব করেন।

যেন সে অনুতপ্ত হয় এবং অন্যায় কাজ পরিহার করে। আল্লাহ বলেন, ‘আল্লাহ মানুষকে কৃতকর্মের জন্য শাস্তি দিলে ভূপৃষ্ঠের কোনো জীবজন্তুকে রেহাই দিতেন না, তবে তিনি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত তাদের অবকাশ দেন, অতঃপর নির্ধারিত সময় ঘনিয়ে এলে (তাঁর নির্দেশ পালিত হয়) নিশ্চয়ই আল্লাহর তাঁর বান্দাদের সম্পর্কে সর্বদ্রষ্টা।’
(সুরা : ফাতির, আয়াত : ৪৫)

কখনো দ্রুত শাস্তি : অনেককে আল্লাহ তাত্ক্ষণিক শাস্তি দেন। এর পেছনে হয়তো অনেক সময় কারো মকবুল দোয়া কিংবা মজলুমকে সহযোগিতা করার উদ্দেশ্য থাকে। ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, তোমাদের যার দোয়ার দরজা খুলে গেছে তার জন্য রহমতের দরাজ উন্মুক্ত হয়েছে। আল্লাহর কাছে যা কিছু চাওয়া হয় এর মধ্যে শান্তি ও নিরাপত্তা চাওয়া তাঁর কাছে সবচেয়ে বেশি প্রিয়। যে বিপদ এসেছে এবং যা আসেনি দোয়া তাতে উপকার বয়ে আনে। হে আল্লাহর বান্দা, তোমরা দোয়া আবশ্যক করে নাও।

(মুসতাদরাকে হাকিম, হাদিস : ১৮১৩)

ইমাম গাজালি (রহ.) বলেছেন, অনেকে প্রশ্ন করতে পারে, তাকদির যদি পরিবর্তন না হয় তাহলে দোয়া করে লাভ কী? এ ক্ষেত্রে মূল কথা হলো, তাকদিরের বিষয়টি দোয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত। কারণ দোয়ার মাধ্যমে বিপদ-আপদ কেটে যায় এবং রহমত অবতীর্ণ হয়। যেভাবে বীজের মাধ্যমে মাটি থেকে ফসল উৎপন্ন হয় এবং ধনুক তীর রক্ষা করে, তেমনি দোয়া বিপদ থেকে রক্ষা করে।

(ইহইয়াউ উলুমুদ্দিন, পৃষ্ঠা : ১/৩৩৩)

আত্মীয়তা ছিন্ন করা : দুনিয়ায় বিভিন্ন কারণে মানুষ দ্রুত শাস্তির মুখোমুখি হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা এবং মাতা-পিতার অবাধ্য হওয়া। রাসুল (সা.) বলেন, এমন কিছু পাপকাজ রয়েছে, যার শাস্তি আল্লাহ দুনিয়ায় দ্রুত দিয়ে দেন। তা ছাড়া  আখিরাতেও এর শাস্তি বরাদ্দ রয়েছে। তা হলো, অন্যের ওপর জুলুম করা এবং আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2019 bhabisyatbangladesh
Developed by: A TO Z IT HOST
Tuhin