অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডে ম্যাচে দুর্দান্ত ভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে ইংল্যান্ড। গতকাল ম্যানচেস্টারে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২৪ রানে জয়লাভ করেছে ইংল্যান্ড। এই জয়ের ফলে সিরিজে ১-১ এ সমতা আনল ইংল্যান্ড। এদিন টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো করতে পারেনি জনি বেয়ারস্টো।
রানের খাতা খোলার আগেই মিচেল স্টার্কের বলে কট বিহাইন্ড হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান জনি বেয়ারস্টো। দলিয় ২৯ রানের মাথায় আরেক ওপেনার জেসন রয় রান আউট হয়ে ফিরলে শুরুতেই চাপে পড়ে ইংল্যান্ড। দুই ওপেনারকে হারিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন জো রুট এবং মর্গ্যান।
এই দুজনের ৬১ রানের জুটি ভাঙেন স্পিনার অ্যাডাম জাম্পা। ৩৯ রান করে স্লিপে ক্যাচ দেন রুট। দলীয় ১২৭ রানের মাথায় অধিনায়ক মরগানকে ৪২ রান করে আউট করেন অ্যাডাম জাম্পা। জ্যাম্পার দুই উইকেটের মাঝে জস বাটলারকে ফেরান প্যাট কামিন্স। আগের ম্যাচে সেঞ্চুরির দেখা পাওয়া স্যাম বিলিংসকে দ্রুতই
প্যাভিলিয়নে দ্রুত ফিরেন স্যাম কারান। থিতু হয়ে বিদায় নেন ক্রিস ওকসও। রুটের বিদায় দিয়ে যে ধস নামে তাতে ৫৯ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে দুইশর আগেই গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় পড়ে ইংল্যান্ড। তবে এদিন ইংল্যান্ডকে টেনে তোলেন টম কারান এবং আদিল রশিদ। ১৪৯ রান থেকে ২২৫ রানে নিয়ে যান এই দুই ক্রিকেটার।
৫৬ বলে ৭৬ রানের জুটি গড়েন এই দুই ক্রিকেটার। ৫ চারে ৩৭ রান করে শেষ ওভারে ফিরে যান টম। তিন চার ও এক ছক্কায় ৩৫ রানে অপরাজিত থাকেন রশিদ। নির্ধারিত ৬০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ২৩১ রান সংগ্রহ করে ইংল্যান্ড। জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ডেভিড ওয়ার্নার প্যাভিলিয়নেরপাঠিয়ে দেন আর্চার।
দলীয় ৩৭ রানের মাথায় অস্ট্রেলিয়া দ্বিতীয় উইকেট তুলে নেন তিনি। আর্চারের নিখুঁত বাউন্সার ঠিকমতো খেলতে না পেরে কিপারকে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন মার্কাস স্টয়নিস। তবে অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ এবং লাবুশেনের ব্যাটে শুরুর ধাক্কা সামাল দেয় অস্ট্রেলিয়া। তাদের শতরানের জুটিতে দৃঢ় ভিতের উপর দাঁড়ায় সফরকারীরা।
তবে আবারো অস্ট্রেলিয়ার জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায় ওকস-আর্চার। ৩ ওভার এর মধ্যেই ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন এই দুই ফাস্ট বোলার। ওকস-আর্চারের আঘাতে ২ উইকেটে ১৪৪ রান থেকে অস্ট্রেলিয়ার স্কোর হয়ে যান ১৪৭/৬। ওকসের বলে এলবিডব্লিউর সফল রিভিউ নিয়ে লাবুশেনকে ফিরিয়ে ১০৭ রানের জুটি ভাঙে ইংল্যান্ড।
এরপরেই মিচেল মার্শের উইকেট তুলে নেন আর্চার।পরপর দুই ওভারে বিপজ্জনক ফিঞ্চ ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে ফিরিয়ে ম্যাচ ইংল্যান্ডের দিকে ঘুরিয়ে দেন ওকস। অস্ট্রেলিয়া অধিনায়কের ১০৫ বলে খেলা ৭৩ রানের দায়িত্বশীল ইনিংস গড়া ৮ চার ও এক ছক্কায়। একটু ঝুঁকি নিয়ে আগেভাগেই আর্চার-ওকসের কোটা শেষ
করিয়ে দেন ইংলিশ অধিনায়ক। দলের প্রয়োজনের সময় দারুণভাবে এগিয়ে আসেন স্যাম কারান। পরপর দুই বলে ফিরিয়ে দেন কামিন্স ও স্টার্ককে। অ্যালেক্স কেয়ারি ছিলেন বলে তখনও আশা বেঁচে ছিল অস্ট্রেলিয়ার। তাকে ফিরিয়েই সফরকারীদের ইনিংসের ইতি টানেন রশিদ। সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ইল্যান্ড: ৫০ ওভারে ২৩১/৯ (রয় ২১, বেয়ারস্টো ০, রুট ৩৯, মর্গ্যান ৪২, বাটলার ৩, বিলিংস ৮, ওকস ২৬, স্যাম কারান ১, টম কারান ৩৭, রশিদ ৩৫*, আর্চার ৬*; স্টার্ক ১০-১-৩৮-২, হেইজেলউড ১০-২-২৭-১, কামিন্স ১০-৩-৫৬-১, মার্শ ৮-১-৪৯-১, স্টয়নিস ২-০-২০-০, জ্যাম্পা ১০-০-৩৬-৩) অস্ট্রেলিয়া: ৪৮.৩
ওভারে ২০৭ (ওয়ার্নার ৬, ফিঞ্চ ৭৩, স্টয়নিস ৯, লাবুশেন ৪৮, মার্শ ১, কেয়ারি ৩৬, ম্যাক্সওয়েল ১, কামিন্স ১১, স্টার্ক ০, জ্যাম্পা ২, হেইজেলউড ৮*; ওকস ১০-১-৩২-৩, আর্চার ১০-২-৩৪-৩, টম কারান ১০-০-২৮-০, রশিদ ৯.৪-০-৬৮-১, স্যাম কারান ৯-০-৩৫-৩) ম্যাচের ফলাফল : ইংল্যান্ড ২৪ রানে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ : জফ্রা আর্চার (ফাস্ট বোলার)