করোনার এই সময়ে ক্রিকেটাঙ্গনে এক রকম বিয়ের ধুম পড়েছে। মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, নাজমুল হোসেন শান্ত, সাদমান ইসলামের পর এবার মেহেদী হাসান বিয়ের কাজটা সেরে ফেললেন।
জাতীয় দলের তরুণ অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার মেহেদী রোববার (২৬ জুলাই) সন্ধ্যায় বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সেরেছেন। কনে তার নিজ শহর খুলনারই, নাম ঋতু। এবার এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়ার কথা তার। যদিও করোনার কারণে সেই পরীক্ষা নির্ধারিত সময়ে হতে পারেনি।
২৫ বছর বয়সী মেহেদী জাতীয় দলের হয়ে ৪টি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন। ঘরোয়া ক্রিকেটে নিজেকে মেলে ধরেছেন দারুণ ভাবে। বিপিএলে রয়েছে তার বেশ কিছু দুর্দান্ত ইনিংস। এখন পর্যন্ত ৪১টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ, ৭০টি লিস্ট ‘এ’ ম্যাচ ও ৪৪টি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন তিনি।
সরাসরি ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে খেলতে হলে বাংলাদেশকে যা করতে হবে
২০১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপের সরাসরি অংশগ্রহণ করেছিল বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল। আইসিসি ওয়ানডে র্র্যাংকিংয়ে সপ্তম স্থানে থেকে ওই বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করেছিল বাংলাদেশ। তবে ২০২৩ বিশ্বকাপ সরাসরি খেলতে হলে আর র্র্যাংকিংয়ের দিকে তাকাতে হবে না কোন দেশকে। বৃহস্পতিবার থেকে চালু হচ্ছে বিশ্বকাপের সুপার লিগ রাউন্ড খেলা। বিশ্বজুড়ে করোনা ভাইরাসের কারণে কয়েক মাস পিছিয়ে যায় আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ সুপার লিগ।
অবশেষে আগামী বৃহস্পতিবার ইংল্যান্ড বনাম আয়ারল্যান্ড এর মধ্যকার তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচের মাধ্যমে বিশ্বকাপের সুপার লিগের খেলা শুরু হবে। প্রাথমিকভাবে ২০২৩ সালের বিশ্বকাপের সূচি নির্ধারিত ছিল ফেব্রুয়ারি-মার্চে। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে দুইটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সূচিতে পরিবর্তন আনায় ওয়ানডে বিশ্বকাপও পিছিয়ে নেয়া হয়েছে অক্টোবর-নভেম্বর মাসে।
আইসিসি ওয়ানডে র্যাংকিংয়ের শীর্ষ থাকা ১২ দলের সঙ্গে ২০১৫-১৭ মৌসুমের সুপার লিগের চ্যাম্পিয়ন দল নেদারল্যান্ডসকে সাথে নিয়ে মোট ১৩ দলের হবে এই ওয়ানডে সুপার লিগ। যেখানে হোম এবং এওয়ে ভিত্তিতে ৪টি করে মোট ৮টি তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলবে। আয়োজক দেশ ছাড়া এই লিগের শীর্ষে ৭ দল সরাসরি সুযোগ পাবে ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলা। ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হবে ভারতে।
আইসিসির মহাব্যবস্থাপক জিওফ অ্যালারডিস বলেছেন, ‘এই লিগের মাধ্যমে আগামী তিন বছর ওয়ানডে ক্রিকেটে বাড়তি মাত্রা যোগ হবে। কেননা এর সঙ্গে ২০২৩ সালের বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ জড়িত। সুপার লিগের ফলে বিশ্বের ক্রিকেট দর্শকরা আরও জমজমাট খেলা দেখতে পারবে।’
তিনি বলেন, ‘গত সপ্তাহে ২০২৩ সালের বিশ্বকাপটি সে বছরের শেষের দিকে আয়োজন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এর ফলে করোনাভাইরাসের কারণে যেসব সিরিজ স্থগিত হয়ে গেছে, সেগুলো আয়োজন করার যথেষ্ঠ সময় পাবো আমরা। এখন আমরা মাঠের খেলার মাধ্যমেই বাছাইয়ের সিদ্ধান্ত নিতে পারব।’
একেকটি সিরিজ হবে তিন ম্যাচের। সুপার লিগ পর্বে প্রতিটি জয়ের জন্য থাকছে ১০ পয়েন্ট। টাই বা পরিত্যক্ত ম্যাচে ৫ পয়েন্ট। তিন বছরের পালা শেষে লিগের শীর্ষ ৭ দল সরাসরি অংশ নেবে ওয়ানডের ২০২৩ বিশ্বকাপে, যার আয়োজক ভারত। কোহলির দেশের অবশ্য অতশত ভাবনা নেই, স্বাগতিক হিসেবেই সরাসরি খেলতে পারবে বিশ্বমঞ্চে।
যারা সরাসরি বিশ্বকাপে জায়গা করে নিতে পারবে না, সেই ৫ দল ও সহযোগী ৫ দলকে পরীক্ষা দিতে হবে আরেকটি বাছাইপর্বে। সেখান থেকে পরের বিশ্বকাপে যাবে মাত্র দুটি দল। ১০ দল নিয়ে হবে ভারতের বিশ্ব আসরটি।
এই বছরের শেষের দিকে শ্রীলংকার বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ দিয়ে এই টুর্নামেন্টের যোগ দেবে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের পরবর্তী সিরিজ চূড়ান্ত সময়সূচী
ডিসেম্বর-২০২০, বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা সফর (ম্যাচ: ৩ ওয়ানডে, স্থান: বাংলাদেশ) জানুয়ারী – ফেব্রুয়ারী ২০২১, ওয়েস্ট ইন্ডিজ-বাংলাদেশ সফর (ম্যাচ: ৩ টেস্ট, ৩ ওয়ানডে এবং ২ টি-টুয়েন্টি, স্থান: বাংলাদেশ) ফেব্রুয়ারি – মার্চ ২০২১ নিউজিল্যান্ড- বাংলাদেশ সফর (ম্যাচ: ৩ ওয়ানডে এবং ৩ টি -টুয়েন্টি, স্থান: নিউজিল্যান্ড)
জুন – জুলাই ২০২১ বাংলাদেশ জিম্বাবুয়ে সফর
(ম্যাচ: ২ টেস্ট, ৩ ওয়ানডে এবং ৩ টি -টুয়েন্টি, স্থান: জিম্বাবুয়ে) সেপ্টেম্বর – অক্টোবর ২০২১ বাংলাদেশ সফর (ম্যাচ: ৩ ওয়ানডে এবং ৩ টি -টুয়েন্টি, স্থান: বাংলাদেশ) নভেম্বর – ডিসেম্বর ২০২১ পাকিস্তান বাংলাদেশ সফর, (ম্যাচ: ২ টেস্ট এবং ৩ টি টুয়েন্টি, স্থান: বাংলাদেশ)
ডিসেম্বর ২০২১, বাংলাদেশ -শ্রীলঙ্কা সফর (ম্যাচ: ২ টেস্ট স্থান: বাংলাদেশ) ডিসেম্বর-জানুয়ারী ২০২১-২২ বাংলাদেশ নিউজিল্যান্ড সফর (ম্যাচ: ২ টেস্ট এবং ৩ টি টুয়েন্টি, স্থান: নিউজিল্যান্ড) ফেব্রুয়ারি – মার্চ ২০২২ আফগানিস্তান বাংলাদেশ সফর (ম্যাচ: ৩ ওয়ানডে, ২ টি টুয়েন্টি স্থান: বাংলাদেশ) মার্চ ২০২২ বাংলাদেশ দক্ষিণ আফ্রিকা সফর (ম্যাচ: ২ টেস্ট এবং ৩ ওয়ানডে স্থান: দক্ষিণ আফ্রিকা)
অনেকগুলি হাফ সেঞ্চুরি এবং সেঞ্চুরি মিস হয়ে যাচ্ছে : মুশফিকুর রহিম
দীর্ঘ চার মাস ঘরে বসে থাকার পর অবশেষে এক সপ্তাহ জন্য ব্যক্তিগত অনুশীলনের সুযোগ পেয়েছিল ক্রিকেটাররা। মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম সহ দেশের আরও তিনটি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে গত ১৯ জুলাই থেকে ক্রিকেটারদের ব্যক্তিগত অনুশীলনের জন্য খুলে দেওয়া হয়। রোববার (২৬ জুলাই) শেষ হয় ব্যক্তিগত অনুশীলনের প্রথম পর্ব।
অনুশীলনের শেষ দিনে মিরপুরের হোম অব ক্রিকেটে ব্যস্ত সময় পার করেছেন ক্রিকেটাররা। মুশফিকুর রহিম, ইমরুল কায়েস, মোহাম্মদ মিঠুন ও তাসকিন আহমেদ শেষদিনে অনুশীলন করেন। সকাল সাড়ে আটটার দিকে অনুশীলনে আসেন মুশফিক। এসেই জিমে ৩০ মিনিটের মতো অনুশীলন করেই চলে যান ইনডোরে। সেখানে ঘণ্টাখানেক নেটে ব্যাটিং করেন। এরপর স্টেডিয়ামের মূল মাঠে কিপিং অনুশীলনে করেন তিনি।
ইমরুল কায়েস, মোহাম্মদ মিঠুন, তাসকিন আহমেদ নির্দিষ্ট সময় অনুযায়ী ব্যাটিং, রানিং ও জিম সেশনে ব্যস্ত সময় কাটিয়ে শেষ করেন অনুশীলন। এক সপ্তাহের অনুশীলনে মুশফিকুর রহিম ছিলেন দারুণ সপ্রতিভ। এবং সপ্তাহের প্রতিটি দিনের প্রতিটি সেশনই কাজে লাগিয়েছেন।
বিসিবির সূচি অনুযায়ী ব্যাটিং, রানিং, জিম তো করেছেনই সুচির বাইরে গিয়েও ব্যক্তিগত উদ্যোগে সেরেছেন কিপিং অনুশীলন। এতে করে যথেষ্টই তৃপ্ত লাল-সবুজের এই ব্যাটিং কাণ্ডারী। এখন তিনি মুখিয়ে আছে মাঠের লড়াইয়ে ফিরতে।
‘এখন মুখিয়ে আছি মাঠের মানুষ যেহেতু মাঠেই ফিরতে পারি এবং ম্যাচ খেলতে পারি। একজন ক্রিকেটার হিসেবে আমরা যেন ফিটনেস ধরে রেখে, স্কিল নিয়ে কাজ করে মানসিকভাবে ফিট থাকতে পারি সেটা চেষ্টা করতে হবে। আমরা সে কাজগুলোই করছি।
নিয়মিত কোচদের সাথে বসছি, অনলাইনে অনেক আলোচনা করছি। আমরা মনে করি সব মিলিয়ে সময়টা খারাপ যায়নি। পরিবারের সাথে ভালো একটা সময় কেটেছে। ‘ রোববার (২৬ জুলাই) প্রথম পর্বের ব্যক্তিগত অনুশীলনের শেষে বিসিবি’র পাঠানো হোয়াটসঅ্যাপের ভিডিওবার্তায় তিনি এ কথা বলেন।
মুশফিক এসময় বিসিবিকে ধন্যবাদ জানান এমন সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন অনুশীলন আয়োজনের জন্য। ‘বিসিবিকে অসংখ্য ধন্যবাদ তারা আমাকে এমন সুযোগ করে দিয়েছে। বিশেষ করে ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগকে, তারা এত সুন্দর করে পরিকল্পনামাফিক ৭-৮ দিন যাই অনুশীলন করেছি ভালো ছিল। ‘
ইংল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজের টেস্ট সিরিজ চলছে। টিভিতে সেই সিরিজ দেখে আফসোস লাগে মুশফিকের। ক্রিকেট ছাড়া কতটা কষ্টে আছেন, তার এই কথাতেই তা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, ‘ খেলা দেখলে আসলে আফসোস লাগে সারাদিন বাসায় বসে পরিবারের সাথে সময় কাটানোর পাশাপাশি এখন খেলাটাই দেখা হয় একটু হলেও খারাপ লাগে যে অনেকগুলো ৫০ বা ১০০ মিস হয়ে যাচ্ছে!’