ভারতের উইকেটে বল সুইং করে না, সিরিজ শুরুর আগে জুনাইদ খানকে মজা করে খোঁচা দিয়েছিলেন বিরাট কোহলি। জুনাইতের জবাব ছিল, “ঠিক আছে, দেখে নেব।” তা তিনি দেখে নিয়েছিলেন বটে। ওয়ানডে সিরিজের তিন ম্যাচে শুধু আউটই করাই নয়, পাকিস্তানি পেসার একরকম বোতলবন্দি করে রেখেছিলেন কোহলিকে।
একটি ইউটিউব শোতে জুনাইদ বলছিলেন ২০১২-১৩ সালের সিরিজের কথা। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের সবকটিতে সেবার কোহলিকে আউট করেছিলেন জুনাইদ। ভারতে গিয়ে পাকিস্তান জিতেছিল সিরিজ।
ওই সিরিজের আগে অসাধারণ ফর্মে ছিলেন কোহলি। সিরিজের আগের ৯ ইনিংসে ছিল ৫ সেঞ্চুরি ও ১ ফিফটি। এর মধ্যে এশিয়া কাপে পাকিস্তানের বিপক্ষেই মিরপুরে ১৮৩ রানের বিধ্বংসী অপরাজিত ইনিংসটিও ছিল। কিন্তু দেশের মাটিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজে কোহলি ছিলেন ব্যর্থ, পেরে ওঠেননি মূলত জুনাইদের সঙ্গেই।
সিরিজের প্রথম ম্যাচে চেন্নাইতে জুনাইদের ৫ বল খেলে শূন্য রানে ফিরেছিলেন কোহলি। দ্বিতীয় ম্যাচে কলকাতায় কোহলির রান ছিল ৯ বলে ৬, কিন্তু জুনাইদের ৪ বলে শূন্য করে আউট হয়েছিলেন। শেষ ম্যাচে কোহলি করেছিলেন ১৭ বলে ৭। জুনাইদের ১২ বল খেলে করতে পেরেছিলেন ১।
সব মিলিয়ে তিন ম্যাচে জুনাইদের ২১ বলে কোহলির রান ছিল ১, আউট হয়েছিলেন তিনবার। সেই সিরিজে ফিরে তাকিয়ে পাকিস্তানের বাঁহাতি পেসার শোনালেন, কীভাবে কোহলির বিপক্ষে সাফল্য পেয়েছিলেন।
“ তখন আমি টেস্ট দলে নিয়মিত ছিলাম। কিন্তু ওয়ানডে দলে ফিরলাম ওই সিরিজ দিয়ে। এজন্য নিজেকে প্রমাণ করার তাগিদ ছিল। এটাও জানতাম, ভারতের বিপক্ষে ভালো করলে প্রশংসাও মিলবে অনেক। এজন্য ঠিক করেছিলাম, রান যতই যাক, উইকেট প্রচুর নিতে হবে।”
“ একটু চাপও ছিল, প্রথম বলটি ‘নো’ বল করলাম। পরে তাকে পরাস্ত করতে পারলাম। তখন মনে হলো, ‘সাধারণ ব্যাটসম্যানই তো সে।’ আত্মবিশ্বাস পেয়ে গেলাম। সিরিজ শুরুর আগে বিরাট আমাকে মজা করে বলেছিল, ‘আমাদের ঘরের মাঠে খেলা, সুবিধা করতে পারবে না। এখানে সুইংও হবে না।’ আমিও মজা করেই বলেছিলাম, ‘ঠিক আছে, দেখে নেব আমিও।’ বিশ্বাসটা ছিল, কারণ তখন আমি ছন্দে ছিলাম।”
জুনাইদ জানালেন, ঘরোয়া ক্রিকেটে প্রচুর বোলিং করে ছন্দে ছিলেন বলেই আত্মবিশ্বাস পেয়েছিলেন তিনি। ওই সিরিজের আগে ফয়সালাবাদে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলছিলাম। প্রতি ম্যাচে ৩৫-৪০ ওভার বোলিং করেছি। এজন্যই খুব ভালো ছন্দে ছিলাম।” কোহলিকে সেবার দাঁড়াতে না দিলেও জুনাইদ এটা স্বীকার করে নিলেন, ভারতীয় অধিনায়কই সময়ের সেরা ব্যাটসম্যান।
“ কোনো সন্দেহ নেই, তিন সংস্করণ মিলিয়ে কোহলিই সেরা। বাবর আজম, জো রুট, কেন উইলিয়ামসন, স্টিভ স্মিথ, ওরা প্রজন্মের সেরা ব্যাটসম্যান। কিন্তু যে কাউকে জিজ্ঞেস করুন, সবাই বলবে, সবার ওপরে কোহলি। কারণ তিন সংস্করণেই সে অসাধারণ পারফর্ম করে চলেছে।”
ঘণ্টার পর ঘণ্টা শুধু কাঁদতেন পাকিস্তানি ওপেনার
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যাত্রা শুরুর আগে থেকেই স্বজনপ্রীতির বিষয়ে কটুকথা শুনে আসছেন পাকিস্তান ক্রিকেট দলের বাঁহাতি ওপেনার ইমাম উল হক। দেশটির সাবেক অধিনায়ক ও প্রধান নির্বাচক ইনজামাম উল হক তারা চাচা হওয়ার কারণে, সবাই ধরেই নেয় যে অনৈতিকভাবে দলে নেয়া হয়েছে ইমামকে।
অথচ ২০১৭ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করা ইমাম এখনও পর্যন্ত ওয়ানডে ক্রিকেটে দেখিয়েছেন দারুণ পারফরম্যান্স। একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৩৭ ওয়ানডে খেলে সেঞ্চুরি করেছেন ৭টি, ফিফটি রয়েছে ৬টি, প্রায় ৫৪ গড়ে তার নামের পাশে রানসংখ্যা ১৭২৩। তবু এক-দুই ম্যাচ খারাপ গেলেই শুনতে হয় স্বজনপ্রীতির কথা।
ক্যারিয়ারের সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানিয়ে নিতে শুরু করেছেন ইমাম। তবে শুরুর দিকে এসব বিষয়ে খুবই মর্মাহত হতেন ২৪ বছর বয়সী এ ওপেনার। এমনকি পাকিস্তান দলে তার তেমন কোনো বন্ধুও ছিল না। ফলে একা একাই শাওয়ার রুমে কান্না করতেন ইমাম। ইএসপিএন ক্রিকইনফোকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এ বিষয়ে কথা বলেছেন তিনি।
‘সত্যি বলতে, আমি যখন প্রথমবারের মতো পাকিস্তান দলে সুযোগ পাই, তখন আমার মাত্র একজন বন্ধু ছিল (বাবর আজম)। কিন্তু ওর সঙ্গেও একটা দূরত্ব ছিল, যোগাযোগ হতো না। কারণ বাবর তখন নিয়মিত জাতীয় দলে খেলে আর আমি ঘরোয়া ক্রিকেটে। তাই আমাদের সেভাবে কথা হতো না’- বলেছেন ইমাম।
তিনি বলতে থাকেন, ‘এছাড়া সে তখন নিজের ক্রিকেটের প্রতি বেশি মনোযোগী ছিলো এবং বেশ ভাল ফর্মেও ছিল। বিশেষ করে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডেতে ব্যাক টু ব্যাক সেঞ্চুরি করেছিল। যেহেতু টেস্টে তার তখনকার পারফরম্যান্স খুব একটা ভালো ছিল না, তাই সে পুষিয়ে নিতে চাচ্ছিলো। ফলে খুব বেশি কথা বলতো না তখন।’
নিষিদ্ধ ক্রিকেটার কাজী অনিক
ডোপ টেস্টে পজিটিভ হওয়ায় প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটার কাজী অনিক ইসলামকে দুই বছর নিষিদ্ধ করেছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। নিজের ভুল শিকার করে এই শাস্তি মেনেও নিয়েছেন ২১ বছর বয়সী বাঁহাতি পেসার।
রবিবার সন্ধ্যায় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মাদকবিরোধী নিয়ম ভঙ্গের অভিযোগে কাজী অনিককে নিষিদ্ধ করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড।
বিসিবির পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানা যায়, এক ধরনের ওষুধ সেবনের মাধ্যমে বিসিবির ডোপিং বিরোধী বিধির ৮.৩ নম্বর ধারা ভঙ্গ করেছেন কাজী অনিক।
২০১৮ সালের ৬ নভেম্বর কক্সবাজারে ডোপ টেস্ট করা হয় ঢাকা মেট্রোর হয়ে ওই সময় জাতীয় লিগে খেলতে থাকা কাজী অনিকের। তার সেই ফল পজিটিভ আসে।
২০১৯ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে তার শাস্তির মেয়াদ কার্যকর ধরা হচ্ছে। ২০২১ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি মাঠে ফিরতে পারবেন তিনি। তার আগে পেশাদার কোনো ক্রিকেটে অংশ নিতে পারবেন না ।
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে কাজী অনিক মাত্র ৪ ম্যাচ খেলে ১৫ উইকেট নিয়েছেন। এছাড়া লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে ২৬ ম্যাচে তার শিকার ৪১ উইকেট। আর টি- টেয়েন্টির ক্রিকেটে ৯ ম্যাচে পেয়েছেন ১১ উইকেট। কাজী অনিক ২০১৮
অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। বিপিএলের বিগত টুর্নামেন্টগুলোতে খেলেছেন চিটাগং ভাইকিংস, রাজশাহী কিংস, ঢাকা ডায়নামাইটসের হয়ে। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে তার গায়ে উঠেছে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের জার্সি।
তামিম অসুস্থ, প্রস্তুতি নিচ্ছেন বিদেশে যাওয়ার
প্রায় সাড়ে তিন মাস পর বন্ধ দুয়ার খুলল ‘হোম অব ক্রিকেটের’। রোববার সকালে মাঠে দেখা গেছে মুশফিকুর রহিমসহ দেশের একঝাঁক ক্রিকেটারের।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) ব্যবস্থাপনায় ব্যক্তিগত অনুশীলনে ফিরেছেন তারা। সবাইকে দেখা গেলেও মাঠে পাওয়া যায়নি ওয়ানডে ক্রিকেটের অধিনায়ক ড্যাশিং ওপেনার তামিম ইকবালকে।
এর কারণ হিসাবে জানা গেছে, বেশ কিছু দিন ধরেই শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছেন তিনি। তবে দ্রুতই সেরে উঠে মাঠে ফিরতে চান তিনি। ফিরে পেতে চান ফিটনেস। ঝালিয়ে নিতে চান ব্যাটিং। সে জন্য উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তামিম ইকবাল।
সূত্র জানায়, বেশ কিছু দিন ধরে অন্ত্রে ব্যথা অনুভব করছেন তামিম। ঢাকায় বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করিয়েছেন। প্যাথলজিক্যাল টেস্ট, সিটিস্ক্যানও করিয়েছেন। কিন্তু এত কিছুর পরও তার ব্যথার কারণ জানা যায়নি।
এ বিষয়ে এক সংবাদমাধ্যমকে তামিম বলেন, গত এক মাসে তিনবার এমন ব্যথা অনুভব করেছি। ব্যথাটা এতটাই বাড়ে যে, সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারি না। বসলে বা শুয়ে থাকলেও ব্যথা চলতেই থাকে। এ নিয়ে অনেক ডাক্তার দেখিয়েছি। চিকিৎসকরা হাসপাতালে ভর্তি হতে বলেছিলেন। কিন্তু করোনার কারণে তা আর হয়ে ওঠেনি। এখন আরও কিছু পরীক্ষা করাতে চাই। এন্ডোসকপি, কোলনস্কোপি করাব আবার।