শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:৪৯ অপরাহ্ন

চালের গুদামের কুলি থেকে আওয়ামী লীগ নেতা, অতঃপর কোটিপতি!

Reporter Name
  • Update Time : শনিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২০
  • ৪১৯ Time View

বাবুগঞ্জ উপজেলা খাদ্যগুদামের সামান্য কুলি থেকে আজ কোটিপতি। রয়েছে বিলাসবহুল বাড়ি, গাড়িসহ কোটি কেটি টাকার সম্পদ। আওয়ামী লীগ নেতা পরিচয়ে ক্ষমতার দাপটে উপজেলা খাদ্যগুদাম কেন্দ্রিক সিন্ডিকেট গড়ে এমন সম্পদের মালিক হয়েছেন বরিশাল সদর জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার রহমতপুর ইউনিয়নের রাজগুরু গ্রামের দিনমজুর মৃত মধু খানের ছেলে সেন্টু খান।

মাত্র ৮ বছর আগে সংসারের অভাব-অনটনের কারণে একমুঠো আহারের সন্ধানের বাবুগঞ্জ উপজেলার খাদ্যগুদামের পণ্য উঠানামার কাজের শ্রমিক হিসবে কাজ শুরু করেন সেন্টু। দৈনিক সরকারি নিয়মে প্রতিটন চাল লোড-আনলোড করতে ১৫০ টাকা মজুরী ভিত্তিতে কাজ করতেন। এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি সেন্টু খানকে। নিজের নামে ইজারা না থাকলেও অন্যের ইজারায় হটাৎ করেই শ্রমিক সরদার পরিচয়ে খাদ্যগুদামের আশা সরকারী খাদ্য, শষ্য উঠা নামনোর কাজে নিয়োজিত হন। এরপর আস্তে আস্তে উপজেলার বিভিন্ন পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে গোপনে বিভিন্ন সময় সরকারি চাল,গম ক্রয়-বিক্রয়ের সাথে জড়িয়ে পরেন। এতে করে কোটি কোটি টাকার সম্পদ গড়ে তুলেন তিনি।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, খাদ্যগুদামের কুলির অন্তরালে অবৈধ ভাবে এ চাল-গম ক্রয়ে-বিক্রয়ের মাধ্যমে ৮ বছরে রাজগুরু গ্রামে তৈরি করছেন দুইতলা বিশিষ্ট আধুনিক কারুকার্যে পাঁকা বাড়ি, রয়েছে পণ্যবাহী ট্রাক, নিজে ব্যবহার করছেন ২ টি দামি মোটরসাইকেল। একই এলাকায় রয়েছে পাঁচতলা বিশিষ্ট নির্মানাধীন বাড়ি,পাঁচরাস্তা নামক স্থানে চলমান রয়েছে নির্মানাধীন মার্কেট, ৮ বছরে রহমতপুর ইউনয়িনের বিভিন্ন স্থানে ক্রয় করেছেন কোটি টাকা মূল্যের জমি। এ ছাড়াও রয়েছে ব্যাকিং এর মাধ্যমে মোটা অংকের লেনদেনের তথ্য, নিজ ঘরে নগদ টাকা নিরাপদে রাখার জন্য রক্ষিত আছে দামী সিন্ধুক।

এত অর্থ বৈভবের মালিক বনে যাওয়ায় এক সময় নেতাদের বদৌলতে হয়ে গেছেন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। অভিযোগ রয়েছে আওয়ামী লীগ নেতা পরিচয়ে গত ১ জানুয়ারী থেকে ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কৃষকদের কাছ থেকে ২৬ টাকা কেজি দরে ধান ক্রয়ের নামে অভিযুক্ত সেন্টুর সিন্ডিকেট করে একাই ৪০০ মেট্রিকটন ধান ক্রয় করে খাদ্যগুদামে সরবরাহের মাধ্যমে অবৈধ্য ভাবে হাতিয়ে নিয়েছে ১০ লক্ষাধিক টাকা। একসব অপকর্মের পরই বহাল তবিয়তে ধরা ছোঁয়ার বাইরে ছিলেন কুলি থেকে কোটিপতি বনে যাওয়া সেন্টু খাঁন।

অবশেষে কেদারপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের কাছ থেকে জেলেদের নামে বরাদ্ধকৃত চাল বিতরণ না করে নিজে অবৈধ্য ভাবে ক্রয় করে ফেঁসে যাচ্ছেন তিনি।

এ সব কিছুই বেরিয়ে এসেছে সম্প্রতি বাবুগঞ্জের কেদারপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নূরে আলম বেপারীর কাছ থেকে সরকারি বরাদ্ধকৃত চাল ক্রয়ের তথ্য থেকে। গোপন তথ্যের ভিত্তিত্বে র‌্যাবের অভিযানে এ তথ্যের সত্যতা মিললে বরিশালের র‌্যাব-৮ এর ডিএডি একেএম আবু হোসেন শাহরিয়ার বাদি হয়ে বিশেষ ক্ষমতা আইন ১৯৭৪এর ২৫(১)/২৫-ডি আইনে সেন্টু খানসহ ৪ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। বর্তমানের সেন্টু পলাতক রয়েছেন।

এ বিষয়ে বাবুগঞ্জ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো মিজানুর রহমান বলেন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আমরা আসামি গ্রেপ্তারের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত সেন্টু খানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তার ব্যবহৃত নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। বাবুগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব কাজী ইমদাদুল হক দুলাল বলেন, সরকারি চাল চুরি ব্যাপারে সরকার জিরোট্রলারেন্স। সেন্টু খানের বিরুদ্ধে মামলার বিষয়ে জেনেছ। অভিযোগের বিষয়ে প্রমান পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

সুত্রঃ কালের কণ্ঠ

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2019 bhabisyatbangladesh
Developed by: A TO Z IT HOST
Tuhin