মিয়ানমার যদি নিরাপত্তা ও মর্যাদার সঙ্গে রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয় তাহলে তাদের ফেরত যাওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। তবে রোহিঙ্গারা নিজ দেশে না ফিরতে নানা টালবাহানা করছে, তাদের বায়না বেড়েই চলেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
রোববার রাজধানীর নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বাংলাদেশে রোহিঙ্গা সংকট: ‘চ্যালেঞ্জ এবং স্থায়ী সমাধান’ বিষয়ক কর্মশালা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এমন মন্তব্য করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি আরো বলেন, রোহিঙ্গাদের অনেক পুরনো এবং বিভিন্ন রকম দাবি-দাওয়া আছে। আমরা চাই, তারা মিয়ানমারে ফেরত যাক। সেখানে গিয়ে তাদের যেসব সমস্যা আছে, সেগুলো সমাধান করুক। নিজের ভূমিতে তাদের যেতেই হবে।
এসময় জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরসহ বিভিন্ন সংস্থা রোহিঙ্গাদের ফেরত না যেতে প্ররোচিত করছে বলে অভিযোগ করেন মন্ত্রী।
তিনি বলেন, ওদের অনেকেই বোঝাচ্ছে যে, তোমরা সবকিছু অর্জন করে যাও। আমি জানি না সেটা সম্ভব কি-না? মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের বোঝাচ্ছে, ওখানে অবস্থা অনেক ভালো। যেহেতু সারা পৃথিবীর লোকজন ওখানে তাকিয়ে থাকবে, বিভিন্ন ধরনের অবজার্ভারও থাকবে। সুতরাং নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। তারা স্বাচ্ছন্দে চলাফেরাও করতে পারবে- বলেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্প ঘিরে কিছু লোকের (ইউএনএইচসিআরসহ অন্যান্য সংস্থা) বছরের পর বছর চাকরি চলছে। এ ধরনের অনেক ইন্টারেস্টেড গ্রুপ আছে। আবার কেউ কেউ মনে করেন, এ দেশ উন্নয়নের মহাসড়কে যাত্রা শুরু করেছে, যদি কিছু ফয়দা লোটা যায়…। সুতরাং সমস্যা বড় জটিল।
এদিকে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন ও রোহিঙ্গা নেতাদের সঙ্গে কথা বলতে দুদিনের সফরে আসে মিয়ানমারের প্রতিনিধি দল। শনিবার ও রোববার কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প-৪ এর রোহিঙ্গা নেতাদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেন তারা।
বৈঠকের পর রোববার রোহিঙ্গাদের শর্তসাপেক্ষে নাগরিকত্ব দিতে রাজি বলে জানিয়েছেন কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে আসা মিয়ানমারের পররাষ্ট্র সচিব মিন্ট থোয়ে।
তিনি বলেছেন, আমরা রোহিঙ্গাদের শর্তসাপেক্ষে নাগরিকত্ব দিতে প্রস্তুত। ১৯৮২ সালের মিয়ানমারের আইন অনুযায়ী প্রত্যেককে নাগরিকত্ব দেয়া হবে। যারা ‘দাদা, মা ও সন্তান’ এই তিনের অবস্থানের প্রমাণ দিতে পারবে তাদের নাগরিকত্ব দেয়া হবে। একইভাবে যারা ন্যাশনাল ভেরিফিকেশন কার্ড (এনভিসি) অনুযায়ী কাগজপত্র দেখাতে পারবে তাদেরও নাগরিকত্ব দেয়া হবে।