রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১১:২১ অপরাহ্ন

ঘুষ দিয়ে চাকরি নেয়ার চেয়ে ছোট কাজকে গুরুত্ব দিয়েছেন বিএনপির চেয়ারম্যান

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ২ অক্টোবর, ২০১৯
  • ১২৬৪ Time View

কক্সবাজার জেলার পেকুয়া উপজেলার দুবারের সাবেক চেয়ারম্যান।সদ্য বিদায়ী এ চেয়ারম্যান হাঁটছেন স্রোতের বিপরীতে। রাইড শেয়ারিং অ্যাপ উবার চালিয়ে টাকা রোজগার করছেন।চট্টগ্রাম সিটির অলিগলিতেই রাজুর দেখা মিলছে। তিনি অ্যাপসভিত্তিক পাঠাও, উবার, ওভাই ও সহজে মোটরসাইকেল রাইড শেয়ার করে চলছেন।রাজুর এমন কাজে পরিচিতজনরা দেখে বিস্মিত হলেও অনেকেই স্বাগতও জানাচ্ছেন।তবে রাজু কাজকেই বেশি গুরুত্ব দেন বলে জানিয়েছেন। এ বিষয়ে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন তিনি।তার ভাষ্য, তিনি কাজ ভালোবাসেন। কোনো কাজকেই তিনি ছোট করে দেখেন না।সেই সঙ্গে তিনি বর্তমান চাকরির বাজার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং ঘুষ দিয়ে চাকরি নেয়ার চেয়ে ছোট কাজকে গুরুত্ব দিয়েছেন।শাফায়েত আজিজ রাজু পেকুয়া উপজেলার দুবার নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান। যদিও এবারের নির্বাচনে তার দল (বিএনপি) অংশ না নেয়ায় তিনি নির্বাচনে লড়েননি।
ফেসবুকে দেয়া তার স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে দেয়া হলো-অ্যাপসভিত্তিক শেয়ারিং রাইড।

যে বাইক বা কারটি এতদিন আপনাদের কাছে সৌখিন ছিল, উপরোক্ত কোম্পানির কারণে তা এখন আপনার রুটি রুজির অংশ। স্বাধীন পেশা, প্রয়োজনের তাগিদে উপার্জনের মাধ্যম নচেৎ সৌখিনতার অংশ।শিক্ষার হার যেমন বাড়ছে, তেমনি উচ্চশিক্ষিত বেকারের সংখ্যা পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। অঙ্কের সংখ্যা হেরফের করে জিডিপির প্রবৃদ্ধি উচ্চ সূচকে দেখানো যায়, কিন্তু দেশের বেকারত্বের হারকে কাস্টমাইজ করা যায় না।এই সময়ে অ্যাপসভিত্তিক রাইড শেয়ারিং তাই যুবসমাজের কাছে খুবই জনপ্রিয় একটি মাধ্যম। বাইকে একটু খাটুনি দিলে হাজার টাকা দিনে রোজগার করা যায়, যেখানে পুঁজি এক লাখ হলেই চলে সঙ্গে বৈধ কাগজপত্র। মাসে ৩০ হাজার টাকার একটি চাকরির জন্য আমরা কত কিছুই না করি। জমি বিক্রি করে নেতার পিছু পিছু ২/৪/৫/১০/২০ লাখ টাকা দিয়েও চাকরি হয়ে যায় সোনার হরিণের মতো অধরা।অন্যদিকে টাকা ফেরত না পেয়ে আত্মহত্যা, মাদকাসক্ত, দেশান্তরী থেকে শুরু করে অনেক কিছুতেই জড়িয়ে পড়ছে দেশের প্রাণশক্তি যুবসমাজ।

মোদ্দাকথা- পাঠাও, উবার, ওভাই, সহজ- এগুলো ড্রাইভিং পেশাটির সম্মান বৃদ্ধি করেছে। একটি ড্রাইভিং লাইসেন্স নিয়ে অল্প পুঁজিতে যে কেউই এ পেশায় আসতে পারে এবং এসেছেও। এমনকি মেয়েরাও এসেছে।লজ্জা, শরম, ইগো, পাছেলোকে কিছু বলে- এ বিষয়গুলো মাথা থেকে ঝেড়ে আমার মতো আপনিও নেমে পড়ুন রাস্তায়। সহজ পন্থায় হালাল পথে বৈধ ইনকাম। কারও দয়ায়, কারও দাক্ষিণ্যে বা করুণায় বেশি দিন চলা যায় না।কেউ আপনাকে চাকরি দেবে বা কারও ওপর নির্ভরশীল হয়ে বসে থাকাটা চরম বোকামি ছাড়া কিছুই নয়।অন্তত যতদিন পর্যন্ত আপনার যোগ্যতা অনুযায়ী কিছু করতে পারছেন না, ততদিন পর্যন্ত চালিয়ে যান।
কথায় আছে- অভাব দরজা দিয়ে ঢুকলে ভালোবাসা জানালা দিয়ে পালিয়ে যায়। সুতরাং ঘরের মানুষের কাছে বোঝা এবং বাইরের মানুষের কাছে মজা না হতে চাইলে এখনই সিদ্ধন্ত নিন- আপনি কী করবেন??মনে রাখবেন- ‘ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বালুকণা বিন্দু বিন্দু জল, গড়ে তোলে মহাসাগর’।বড় কিছু পেতে চাইলে ছোট দিয়েই শুরু করুন। আজকের ছোট কাজের অভিজ্ঞতা আগামীকালের বড় কাজের প্রেরণা হয়ে আপনার সাহস সঞ্চার করবে।

বি.দ্র.-আমাকে রাইড শেয়ার করতে দেখে কেউ লজ্জা পেলে তার জন্য আমি দায়ী নই।’এই পোস্টের একজন কমেন্ট করেছেন, ‘প্রিয় রাজু, তোমাকে অন্তরের গভীর থেকে শুভেচ্ছা। আল্লাহ তোমাকে আরও দীর্ঘ হায়াত প্রদান করুক, তোমার পিতার মতো জনগণের সেবা করার জন্য। রাইড শেয়ারিংও বিশাল জনসেবা ও জীবন চলার মহৎ পেশা। হয়তো তোমার বেলায় জীবন চলার জন্য নয়। আলহামদুলিল্লাহ।’মোহাম্মদ আবু জুবায়ের কমেন্টে লিখেছেন, রাজু ভাই স্যালুট আপনাকে। আপনার বাজাজ কেলিবার সবুজ রঙের বাইক দিয়ে আমি প্রথম মোটরসাইকেল চালানো শিখেছিলাম। আপনাকে দেখে আজ হঠাৎ পুরনো কথা মনে পড়ে গেল। বিদেশে এ পেশা নিয়ে অনেক গর্ব, কিন্তু দেশে কেন জানি মানুষ নানা মন্তব্য করে। যাইহোক আপনার পেসেঞ্জার হতে পারা সৌভাগ্যের আমাদের জন্য।
কামরুল হাসান লিখেছেন- রুটি রুজি নয়, নিশ্চয়ই তরুণ প্রজন্মের পথপ্রদর্শক হিসেবে আপনার এ পেশায় আসা। ধন্যবাদ আপনাকে মানসিক দেয়াল ভাঙার জন্য। অনেকেই অনুপ্রাণিত ও উপকৃত হবে।মোক্তার আহমেদ লিখেছেন, আপনাকে নেতা হিসেবে নয়, খুবই প্রিয় একজন বড় ভাই হিসেবে জানতাম। ভালোবাসা আপনার জন্য। আমাদের যুবসমাজ আপনাকে দেখে শিক্ষা নিক। আমি গার্মেন্টে সোয়েটার অপারেটর থেকে ব্যাংকের ম্যানেজার হয়েছি ভাই। পৃথিবীতে কোনো কাজ ছোট নয়। আশা করি আপনার বাইকে আপনার পাশে বসার সৌভাগ্য আমার হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2019 bhabisyatbangladesh
Developed by: A TO Z IT HOST
Tuhin