শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ০৭:৪৯ অপরাহ্ন

‘মর্গের লাশের সংখ্যার সঙ্গে মিলছে না সরকারি হিসাব’

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ১৫ জুন, ২০২০
  • ৩৬৪ Time View

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, ‘করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সরকার ব্যর্থতার ‘ষোলকলা’ পূর্ণ করেছে। সারাদেশে শুরু হয়েছে লাশের মিছিল।

মর্গের লাশের হিসাবের সংখ্যার সঙ্গে মিলছে না সরকারি হিসাব। কবরস্থানে সারিবদ্ধভাবে খোঁড়া হচ্ছে গণকবর। সত্যিই এক ভয়ংকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে চারপাশে।’

রবিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন। মির্জা আব্বাস বলেন, ‘এর মধ্যে পত্রিকার পাতায় প্রায় প্রতিদিনই ছাপা হচ্ছে কোনো না কোনো হাসপাতালে অক্সিজেনের জন্য হাহাকারের খবর।

অসুস্থ অবস্থায় এসে ভর্তি হতে না পেরে অ্যাম্বুলেন্সে ঘুরে ঘুরেই জীবন দিতে হচ্ছে অনেক মানুষকে। করোনা উপসর্গে অসুস্থরা দিনরাত ঘুরেও পরীক্ষাটি পর্যন্ত করাতে পারছে না।

তিনি আরও বলেন, এখন হাসপাতালগুলোতে রোগীদের স্থান সংকুলান হচ্ছে না, তার ওপর এই সেবামূলক প্রতিষ্ঠানগুলো নির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তি, গোষ্ঠী কিংবা সংস্থার জন্য একপ্রকার দখলে রাখা হয়েছে।

যদি সবকিছুতেই ব্যবসা আর মুনাফা খোঁজেন, তবে এবার দয়া করে জানিয়ে দেবেন, কাফনের কাপড়ের ডিলারশিপটা কাকে দেবেন। এদিকে, ‘মর্গের লাশের হিসাবের সংখ্যার সঙ্গে মিলছে না সরকারি হিসাব।

কবরস্থানে সারিবদ্ধভাবে খোঁড়া হচ্ছে গণকবর। সত্যিই এক ভয়ংকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে চারপাশে। গত ক’দিন ধরে কাছের কয়েকজন মুমূর্ষু স্বজনের জন্য প্রয়োজন পড়ে আইসিইউর বেড।

পরিচিত-অপরিচিত সব হাসপাতালে অনেক চেষ্টা তদবির করেও মেলাতে পারিনি একটি আইসিইউ বেড। মনকষ্টে নির্ঘুম যাচ্ছে রাত। অনেক চেষ্টা তদবির করে একটি হাসপাতালে ভর্তি করানোর সুযোগ হয়, আইসিইউ খালি হওয়া মাত্রই আমার একজন রোগীকে তারা ওঠাবে এই শর্তে।

মির্জা আব্বাস বলেন, ‘এখানে কী বা করার আছে আমাদের, যেখানে প্রতিটি সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের আশপাশে গেলেই এখন শোনা যায় নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) জন্য স্বজনদের হাহাকার। দেখা যায়, হাতে পায়ে ধরে মিনতির চিত্র।’

‘সাধারণ মানুষের এই আর্তিতে বিব্রত হন চিকিৎসকরা। কেবল চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না তাদেরও। আইসিইউ বেডের অভাবে চোখের সামনে রোগীকে মরতে দেখার চিত্র এখন নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে গেছে।’

তিনি বলেন, ‘খোদ চিকিৎসকরাই পাচ্ছেন না আইসিইউ বেড। সাধারণত প্রতিনিয়ত অন্যান্য জটিল রোগে আক্রান্ত রোগীদেরও আইসিইউ প্রয়োজন হয়, কিন্তু হাসপাতালগুলো ঘুরে এলেই বোঝা যায়, আসলেই কতজন সেবা পায়। প্রত্যেকটি কোভিড হাসপাতালে একটি আইসিইউ শয্যা পেতে দীর্ঘ অপেক্ষায় থাকতে হয় একাধিক রোগীকে।

অন্যদিকে, হাসপাতালগুলোতেও চলছে একপ্রকার দখলে রাখার প্রতিযোগিতা। কোনো কোনো হাসপাতাল ব্যবহার হচ্ছে শুধুমাত্র বিশেষ মানুষের জন্য, আবার কোনো কোনো হাসপাতাল ব্যবহার হচ্ছে বিশেষ সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য।

এভাবে যদি এক এক করে হাসপাতালগুলো বিভিন্ন বেড়াজালে আটকে ফেলেন তবে চিকিৎসার জন্য সাধারণ মানুষগুলো কোথায় যাবে?’

বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘অপরদিকে, করোনা পরীক্ষার নামে আমরা দেখছি নাটক। যে করোনা পরীক্ষা আমরা করাতে পারতাম মাত্র ৩০০ টাকায়, সেখানে এখন ৩০০০ থেকে ৫০০০ টাকায় করাতে হচ্ছে।

যদি চিকিৎসকদের যথাযথ প্রশিক্ষণ দিয়ে এবং সাশ্রয়ী মূল্যে এই করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করা যেত তবে সাধারণ জনগণের কষ্ট অনেকটাই লাঘব হতো।

কিন্তু সেটাও আজ আপনারা একটি গণ্ডির মধ্যে সীমাবদ্ধ করে রেখেছেন। আমরা দেখলাম, রাজধানীতে শুধুমাত্র পাঁচটি জায়গায় এই করোনা পরীক্ষার জন্য নির্ধারিত করে দেয়া হয়েছে। তবে কেন আরও বেশি জায়গায় এ পরীক্ষার ব্যবস্থা করা গেল না? অতএব এখানে ধরেই নেয়া যায়, এই মহামারিতেও কমিশন বাণিজ্যের কথা!’

সাবেক এ মন্ত্রী তার বিবৃতিতে বলেন, ‘তাই অনেক কষ্ট নিয়েই আমাকে আজ বলতে হচ্ছে, যদি সবকিছুতেই ব্যবসা আর মুনাফা খোঁজেন, তবে এবার দয়া করে জানিয়ে দেবেন,

কাফনের কাপড়ের ডিলারশিপটা কাকে দেবেন। যাতে সেই প্রতিষ্ঠানের কাফনের কাপড় ছাড়া অন্য কোনো কাপড়ে দাফন করতে মানুষ না পারে! তাহলে এখান থেকেও একটা ভালো ব্যবসা হবে!’

তিনি বলেন, ‘দাবি জানাচ্ছি, আক্রান্ত আর মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে জনগণকে এভাবে আর আঁধারে না রেখে, মৃত্যু কমাতে দয়া করে এখনই হাসপাতালগুলোতে

আইসিইউ বেডসহ অক্সিজেন সরবরাহ নিশ্চিত করুন এবং করোনা উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে আসা সকল অসুস্থ রোগীর পরীক্ষা দ্রুত নিশ্চিত করুন, প্লিজ একটু গুরুত্ব দিন, একটু ভাবুন।’

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2019 bhabisyatbangladesh
Developed by: A TO Z IT HOST
Tuhin