সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ১১:০১ অপরাহ্ন

শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে যাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না খুললে

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ২৪ মে, ২০২১
  • ৩৬৪ Time View

করোনাভাইরাসের কারণে স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর হল-ক্যাম্পাস দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় সেশন জট, পরীক্ষা, ল্যাব ক্লাস, চাকরির ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়া, অর্থনৈতিক সংকট, শিক্ষার্থীদের মধ্যে মানসিক চাপ ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে শিক্ষার্থীদের ছাত্র পরিচয়ের সংকট তৈরী হচ্ছে। কেউ কেউ আবার বেছে নিচ্ছে আত্মহত্যার পথ। তাই শিক্ষার্থীদের স্বার্থে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর হল ও ক্যাম্পাস খুলে দিতে হবে। না হলে দেশজুড়ে শিক্ষার্থীরা ‘কঠোর আন্দোলন’ করবে।

সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে শিক্ষার্থীরা এসব দাবি জানান।

মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, দীর্ঘদিন ক্যাম্পাস ও হল বন্ধ থাকায় বিভিন্ন কারণে আমরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছি। এক সময় আমাদের মানসিক বিকারগ্রস্থ হয়ে আত্মহত্যা করা ছাড়া কোন উপায় থাকবে না। তাই হল-ক্যাম্পাস খুলে দিন, নয়ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থায়ীভাবে বন্ধ ঘোষণা করে আমাদের দড়ি দিন, আমরা সেই দড়ি গলায় দিয়ে আত্মহত্যা করবো।

তারা বলেন, করোনার কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা। দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে জম্ম নিয়েছে অশিক্ষা, অনৈতিক কর্মকাণ্ডসহ নানা অসামাজিক কার্যকলাপ। দীর্ঘদিন দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় উচ্চশিক্ষায় নেমে এসেছে স্থবিরতা।

দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীদের বেশির ভাগই প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে আসা। তাদের কেউ টিউশন করে, কেউবা পার্টটাইম কাজ করে পড়াশোনার খরচ জোগাড় করে এবং অনেকে বাড়িতে টাকা পাঠিয়ে পরিবারের সদস্যদের ভরণপোষণের দায়িত্ব পালন করে থাকেন। করোনার কারণে দীর্ঘদিন ধরে বাড়িতে থাকায় শিক্ষার্থীরা যেমন আর্থিক কষ্টে দিনাতিপাত করছেন, তেমনি তাদের পড়াশোনার ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। সরকার শিক্ষার্থীদের অনলাইনভিত্তিক পড়াশোনার ব্যবস্থা করে দিলেও নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের শিক্ষার্থীরা ল্যাপটপ ও ব্যয়বহুল ইন্টারনেটের কারণে অনলাইন ক্লাসে অংশগ্রহণ করতে পারছেন না।

শিক্ষার্থীরা আরো বলেন, গত ১ বছর যাবৎ আমাদের সাথে নানান উপায়ে প্রতারণা চলছে। করোনার ভয় দেখিয়ে ক্যাম্পাস-হল বন্ধ করে বলা হচ্ছে, ‘বাসায় থাকা নিরাপদ’। অথচ সম্প্রতি বিশ্বের শীর্ষ সাইন্স জার্নাল ল্যানসেটের এক গবেষণায় বের হয়ে এসেছে, করোনা বাতাসে ছড়ায়। আর করোনা বাতাসে ছড়ালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করার কোন প্রয়োজন নেই। কারণ ঘরে থাকলেও সেখানে বায়ুবাহী করোনা এসে পৌঁছাতে পারে।

‘বাসায় থাকা নিরাপদ’ তা বিজ্ঞানমতে শুদ্ধ হয় না। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের বয়স ১৮ থেকে ২৮ এর মধ্যে। এই বয়সীদের করোনা হলে মৃত্যু ঝুঁকি নেই বললেই চলে। অথচ তাদেরকে ঘরে বন্দি করে রাখা হচ্ছে। অপরদিকে করোনায় মধ্য ও বৃদ্ধ বয়সীদের মৃত্যুঝুঁকি বেশি, অথচ তারা সর্বত্র অফিস-কারখানা-গণপরিবহণে ঘুরতে পারছে। এ ধরনের অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতি একেবারেই মেনে নেয়া যায় না।

আন্দোলনের হুশিয়ার করে শিক্ষার্থীরা বলেন, এতদিন টিকার কথা বলে আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। এতদিন বলা হয়েছে, ‘টিকা নিলে আর করোনা হবে না, তাই টিকা নেয়ার পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা যাবে’। অথচ এখন দেখা যাচ্ছে, দুই ডোজ টিকা নেয়ার পরও অনেকের করোনা হচ্ছে। তারমানে টিকা দিলেই করোনা চলে যাবে, এমনটা নয়। তাই টিকার জন্য বছর বছর বসে থাকার কোন মানে হয় না। বরং টিকার জন্যে অপেক্ষা করা মানে হয়রানি বৃদ্ধি ও শিক্ষা জীবন ধ্বংস করার নামান্তর। তাই অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে। না হলে দেশজুড়ে একযাগে কঠোর আন্দোলন চালিয়ে যাবো আমরা।

মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শামসুল ইসলাম, তিতুমীর কলেজের নুর মুহাম্মদ সুমন, কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের জি কে সাদিক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাফায়েত রতন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইব্রাহীম চৌধুরী মুন্না, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের জিকে সাদিক, ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী মারুফা প্রীতি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মুহাম্মদ নাসির, মানারাত ইন্টাঃ ইউনিভার্সিটির রাশেদুল ইসলাম প্রমুখ।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2019 bhabisyatbangladesh
Developed by: A TO Z IT HOST
Tuhin