নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার পশ্চিম তল্লা বাইতুস সালাত জামে মসজিদে এসি বিস্ফোরণের ঘটনায় শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশু-মুয়াজ্জিনসহ ১৪ জন মারা গেছেন। এছাড়া চিকিৎসাধীন ২৩ জনের অবস্থাও সংকটাপন্ন। শনিবার (৫ সেপ্টেম্বর) ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির
ইনচার্জ পুলিশের পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া এ তথ্য জানান। এদিকে মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় গভীর তদন্ত চেয়েছেন স্থানীয় এমপি শামীম ওসমান। তিনি বলেছেন, ‘এটা দুর্ঘটনা বা নাশকতা আমি কোনটিই বলবো না। কিন্তু আমি নাশকতার বিষয়টিকেও ফেলে দিচ্ছি না। আমার আশংকা করছি এটা।’ শুক্রবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাতে বিস্ফোরণের পরদিন ৫
সেপ্টেম্বর শনিবার দুপুর দেড়টায় শামীম ওসমান মসজিদ পরিদর্শন আসেন। তিনি মসজিদের ভেতরে ঘুরে দেখেন। পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘ঘটনাটিকে তুচ্ছভাবে দেখার সুযোগ নাই। এটা ছোট কোন জিনিস না। শুধু গ্যাসের কারণেই এত বড় বিস্ফোরণ ঘটেছে এটাকেই প্রাধান্য দিয়েই শেষ করা যাবে না। কারণ এর আগেও আমাদের উপরেও ১৬ জুন বোমা
হামলার ঘটনা ঘটেছে। সে কারণেই আমি বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্তের জন্য সংশ্লিষ্টদের আহবান জানাচ্ছি।’ তিনি বলেন, ‘আমি কোন এক্সপার্ট না। আমি সে কারণেই এক্সপার্টদের দিয়ে গভীরভাবে তদন্তের কথা বলছি। রাসায়নিক পরীক্ষা করতে পারে এ ধরনের লোকজনদের সম্পৃক্ত করা উচিত। এটা এসির বিস্ফোরণ কি না সেটাও তদন্ত করা উচিত। তবে
সচরাচর এসির গ্যাস সিলিন্ডার থাকে বাইরে। সেটা ভেতরে বিস্ফোরণ কথা না। তাছাড়া গ্যাসের কথা বলা হচ্ছে। যদি এতই গ্যাসের রিজার্ভ থাকতো তাহলে সেটা তো মাগরিবের সময়ে কিংবা এশার আগে দরজা খোলার কারণে বের হয়ে যেত। আমি সরজেমিন এসব দেখে আমার মনের মধ্যে বার বার বিষয়টি উঠে আসছে যে গভীর তদন্ত প্রয়োজন।
এক্সপার্টদের তদন্ত দরকার।’ শামীম ওসমান বলেন, ‘যেহেতু অনেক ঘটনা ঘটেছে। আমার উপর ১৬ জুনের বোমা হামলা হয়েছিল। হযরত শাহজালাল রহ. এর মাজারে হামলার পরিকল্পনা হয়েছিল। আমি বলছি না এর সঙ্গে যোগসূত্র রয়েছে। তবে আমি এর গভীর তদন্ত হতে হবে। কারণ এসির সিলিন্ডার থাকে বাইরে। বিস্ফোরণ ঘটলে বাইরে থাকবে। আর
গ্যাসের লাইন বাইরে। আর ভেতরে থাকলেও কতটুকু গ্যাস জমে থাকলে এত বড় বিস্ফোরণ ঘটবে সেটা তদন্ত করে দেখা উচিত। আর আল্লাহর ঘরে তো কেউ সিগারেটে আগুন ধরায়নি। তাছাড়া অনেক প্রশ্নও সামনে চলে আসে। কারণ বিস্ফোরণ ঘটলে এক কোনায় ঘটতে পারতো। কিন্তু পুরোটায় ছড়ালো কিভাবে।’ তিনি বলেন, ‘দয়া করে এ ঘটনায় কোন
পারসেপশন তৈরি করবেন না। প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন জরুরী।’ উল্লেখ্য, শুক্রবার রাত পৌনে ৯টার দিকে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার পশ্চিমতল্লা এলাকার বাইতুস সালাত জামে মসজিদে এসি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। মুহূর্তের মধ্যে মসজিদের ভেতরে থাকা প্রায় ৫০ জনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। হুড়োহুড়ি করে বের হওয়ার চেষ্টা করেন তারা। তাদের মধ্যে দগ্ধ অবস্থায় ৩৭ জনকে শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়।