রাজধানীসহ সারা দেশে এডিস মশা নিধনে ভারত থেকে আমদানি করা তিনটি ওষুধের মাঠ পর্যায়ে পরীক্ষা চালিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। আজ ৬ আগস্ট মঙ্গলবার বিকেলে নগরভবনে বিভিন্ন দপ্তরের প্রতিনিধি ও গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতিতে এই পরীক্ষা চালানো হয়।
এ সময় তিনটি ওষুধেই ৮০ শতাংশের বেশি মশা জ্ঞান হারায় (নকডাউন)। ২৪ ঘণ্টা পর চূড়ান্ত রিপোর্ট পাওয়া যাবে, ওই ওষুধে কী সংখ্যক মশার প্রাণহানি ঘটল।
এদিকে একেকটি ওষুধের পরীক্ষার জন্য নগরভবনের বারান্দায় তিনটি মশারির বাক্সে ৫০টি করে মশা রাখা হয়। এরপর ফগার মেশিন দিয়ে ওষুধ স্প্রে করে ২০ মিনিট পর বাক্সগুলো খোলা হয়। তখন কী সংখ্যক মশা জ্ঞান হারাল, সেই পরিসংখ্যান হিসাব করা হয়। এভাবে তিনটি ওষুধের পরীক্ষা চলে।
এরপর পরীক্ষা শেষে ডিএসসিসির ভাণ্ডার ও ক্রয় কর্মকর্তা মো. নুরুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, ‘মশার ওষুধ তিন ধাপে পরীক্ষা করা হয়। মঙ্গলবার হলো ফিল্ড টেস্ট। এই পরীক্ষায় প্রতিটি ওষুধেই ৮০ শতাংশের বেশি মশা নকডাউন হয়েছে। পরবর্তী ২৪ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হবে। এই সময় শেষে পুরো ফলাফল পাওয়া যাবে। তবে প্রাথমিকভাবে মাঠ পর্যায়ের পরীক্ষায় ওষুধটি উত্তীর্ণ হয়েছে। পরবর্তী সময়ে সেটা খামারবাড়ি ও মহাখালীর আইইডিসিআর-এ পাঠানো হবে রাসায়নিক পরীক্ষার জন্য।’
এদিকে ভারতের ট্যাগ্রস নামের একটি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে আমদানি করা ওষুধ ডেলটামেথ্রিন ১.২৫% ইউএলভি পরীক্ষার জন্য তিনটি মশারির প্রতিটির মধ্যে রাখা ৫০টি মশার প্রথমটিতে ওষুধ স্প্রে করার ২০ মিনিট পর ৮৪ শতাংশ মশা জ্ঞান হারায়। দ্বিতীয় মশারির ৯২ শতাংশ ও তৃতীয় মশারির ৮২ শতাংশ মশা জ্ঞান হারায়।
এদিকে দ্বিতীয় ওষুধ মেলাথিয়ন ৫% আরএফভি-এর তিনটি নমুনায় নকডাউন হওয়া মশার শতকরা হার যথাক্রমে ৯২ শতাংশ, ১০০ শতাংশ এবং ১০০ শতাংশ। সর্বশেষ টেট্রামেইথিনের তিনটি নমুনায় নকডাউন হওয়া মশার শতকরা হার যথাক্রমে ৯০ শতাংশ, ১০০ শতাংশ ও ৮৪ শতাংশ।
এ ব্যাপারে ডিএসসিসির প্রধান ভাণ্ডার ও ক্রয় কর্মকর্তা মো. নুরুজ্জামান বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের মশক নিবারণী অধিদপ্তর থেকে মশাগুলো সংগ্রহ করা হয়েছে। অধিদপ্তর কেরানীগঞ্জ থেকে লার্ভা সংগ্রহ করে সেগুলোকে পূর্ণাঙ্গ মশায় পরিণত করে। তবে এ ক্ষেত্রে কোনটি এডিস আর কোনটি কিউলেপ বা এনোফ্লিস সেটা যাচাই-বাছাই করা হয়নি।’
মশার ওষুধ পরীক্ষার সময় ডিএসসিসির মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন, আইইডিসিআর-এর প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মিনতি সাহা ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্ল্যান্ট প্রটেকশন উইংয়ের যুগ্ম পরিচালক ড. আমিনুল ইসলামসহ ডিএসসিসির শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।