বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ০৫:৪০ অপরাহ্ন

দ্রব্যমূল্যের কারণে ধনী-গরীব বৈষম্য বাড়ছে

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ৮ অক্টোবর, ২০২৩
  • ২১০ Time View

দেশে ধনী এবং গরীবের বৈষম্য দিন দিন প্রকট আকারে ফুটে উঠছে। সাধারণ মানুষ যেখানে চাল ডালের ব্যবস্থা করতে হিমশিম খাচ্ছেন সেখানে কেউ কেউ আয়ের দাপট দেখাচ্ছেন। বাজারে নতুন করে আটা, ময়দা, চিনির মতো নিত্য পণ্যের দাম বাড়াতেও কোন কিছু আসে যায় না উচ্চবিত্তদের। আর প্রতিনিয়ত দাম বেড়েই চলা মাছ মুরগির স্বাদ নিতে কার্পণ্য দেখাতে হচ্ছে নিম্ন ও মধ্যবিত্তের। এই পরিস্থিতিতে বিশ্লেষকরা বলছেন, দীর্ঘ মেয়াদির ঝুঁকি মোকাবেলায় বাড়াতে হবে সামাজিক নিরাপত্তা।

এক জন উচ্চবিত্ত মানুষেন বক্তব্য হল- “আমরা তো আর যেখানে-সেখানে বাজার করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি না। স্বাচ্ছন্দ্য বলতে কি, আমরা তো কাঁদা লাগানোর মানুষ না। আমরা তো যেখানে আরাম আয়েছে এসির মধ্যে বাজার করছি। এই এই সুন্দর জায়গায় হাটতে থাকি গন্ধ জায়গায় যেতে পারিনা। আর সাধারন বাজারে তো হচ্ছে হাঁটা যায় না, চলা যায় না ফেরা যায় না, আর একটা হচ্ছে গন্ধের জায়গায় যাওয়া যায় না। এটাই হচ্ছে অসুবিধা। আমি পণ্যের দাম কতো সেটা আমি একটু হিসাব একবার করি না। কত দাম সেটা আমি হিসাব করি না কারণ হচ্ছে, আমি ডাক্তার টাকা আনি আর টাকা ঢালি।” পেশায় চিকিৎসক এই ভোক্তা। নিয়মিত কেনাকাটা করেন সুপার শপ থেকেই। দিন দিন নিম্ন উচ্চবিত্তের মধ্যে ফারাকের চিত্রটা করুন ভাবে ফুটে ওঠে তার কথাতেই। রাজধানীর অলিগলিতে এখন অসংখ্য সুপার শপ যেখান থেকে অনেকেই কেনাকাটা করতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন। শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের ঠান্ডায় কিছুটা বেশি দামে খাদ্য পণ্য কিনতে তাদের আয়ের তেমন ভাটা পড়ে না। আরেক ক্রেতা বলেন- “এখানে আমি একসাথে নীচে অনেক কিছু পেয়ে যাচ্ছি। এই জন্য এখানে আসা।”

এসব সুপারশপের সঙ্গে নিত্যপণ্যে দামের বিস্তার ফারাক সাধারণ কাঁচা বাজারে। এসব সুপার শপে দেখা মেলে প্রায় সব ধরনের ক্রেতার। তাই সাপ্তাহিক দিনে বেশ ভিড় রাজধানীর এ শপ গুলোতে বরাবরের মতোই থরে থরে সাজানো রঙিন সব সবজি সিম, বেগুন, গাজর, টমেটোর মতো দামের নতুন করে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছে ধনেপাতা। দামের খাতায় পাল্লা দিচ্ছে অন্যান্য সবজিও। গাজর একশো-চল্লিশ টাকা। টমেটো একশো-বিশ টাকা। সবজির দামও অনেক বেশি। কম খেয়ে বা অন্য কোন বেসিক যে নিটগুলো আছে সেগুলো কমিয়ে চালের চড়া দামে যখন বাঙালির পাতে ভাত ওঠা এখন বড় কথা তখন বিকল্প খাদ্য পণ্যের কথাও ভাবা যাচ্ছে না। ভাতের যে বিকল্প হতে পারতো সেই আটা মদের দামও বেড়েছে নতুন করে। এমনকি যে পাম তেল ও চিনির দাম বেঁধে দেওয়া হয়েছিল, সপ্তাহ গড়ালেও তার বাস্তবায়ন দেখা যায়নি কোথাও।

নিম্ন ও মধ্যবিত্ত যেখানে ভাতের ব্যবস্থা করতেই হিমশিম খাচ্ছে সেখানে মাছ ভাতের চিন্তাও দুঃস্বপ্ন যেন আর মাংস যেন উৎসবের জন্যই সীমাবদ্ধ। মাছের কেজি সাধারণ জনগণের জন্য দুশো টাকা হয় তখন হয়তো অনেকে নিতে পারবো। কিন্তু এই মাছটা যখন চারশো টাকা চাইবে তখন আর নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষেনা নিতে পারবো না। যে আগে চারটা মুরগি কিনছে হয়তো মূল্যবৃদ্ধির কারনে কমিয়ে তিনটা কিনবে। বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে কেমন আছেন দেশের অধিকাংশ মানুষ? এক জন বাজার গবেষকের এক কথায় সহজ উত্তর, ” ভবিষ্যৎ খুব একটা ভালো নয়।” মূল্যস্ফীতির সাথে সম্পর্ক রেখে যদি সমান হারে না বাড়ে তাহলে কিন্তু যে ঘাটতিটি তৈরি হয় তাহলে তাকে হয়তো কম খেয়ে এই এই জায়গাটিতে তাকে এক ধরণের টিকে থাকার সংগ্রাম করতে হয়। আমাদের কিন্তু সেই পর্যায়ে একটা গোষ্ঠী বা বেশির ভাগ জনগোষ্ঠী কিন্তু সেই পর্যায়ের ভিতরে এই মুহূর্তে রয়েছে। সাধারণ মানুষ বলছেন, শুধুমাত্র খাবার কিনতেই মাসে যে পরিমাণ খরচ হচ্ছে তাতেই সঞ্চয়ের চিন্তা বাতিলতা মাত্র।

লেখকঃ মোহাম্মদ জাহিদ হোসেন

ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক ও কলাম লেখক।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2019 bhabisyatbangladesh
Developed by: A TO Z IT HOST
Tuhin