শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:২৮ পূর্বাহ্ন

মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়াতে যা করবেন

Reporter Name
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
  • ১৬০ Time View

বয়স হলে অনেক মানুষের স্মৃতিশক্তি কমতে থাকে। মানুষের মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা ও বুদ্ধি ধরে রাখতে ও বাড়িয়ে তুলতে নানা উপায় নিয়ে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞানীদের গবেষণায় উঠে এসেছে মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়ানোর কিছু কার্যকরী উপায়। এসব সমস্যা কমানো যায় মস্তিষ্কের নানা অনুশীলন, চর্চা ও সঠিক খাবারের মাধ্যমে। নিচের উপায়গুলো অনুসরণ করে সহজেই মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়ানো যায়।

শারীরিক অনুশীলন ও সঠিক খাবার
মস্তিষ্কের দীর্ঘস্থায়ী কার্যকারিতা ও বুদ্ধি বৃত্তির জন্য শারীরিক অনুশীলন অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মস্তিষ্ক ক্রমাগত ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। আর এ পর্যায়কে বিলম্বিত করে শারীরিক অনুশীলন। শারীরিক অনুশীলনের ফলে মস্তিষ্কের রক্তপ্রবাহ বেড়ে যায় ও নার্ভ সেল উৎপাদন বজায় রাখে। এমনকি ছয় মিনিটের শারীরিক অনুশীলনও মানুষের মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতার সঙ্গে সঠিক খাবারের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। ইঁদুরের ওপর গবেষণায় দেখা গেছে, বেশি চিনি-সমৃদ্ধ খাবার দিলে তাদের মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা হ্রাস পায়। এছাড়া ওজন বাড়লেও মানসিক স্বাস্থ্যের সমস্যা হয়। অন্যদিকে ওমেগা-৩ , ফ্যাটি এসিড সমৃদ্ধ খাবার যেমন রুই মাছ, আখরোট ও সয়াবিনসমৃদ্ধ খাবার মস্তিষ্কের অবনতি রোধ করে।

নেতিবাচকতা বাদ দেওয়া
মন থেকে নেতিবাচকতা ত্যাগ করা হতে পারে মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা ধরে রাখার অন্যতম উপায়। যখন কোনো একটি বিষয়ে মস্তিষ্ক উদ্বিগ্ন থাকে তখন মস্তিষ্ক তা গ্রহণ করে ও সেভাবে প্রস্তুত হয়। এ কারণে নেতিবাচক চিন্তাগুলো মস্তিষ্কে স্থায়ী হয়ে যায়। অন্যদিকে ইতিবাচক ও গঠনমূলক বিষয় নিয়ে চিন্তা মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

বুদ্ধির খেলা খেলুন
ভিডিও গেম নয় খেলুন বুদ্ধির খেলা। ইন্টারনেটে বুদ্ধির খেলার এর নানা রকম ভিডিও দেখুন। অনলাইনে দাবা খেলার নিয়ম শিখুন ও দাবা খেলুন। তবে ভালো না লাগলেও শুধু স্মৃতিশক্তি বাড়াতে হবে বলেই বুদ্ধির খেলা বা দাবা খেলা খেলব এমনটা করার দরকার নেই।

সামাজিকতা
সামাজিকতা ও ভালো স্মৃতিশক্তির একটি পারস্পরিক সম্পর্ক রয়েছে। অর্থাৎ ভালো স্মৃতিশক্তিধারীরা বেশি সামাজিক হয়। তবে এতে কোনটির অবদান বেশি তা নিয়ে সন্দেহ ছিল। তবে ২০০৮ সালের এক গবেষণায় দেখা যায়, যেসব অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তি সামাজিকতায় তেমন অংশ নেন না, তাদের মস্তিষ্ক সামাজিকদের তুলনায় দ্বিগুণ হারে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। গবেষকরা জানাচ্ছেন, সামাজিকতা আমাদের মস্তিষ্কের উপকার করে। সামাজিকতার ফলে নিজের দিকে নজর দেওয়া, চাপ কমানো ও নিউরো হরমোন নিঃসরণ সহায়তা করে।

একসঙ্গে অনেক কাজ বাদ দিন
আমরা অনেকেই একসঙ্গে অনেক কাজ করে নিজের দক্ষতা প্রমাণ করার চেষ্টা করি। কিন্তু বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে, বাস্তবে মানুষকে ধীর করে দেয়। এতে মনোযোগ বিক্ষিপ্ততা তৈরি হয়, যা সৃষ্টিশীলতার তুলনায় সমস্যাই বেশি তৈরি করে। মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতার সঙ্গে সঠিক খাবারের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। এছাড়া অপ্রয়োজনীয় তথ্য মস্তিষ্কে জমা রাখা বাদ দিন। এটা কম্পিউটারের অপ্রয়োজনীয় তথ্য ডিলিট করে দেয়ার মতো। নতুন কিছু শেখা (বিদেশী ভাষা), আবিষ্কার করা বা নতুন কিছু চিন্তা করা বুদ্ধি ভিত্তিক খেলায় অংশ নেওয়াও মস্তিষ্ককে কর্মক্ষম রাখার আরেকটি ভালো উপায়।

নতুন কিছু শিখুন
নতুন কোনো কাজ শেখার চেষ্টা করলে স্মৃতিশক্তি ও বুদ্ধি বাড়ে। এই যেমন ধরুন আপনি হয়তো কাগজের প্লেন তৈরি করতে জানেন না। সেটা শিখে নিয়ে তৈরি করুন। কিংবা নতুন কোনো কাজ করতে শুরু করুন। স্মৃতিশক্তি বুদ্ধি এতে বাড়বে। মানসিক চাপ এড়িয়ে চলুন। মানসিক চাপ বাড়লে স্মৃতিশক্তি কমতে শুরু করে। বন্ধু ও পরিচিতজনের সংখ্যা বাড়ান ও তাদের সঙ্গে গড়ে তুলুন গঠনমূলক সুন্দর সামাজিক সম্পর্ক।

তথ্যকে সংগঠিত করুন
বিষয়গুলো লিখুন, জটিল বিষয়গুলোর নোট নিন এবং পরে ক্যাটাগরি অনুযায়ী পুনর্বিন্যাস করুন। চেষ্টা করে এর ব্যাখ্যা বের করুন। অধিকতর জটিল বিষয়গুলোর মৌলিক ধারণার ওপর জোর দিন, বিচ্ছিন্নভাবে মুখস্থ করার চেষ্টা করবেন না। জটিল বিষয়টি অন্যকে নিজের ভাষায় বোঝানোর ক্ষমতা অর্জন করুন। বারবার তথ্যের রিহার্সেল করুন এবং অতিরিক্ত শিখুন। যেদিন বিষয়টি শিখলেন, সেটি আবার ঝালাই করুন এবং মাঝেমধ্যে বিরতি দিয়ে আবার ঝালাই করুন।

ঘুমানোর আগে করণীয়
রাতে শোয়ার আগে নতুন কিছু শেখার চেষ্টা করুন। মনে করার চেষ্টা করুন সারাদিন কী করলেন। তবে হ্যাঁ, স্মৃতিশক্তি এবং বুদ্ধি শক্তি ধরে রাখতে পর্যাপ্ত ঘুমের বিকল্প নেই। নির্ঘুম শরীর অনেকাংশেই মনের ক্ষমতার উপর প্রভাব ফেলে। তাই ঘুম হতে হবে ঠিকঠাক। প্রতিযোগিতামূলক ও চরম গতিশীলতার এই যুগে কাজ ও জীবনের চাপে পড়ে অনেকেই স্মৃতিশক্তি হারাতে বসেছেন। কর্মব্যস্ত জীবনে স্মৃতিশক্তি ধরে রাখাটা একটা চ্যালেঞ্জ বটে। এজন্য দরকার সঠিক পন্থা অবলম্বন। তবে একটু সচেতন হলেই আপনার মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা আপনি অটুট রাখতে পারবেন।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2019 bhabisyatbangladesh
Developed by: A TO Z IT HOST
Tuhin