বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০১:০৭ অপরাহ্ন

ইতিহাস লিখে সাফের রানি বাংলাদেশ

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২
  • ১৮৪ Time View

রঙ্গশালার সবুজ গালিচায় নতুন ইতিহাস লেখার হাতছানি ছিলো ওদের সামনে। সাফের নতুন চ্যাম্পিয়ন হয়েই সেই ইতিহাসে তুলির শেষ আঁচড় দিলো বাংলার বাঘিনীরা। সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের মহারণে স্বাগতিক নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার সেরার মুকুট মাথায় তুললো সাবিনা-কৃষ্ণারা।

সাফের এই টুর্নামেনেটের আগের পাঁচ আসরেই চ্যাম্পিয়ন দলটির নাম ভারত। এবার সেই ভারত বাদ সেমিফাইনাল থেকেই। ফাইনালের মহারণে স্বাগতিক নেপালের মুখোমুখি বাংলাদেশ। দুই দলের সামনেই সাফের নতুন চ্যাম্পিয়ন হয়ে ইতিহাস লেখার হাতছানি। নিজেদের মাঠে নেপালকে দর্শক বানিয়েই সেই ইতিহাস লিখলো সাবিনা-সানজিদারা।

ম্যাচের প্রথমার্ধ্বেই শামসুন্নাহার জুনিয়র আর কৃষ্ণা রানী সরকারের গোলে ২-০ গোলে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। দ্বিতীয়ার্ধ্বে একটি গোল শোধ দিলেও ৩-১ গোলের পরাজয় নিয়েই পঞ্চমবারের মতো রানার্স আপ হয়েই সন্তুষ্ট হতে হয় হিমালয় কণ্যাদের।

নেপালের নিজেদের মাঠে খেলা, তার ওপর দলটির বিপক্ষে অতীত পরিসংখ্যানও কথা বলে না সাবিনাদের পক্ষে। আজকের ফাইনালে দশরথ স্টেডিয়াম পূর্ণ কানায় কানায়। পরিস্থিতির বিচারে সবদিক দিয়ে এগিয়ে ছিলো নেপালই।

ম্যাচের শুরুতেই বাংলাদেশের বিপদ বাড়িয়ে মাঠ ছাড়তে হয় নির্ভরযোগ্য ফরোয়ার্ড সিরাত জাহান স্বপ্নাকে। ভূটানের বিপক্ষে সেমিফাইনালে পাওয়া চোট থেকে পুরোপুরি সেরে না উঠলেও তাকে শুরুর একাদশে রেখেই দল সাজিয়েছিলেন কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন। তবে স্বপ্নাকে মাঠ ছাড়তে হয়েছে মাত্র ১০ মিনিটের মাথাতেই। তবে স্বপ্নার সেই উঠে যাওয়াটা যেন শাপেবর হয়েই এলো লাল সবুজের জার্সিধারীদের জন্য। স্বপ্নার পরিবর্তে মাঠে নেমেই বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়ার কাজটি কত দারুণভাবে করলেন।

শামসুন্নাহার মাঠে নামার মাত্র মিনিট দুয়েকের ভেতরেই রঙ্গশালার গ্যালারিকে স্তব্ধ করে মনিকা চাকমার ডান প্রান্ত থেকে করা ক্রস বক্সের মধ্যে থেকে কোনাকুনি প্লেসিংয়ে জড়িয়ে দেন নেপালের জালে।

ম্যাচের ৩৫তম মিনিটে ফ্রি কিক পায় নেপাল। তবে গোলরক্ষক রুপনা চাকমার দক্ষতায় রক্ষা পায় বাংলার মেয়েরা। গোল খেয়ে পিছিয়ে পড়ার পর অবশ্য, ম্যাচে ঘুরে দাড়ানোর চেষ্টা করেছে নেপাল। আক্রমণের ধারও বাড়িয়েছে তারা। বাংলাদেশকে রক্ষণে মনোযোগ দিতে হয়েছে টুর্নামেন্টের আগের ম্যাচগুলোর চেয়ে বেশি। ব্যস্ত থাকতে হয়েছে বেশি, যা এই টুর্নামেন্টে আগে দেখা যায়নি।

নেপালের একটি কর্নার ঠিকমতো ক্লিয়ার করতে পারেনি বাংলাদেশের গোলরক্ষক রুপনা চাকমা , তবে গোললাইন সেভে যে যাত্রা অক্ষতই থেকেছে বাংলাদেশের জাল। তবে খেলার ধারার বিপরীতে গিয়েই দ্বিতীয় গোলটি করে ম্যাচের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে বাংলাদেশ। ৪১ মিনিটে নেপালের ভুল পাস থেকে বল পেয়ে যান সাবিনা। সেই বলে বাঁ পায়ের শটে গোল ব্যবধান ২-০ করে দেন কৃষ্ণা রানী সরকার। শামসুন্নাহার আর কৃষ্ণার গোলে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় বাংলাদেশ।

দ্বিতীয়ার্ধ্বের শুরু থেকে আক্রমণের ধার বাড়ায় স্বাগতিক নেপাল। বেশ কয়েকবার সুযোগ পেয়েও অবশ্য বাংলাদেশের জালেরত দেখা পায়নি নেপাল।

অবশেষে ম্যাচের ৭০তম মিনিটে ব্যবধান কমায় নেপাল। ফরোয়ার্ড আনিতা বাসিতের গোলে ব্যবধান কমিয়ে ২-১ করে নেপাল। ব্যবধান কমানোর পর যেন আরো বেশি আক্রমণাত্মক খেলতে থাকে নেপাল। তবে নেপালের ম্যাচে ফেরার আশা শেষ করে দেন বাংলাদশের নাম্বার নাইন কৃষ্ণা।

নেপালের সব চেষ্টাকে থমকে দিয়ে ম্যাচের ৭৬ মিনিটে নিজের দ্বিতীয় গোল করে নেপালের ম্যাচে ফেরার আশা থামিয়ে বাংলাদেশকে ৩-১ গোলের লিড এনে দেন কৃষ্ণা রানী সরকার। মিডফিল্ড থেকে পাওয়া থ্রু পাস থেকে আগুয়ান নেপাল গোলরক্ষককে দারুণভাবে পরাস্ত করেন কৃষ্ণা। সেখান থেকেই বাকিটা সময় নেপালকে আর ম্যাচে ফেরার সুযোগ দেননি লাল-সবুজের জার্সিধারীরা।

ইতিহাস গড়ার হাতছানি নিয়ে মাঠে নেমেছিলো সাবিনারা। নেপালের দশরথ স্টেডিয়ামে ইতিহাস গড়ে দক্ষিণ এশিয়ার সেরার মুকুট মাথায় নিয়েই মাঠ ছেড়েছে বাংলার বাঘিনীরা।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2019 bhabisyatbangladesh
Developed by: A TO Z IT HOST
Tuhin