গেলো দুদিন ধরে সময়টা এমন যে কখনও বৃষ্টি আবার কখনও চড়া রোদ। প্যাচপ্যাচে ঘামের গরমে জীবন একেবারে নাজেহাল। গরমে বেশি ঘাম হলে শরীরে সোডিয়াম ও পটাশিয়ামের ঘাটতি থেকে হিট স্ট্রোকের মতো বিপত্তি দেখা দিতে পারে। এর ফলে অজ্ঞাতসারে বাড়তে পারে হৃদরোগের ঝুঁকি। জীবনকে ফাঁকি দিতে বিপদ সামনে এসে দাঁড়াতে পারে যখন তখন।
নাগরিক কর্মব্যস্ত জীবনে বাড়তে থাকা মানসিক চাপ এবং উদ্বেগও হৃদরোগের অন্যতম কারণ হতে পারে। ধমনি ব্লক হয়ে গেলে অক্সিজেনযুক্ত পরিশুদ্ধ রক্ত হৃদযন্ত্রে পৌঁছতে পারে না, তখনই বাড়ে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি। দ্রুত চিকিৎসা শুরু না হলে হৃদযন্ত্রের সেই অংশটি অকেজো হয়ে যায়। গরমের দিনে সামান্য কিছু খেলেই হজম করতে বেশ অসুবিধা হয়। বদহজম হলে হার্টের উপর তার প্রভাব পড়ে। তাই খাদ্যাভাসে পরিবর্তন আনতে হবে।
খাদ্যাভাস বদল করুন: গরমের দিনগুলোতে মাছ-মাংস যেমন খাচ্ছেন, তার সঙ্গে সপ্তাহে অন্তত কয়েকদিন বেশি পরিমাণে সবুজ শাকসবজি ও ফাইবারযুক্ত খাবারও খেতে হবে। শাকসবজিতে কোলেস্টেরলের পরিমাণ কম তাই হৃদরোগের ঝুঁকি কমে। খাদ্যতালিকায় ওটস, ব্রাউন রাইস, বিনস, মুসুর ডাল, বাদাম, বীজ ও নানা ধরনের ফল রাখার চেষ্টা করুন। প্রতিদিন তিন লিটার পানি পান করবেন। শরীরের তাপমাত্রা যাতে স্বাভাবিক থাকে সে বিষয় সবসময় সতর্ক থাকবেন।
শরীরচর্চা করুন: ওজন বেড়ে যাওয়ার সমস্যা থেকেও কিন্তু হৃদরোগের আশঙ্কা বাড়ে। তাই গরমেও শরীরচর্চা করতেই হবে। এর সঙ্গে হাঁটাহাঁটিও করা জরুরি। তবে এই সময় খুব ভারী শরীরচর্চা নয়, হালকা ব্যায়াম, যোগাসন করলেই বেশি উপকার পাবেন।
সময়মতো ঘুমান: প্রতিদিন ঠিকঠাক ঘুম না হলে কিন্তু হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে। শরীর যদি সঠিক পরিমাণে বিশ্রাম না পায়, তা হলে রক্তে অক্সিজেন সরবরাহ ভালো মতো হয় না। সেক্ষেত্রে স্ট্রেস হরমোন নিঃসরণ বেশি মাত্রায় হয়। এর ফলে হৃদরোগের সম্ভাবনাও বেড়ে যায়। তাই দিনে সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুমাতেই হবে।
মানসিক চাপ কমান: কর্মক্ষেত্রে কাজের চাপ, ব্যক্তিগত ও পারিবারিক সমস্যা নিয়ে আমরা সব সময়েই চিন্তিত থাকি। ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি তো বাড়েই, সেই সঙ্গে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা, বেশি খাওয়া, ঘুমের সমস্যা, মানসিক ক্লান্তি দেখা দেয়। মনোসংযোগ বাড়াতে যোগব্যায়াম করতে পারেন। বই পড়া, গান শোনা, থিয়েটারে গিয়ে নাটক বা সিনেমা দেখার অভ্যাস থাকলে, সেগুলোও কিন্তু চাপমুক্ত হতে সাহায্য করে।