কিছু কিছু ক্ষেত্রে গর্ভধারণ আকস্মিকভাবে হলেও, আজকাল তার পরিমাণটা অনেকটাই কম। বর্তমানে অনেককেই দেখা যায় যথেষ্ট প্রস্তুতি নিয়ে গর্ভধারণের সিদ্ধান্ত নিতে। সেই প্রস্তুতির মধ্যে সঠিক খাবার বাছাই করা অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
আমিষ
ফলিক এসিড
ফলিক এসিড শুধু মায়ের জন্য নয়, সন্তানের জন্যও উপকারী। ফোলিক এসিড প্লাসেন্টার দ্রুত কোষ বৃদ্ধিতেই সহায়তা করে , শিশুকে গর্ভে থাকাকালীন জন্মগত ত্রুটির থেকে রক্ষা করে, এটিই হল গর্ভবতী মহিলাদের জন্য এটি নির্ধারিত করার প্রধান কারণগুলোর একটি কারণ। প্রাকৃতিকভাবে, ফলিক অ্যাসিড ফোলেটের আকারে পাওয়া যায় যা গাঢ় রঙের পাতাযুক্ত সবজি, গোটা শস্য, ডাল এবং কমলালেবুর মতো কিছু খাবারের মধ্যে উপস্থিত। বরবটি, বাঁধাকপি, ব্রকলি, গাজর, শিম, মটরশুঁটি, লেবু, পাটশাক, পুঁইশাক, সরিষা, সূর্যমুখীর বীজ, লাল চাল ও লাল আটায়ও ফলিক এসিড আছে। তাই গর্ভধারণের আগে ও পরে এসব খাবারগুলো খাদ্যতালিকায় যোগ করুন।
ক্যালসিয়াম
সাধারণত, মহিলাদের গর্ভধারণের আগে, গর্ভাবস্থায় এবং পরে শরীরে ক্যালসিয়ামের চাহিদা তৈরি হয়। প্রথম ত্রৈমাসিকে ক্যালসিয়াম গ্রহণ ভ্রূণের বৃদ্ধি এবং স্নায়ুর গঠনের বিকাশে সাহায্য করে। গর্ভাবস্থায় ক্যালসিয়াম গ্রহণের ফলে মায়ের উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি অনেকাংশে হ্রাস পায় । ফলমূল সহ অনেক ধরণের খাবারের মধ্যেই ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। দুধ, দই, সবুজ শাকসবজি, বেগুন, শালগম, ঢেঁড়স, সয়াবিন, মটরশুঁটি ইত্যাদি খাবার যথেষ্ট ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণ করে।
আয়রন
গর্ভাবস্থায় রক্তাল্পতা অনুভব করা খুব স্বাভাবিক। যখন আপনার আয়রনের মাত্রা হ্রাস পায়, তখন লোহিত রক্তকণিকা আপনার দেহের টিস্যুগুলিতে অক্সিজেন বহন করতে অক্ষম হয়। এটি গুরুতর হলে শিশুকে ঝুঁকিতে ফেলতে পারে। আপনার গর্ভাবস্থায় যখন আপনি আয়রনের ঘাটতিজনিত রক্তশূন্যতা অনুভব করেন তখন রক্ত আপনার সমস্ত শরীরের টিস্যুগুলিতে প্রয়োজনীয় পরিমাণ অক্সিজেন বহন করতে পারে না। আর এ সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য গর্ভধারণের আগে থেকেই আয়রন সমৃদ্ধ খাবার খাদ্যতালিকায় যুক্ত করতে পারেন। যেমন, সামুদ্রিক মাছ, ডিম, কলিজা, শিম ও মটরশুঁটি জাতীয় খাবার, পালং শাক ও শাক জাতীয় খাবার, ডার্ক চকোলেট, ফুলকপি ইত্যাদি।
ভিটামিন-ডি
গবেষণায় জানা গেছে ভিটামিন-ডি শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। যেসব মায়েদের ভিটামিন মাত্রা প্রয়োজনের চেয়ে কম থাকে তাদের বাচ্চার মস্তিষ্ক দুর্বল হয়। এছাড়াও শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন-ডি থাকলে এটি গুরুতর প্রিক্যালম্পসিয়ার ঝুঁকি প্রায় ৪০ শতাংশ পর্যন্ত কম করতে পারে। ডিম, চীজ, বিফ, লিভার ইত্যাদি ভিটামিন ডি যোগায়। এছাড়াও প্রাকৃতিকভাবে সূর্যের আলো অনেক বড় ভিটামিন ডি এর উৎস হতে পারে।