বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:৪১ অপরাহ্ন

হেফাজত নেতা নোমান ফয়েজীর বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা

Reporter Name
  • Update Time : শুক্রবার, ৭ মে, ২০২১
  • ৫২০ Time View

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক জাকারিয়া নোমান ফয়েজীর বিরুদ্ধে এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে।

শুক্রবার হাটহাজারী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(১) ধারায় মামলাটি রেকর্ড হয়েছে। এসআই মো. মুকিব হাসানকে মামলার তদন্তভার দেয়া হয়েছে।

মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়েছে, ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ফেসবুকের মাধ্যমে ভুক্তভোগী নারীর সাথে জাকারিয়া নোমান ফয়েজীর পরিচয় ঘটে। মেসেঞ্জার ও হোয়াটসআ্যাপ চ‍্যাটিংয়ের মাধ্যমে তিনি নারীটিকে ফুসলাতে থাকেন। তাকে বিয়ের প্রলোভন দেন এবং হাটহাজারীতে আসতে বলেন। এরপর ওই নারী ফয়েজীর প্রলোভনে হাটহাজারীতে আসে এবং তাকে ২০১৯ সালের নভেম্বরে কনক বিল্ডিংয়ের নিচতলায় বাসা ভাড়া করে দেয়। তিনি দীর্ঘ ১ বছর ফয়েজীর ভাড়া করে দেয়া ওই বাসায় অবস্থান করেন। অবস্থানকালীন বিভিন্ন তারিখ ও সময়ে তাকে ধর্ষণ করে ফয়েজী।

পরবর্তীতে, হাটহাজারী থেকে চট্টগ্রাম শহরে খালার বাসায় চলে আসার পরও বিভিন্ন বাসা ও হোটেলে নিয়ে গিয়ে সুকৌশল বিয়ের প্রলোভনে বিভিন্ন সময়ে ভুক্তভোগী নারীকে ধর্ষণ করেন ফয়েজী।

অবশেষে, নোমান ফয়েজীর প্রতারণা বুঝতে পেরে ওই নারী নিজে বাদী হয়ে হাটহাজারী মডেল থানায় নোমান ফয়েজীর বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আফরাজুল হক টুটুল বলেন, হেফাজত নেতা জাকারিয়া নোমান ফয়েজীকে ইতিমধ্যে ৩টি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে বৃহস্পতিবার ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছিল। তবে আদালত ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

এর আগে হাটহাজারীর নাশকতার মামলায় ৫ মে কক্সবাজারের চকরিয়া থেকে চট্টগ্রাম জেলা গোয়েন্দা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন হেফাজত নেতা জাকারিয়া নোমান ফয়েজি। এরপর বৃহস্পতিবার বিকেলে চট্টগ্রাম জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তার ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

ফয়েজির ব্যবহৃত মুঠোফোনে নাশকতার ইন্ধন, মদদ দেওয়ার প্রমাণের পাশাপাশি কমপক্ষে তিন নারীর সাথে তার বিয়ে বহির্ভূত প্রেম ও শারীরিক সম্পর্কের প্রমাণ পেয়েছেন বলে দাবি করেছেন চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার এসএম রশিদুল হক।

জাকারিয়া নোমান ফয়েজীর বাড়ি চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার মেখল গ্রামে। তিনি হাটহাজারী উপজেলার আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া হামিয়ুচ্ছুন্নাহ মেখল মাদ্রাসার সিনিয়র শিক্ষক। তার বাবা নোমান ফয়েজী হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা ছিলেন। গত ২২ মার্চ তিনি মারা যান।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর দিন গত ২৬ মার্চ দুপুরে চট্টগ্রামের হাটহাজারী থানায় ভাংচুর, স্থানীয় ভূমি অফিসে অগ্নিসংযোগসহ রক্তক্ষয়ী সংঘাতে লিপ্ত হয় হেফাজতের নেতাকর্মীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে পুলিশ গুলি ছুঁড়লে হেফাজতে ইসলামের চার কর্মী নিহত হন। এর জেরে তিনদিন ধরে হাটহাজারী থানার অদূরে হেফাজতের মূল ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত আল জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মইনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদ্রাসার সামনে চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি সড়কে ইটের দেওয়াল তুলে অবরোধ তৈরি করে রাখে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। একই ঘটনার জেরে চট্টগ্রামের পটিয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ দেশের বিভিন্নস্থানে রক্তক্ষয়ী সংঘাতের ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় চট্টগ্রামের হাটহাজারী থানায় প্রথমে সাতটি মামলা দায়ের করা হয়। এসব মামলায় কারো নাম উল্লেখ না করে কয়েক হাজার অজ্ঞাত আসামি করা হয়। এরপর গত ২২ এপ্রিল আরো তিনটি মামলা দায়ের করা হয়, যার মধ্যে দু’টিতে প্রধান আসামি করা হয়েছে হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কেন্দ্রীয় কমিটির আমীর জুনায়েদ বাবুনগরীকে। অপর মামলায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মীর হেলালসহ বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের আসামি করা হয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2019 bhabisyatbangladesh
Developed by: A TO Z IT HOST
Tuhin