রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৫:৪৯ পূর্বাহ্ন

১৭ শর্তে খুলবে প্রাথমিকসহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান!

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ১০ মে, ২০২০
  • ৪৪৬ Time View

চলমান করোনা পরিস্থিতির কারণে প্রাথমিক থেকে শুরু করে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বেশকিছু গাইড লাইন মেনে ঈদের পর পরই খুলতে পারে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল একটি সূত্র বলছে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেয়া ১৭টি গাইড লাইনে মেনে ঈদের পরেই খুলতে পারে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এদিকে দেশে ক্রমেই সংক্রমণের মাত্রা দিন দিন বৃদ্ধি পেলেও এরই মধ্যে মসজিদ, দোকান পাট ও শপিং মল স্বাস্থ্য বিধি মেনে খুলে দিতে বলেছে সরকার। এমনকি আগামী ১৭ মে গণ পরিবহণও খুলে দেয়ার চিন্তা করছে সরকার। ইতোমধ্যে রেল পরিবহণ চালু করার জন্য আলাদা স্বাস্থ্য বিধিও প্রণয়ন করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন দেশের অর্থনীতি ও শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবন বাঁচাতে স্বাস্থ্য বিধি মেনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও চালু করতে পারে সরকার। করোনা সংক্রমণের ফলে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আগামী ৩০ মে পর্যন্ত ছুটি চলছে। এই সময়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে ছুটির প্রজ্ঞাপনে। তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার সময় এবং খোলার পরে কী করতে হবে, তা আগে থেকেই জানিয়ে দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।

গত ২ মে প্রকাশিত ‘বাংলাদেশে কোভিড-১৯ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ক্রমান্বয়ে চালু করার সুবিধার্থে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, স্থাপনা ও পেশার জন্য কারিগরি নির্দেশনা’ শীর্ষক পুস্তিকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য একটি গাইডলাইন দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, স্বাস্থ্য অধিদফতরের দেয়া নির্দেশনা থেকে আমরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষার্থীদের জন্য অনুসরণীয় নির্দেশনাগুলো চিহ্নিত করে, সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেবো। করোনা উত্তর সময়ে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সর্বোচ্চ মনোযোগ দেয়া হবে। তবে অধিকাংশ শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও শিক্ষক নেতারা মনে করছেন, এই সময়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলাটা হবে প্রাণঘাতী। তারা আরো বলছেন, আগে জীবন পরে শিক্ষা জীবন। তবে সরকারের সিদ্ধান্ত যাই দেয়া হোক তারা তা মেনে নিবেন এবং পালন করবেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেয়া নির্দেশনাগুলো  পাঠকদের জন্য নিচে তুলে ধরা হলো-

১. শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার আগে মহামারি প্রতিরোধক মাস্ক, জীবাণুনাশক এবং নন-কন্ট্যাক্ট থার্মোমিটার সংগ্রহ করে জরুরি কাজের পরিকল্পনা প্রণয়ন করুন। প্রতিটি ইউনিটের জবাবদিহিতা বাস্তবায়ন এবং শিক্ষক ও শিক্ষাদান কর্মীদের প্রশিক্ষণ জোরদার করুন। ২. শিক্ষক, শিক্ষাদান কর্মী ও শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যের অবস্থা পর্যবেক্ষণ জোরদার করুন। সকাল ও দুপুরে পরীক্ষার ব্যবস্থা বাস্তবায়ন এবং ‘প্রতিদিনের প্রতিবেদন’ এবং ‘শূন্য প্রতিবেদন’ পদ্ধতি প্রবর্তন করুন। ৩. শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রবেশ পথে শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী, শিক্ষার্থী এবং বহিরাগত শিক্ষাদানকর্মীদের শরীরের তাপমাত্রা নিন। যাদের শরীরের তাপমাত্রা বেশি পাওয়া যাবে, তাদের প্রবেশ নিষেধ করুন। ৪. শ্রেণিকক্ষ, খেলার মাঠ এবং পাঠাগারের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোতে বায়ু চলাচল ব্যবস্থা শক্তিশালী করুন। দিনে ২-৩ বার প্রায় ২০-৩০ মিনিটের মতো উন্মুক্ত বায়ু চলাচল নিশ্চিত করুন। কেন্দ্রীয় শীতাতপ নিয়ন্ত্রক ব্যবহারের ক্ষেত্রে শীতাতপ নিয়ন্ত্রকের স্বাভাবিক মাত্রা নিশ্চিত করুন। বিশুদ্ধ বায়ু চলাচল বৃদ্ধি করুন এবং ফিরতি বায়ু চলাচল বন্ধ করুন। ৫. শ্রেণিকক্ষ, সর্বসাধারণ কর্তৃক ব্যবহৃত হয়, এমন জায়গাসহ অন্যান্য জায়গার মেঝে ও ঘরের দরজার হাতল, সিঁড়ির হাতল এবং যেসব বস্তু বারবার ব্যবহৃত হয়, সেসব বস্তুর তলপৃষ্ঠ ঘন ঘন পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত করুন। ৬. খাবার থালাবাসন (পানির পাত্র) পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত করুন এবং প্রতিবার পরিবেশনের পরে পুনরায় ব্যবহারযোগ্য খাবার থালাবাসন (পানির পাত্র) জীবাণুমুক্ত করুন। ৭. দূরে দূরে বসে খাবার গ্রহণ করুন এবং সম্পূর্ণ নিজস্ব থালাবাসন বা ওয়ানটাইম থালাবাসন ব্যবহার করুন। ৮. প্রতিদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চত্বরের আবর্জনা পরিষ্কার এবং আবর্জনা সংরক্ষণকারী পাত্র জীবাণুমুক্ত করুন।

৯. অফিস কার্যালয়ে কাগজের সীমিত ব্যবহারকে উৎসাহিত করুন। শিক্ষাদানকর্মীদের পারস্পরিক শারীরিক যোগাযোগ কমান এবং দূরবর্তী বা অনলাইন শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দিন। ১০. স্বাভাবিক অবস্থা না আসা পর্যন্ত কোনও প্রকার অভ্যন্তরীণ জমায়েত বা ক্রিয়াকলাপের আয়োজন করবেন না। যেকোনও বদ্ধ বা ঘন জনবহুল স্থান বা অন্যের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের ক্ষেত্রে এক মিটারের কম বা সমান দূরত্ব বজায় রাখুন। ১১. শিক্ষক, শিক্ষাদান কর্মী এবং শিক্ষার্থীদের বহির্গমন কমিয়ে দিন। ১২. শিক্ষাদান কর্মকর্তা এবং শিক্ষার্থীরা মাস্ক ব্যবহার করুন। হাত ধোয়াসহ অন্যসব স্বাস্থ্যবিধি শক্তিশালী করুন। দ্রুত হাত শুকানো জীবাণুনাশক বা জীবাণুনাশক টিস্যু ব্যবহার করুন। হাঁচি দেয়ার সময় মুখ এবং নাক ঢাকতে টিস্যু বা কনুই ব্যবহার করুন। ১৩. মহামারি প্রতিরোধকে জোরদার করুন। শিক্ষক, শিক্ষাদানকর্মী ও শিক্ষার্থীদের শিক্ষাদানের সময় নিয়ন্ত্রণ করুন এবং মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা ও পরামর্শ প্রদান করুন। ১৪. শিক্ষক, শিক্ষাদানকর্মী বা শিক্ষার্থীদের মধ্যে কোভিড-১৯ এর সন্দেহভাজন কোনও কেস থাকলে তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষকে জানান এবং যারা এই কেসের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে এসেছেন, তাদের দ্রুত শনাক্ত ও কোয়ারেন্টিন করুন। ১৫. কোয়ারেন্টিনে অবস্থানরত শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী বা শিক্ষার্থীদের পিতা-মাতার স্বাস্থ্যের অবস্থা জানা এবং তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করার জন্য একজন বিশেষ ব্যক্তিকে নিয়োগ করুন। ১৬. কোনও নিশ্চিত কোভিড-১৯ কেস পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুযায়ী শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ এবং বায়ু চলাচল ব্যবস্থা পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত করুন। মূল্যায়ন না হওয়া পর্যন্ত এটির পুনরায় ব্যবহার শুরু করা থেকে বিরত থাকুন। ১৭. একত্রে বসে খাওয়ার মতো ডাইনিং পরিষেবা বন্ধ রাখতে হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2019 bhabisyatbangladesh
Developed by: A TO Z IT HOST
Tuhin