বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ০৮:১৩ অপরাহ্ন

রাতের আলোয় ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে মায়াবী রাজ্য

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ১১ অক্টোবর, ২০২৩
  • ৩৪০ Time View

ইউরোপের এক্সপ্রেস ওয়ে বাংলাদেশে রাতের আলোয় যেন মায়াবী রাজ্য। ঢাকার বুকে বাঁধাহীন হয়ে ছুটছে গাড়ি নেই কোনো যানজট এমনটা ভাবা যায়? বলছি ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ের কথা। আরো স্মার্ট হচ্ছে বাংলাদেশ বদলে যাচ্ছে দেশটার অর্থনীতি নজর পড়ছে গোটা বিশ্বের। মনে হবে বাংলাদেশ নই ইউরোপের রাস্তায় নতুন গতি পেয়েছে ঢাকা। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন যাত্রীরা।

আপাতত উদ্বোধন করা হয়েছে বিমানবন্দরের দক্ষিণ কাওলা থেকে ফার্ম গেট পর্যন্ত অংশের সাড়ে এগারো কিলোমিটার পথ। টোল প্লাজা ছাড়া চার লেনের এক্সপ্রেস ওয়ের কোথাও গাড়ি থামবে না। এখানে না আছে কোন মোড়, না আছে কোন ক্রস মোমেন্ট,পার্কিং অ্যাক্টিভিটি বা পথচারী চলাচল করে না খুব ফ্রিলি বাধাহীন ভাবে বেরিয়ে যায় গাড়ি। দশ কিলোমিটারের মধ্যে ramp এর কোন ঝামেলা নেই। ঢাকার এই এক্সপ্রেস ওয়ে হয়ে বিমানবন্দর থেকে ফার্ম গেট পৌঁছতে সময় লাগে মাত্র দশ থেকে বারো মিনিট প্রথম তিন সপ্তাহে টোলের অংক ছাড়িয়েছে প্রায় পাঁচ কোটি টাকা। সম্পূর্ণ কাজ শেষ হলে চলাচল করবে প্রায় আশি হাজার যানবাহন তখন আয়টা কত হবে? নিশ্চই বুঝতে পারছেন।

কোনো বাধা নেই বলে কিন্তু যেমন ইচ্ছা তেমনভাবে গাড়ি চালাতে পারবেন না। গতিবেগের সীমাবদ্ধতা রয়েছে ঘন্টায় চল্লিশ থেকে ষাট কিমি পর্যন্ত। আইন বহির্ভূত কাজও আটকাতে সবসময় নজরদারি রয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরার আগে বিমানবন্দর থেকে ইন্দিরা রোডে পৌঁছতে মানুষের ঘাম ঝুটতো এখন স্বাভাবিকের থেকেও কম সময়ে পৌঁছে যাচ্ছেন মানুষ। যারা কাওরান বাজারে অফিস পৌঁছাতে প্রায় দেড় ঘন্টা পথ পাড়ি দিতেন এখন তারা অফিস পৌঁছচ্ছেন মাত্র কুড়ি থেকে ত্রিশ মিনিটে।

লোকাল বাসে প্রচুর স্টপেজ থাকে সময়ও খায় প্রচুর কখনো বা ভাড়া আদায় করে অনেকটা সেই সব ঝামেলা থেকে মুক্তি পেয়েছে অফিস যাত্রীরা। ব্যস্ত ঢাকায় এই এক্সপ্রেস ওয়ে বানাতে খরচ কিন্তু কম হয়নি প্রতি কিলোমিটারে খরচ হয়েছে একশো একানব্বই কোটি টাকা প্রকল্প হাতে নেওয়ার পরেও কাজপুর ছিল প্রায় এক যুগের বেশি। অবশেষে সেপ্টেম্বরের দুই তারিখে কিছুটা অংশের উদ্বোধন হয়। এই এক্সপ্রেসওয়েতে ওঠা নামার জন্য রেম্পের সংখ্যা প্রায় একত্রিশটি।

রেম্পসহ দৈর্ঘ্য সাতচল্লিশ কিলোমিটার মোট খরচ হয়েছে আট হাজার নশো চল্লিশ কোটি টাকা। বিশেষজ্ঞদের মতে বাংলাদেশে এখনো পর্যন্ত যতগুলো মেগাপ্রকল্প বা সড়ক তৈরি হচ্ছে তার মধ্যে সবথেকে ব্যয়বহুল এই এলিভেটেড এক্সপ্রেসও প্রকল্পের সাতাশ শতাংশ ব্যয় বহন করেছে বাংলাদেশ সরকার পাশাপাশি বিনিয়োগ করেছে বেসরকারি অংশীদার।

এতক্ষনে নিশ্চয়ই ভাবছেন এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ে তো খুব সাধারণ ব্যাপার। বহু দেশেই দেখা যায়। তাহলে তাহলে বাংলাদেশ নিয়ে এত হৈ হৈ রৈ রৈ ব্যাপার হচ্ছে কেন? আসলে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ে গত একমাসের রেজাল্ট বলছে শহরের যানজট কমবে, বাঁচবে সময় ও খরচ, এভাবে ধীরে ধীরে বাংলাদেশ যত উন্নত হবে ততই দেশের অর্থনীতিতে পড়বে গভীর ছাপ ফুলে-ফেঁপে উঠবে জিডিপি। দক্ষিন এশিয়ার ছোট্ট একটা দেশ বাংলাদেশ স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর কাটতে না কাটতেই রীতিমতো ঘুরে দাঁড়াচ্ছে দেশটা যা একটু বিস্ময়করও বটে। এত কম সময়ের মধ্যে দেশটা গড়ে উঠছে স্মার্ট রূপে যার অন্যতম প্রমান এই ধরণের এলিফ্যাটেড এক্সপ্রেসওয়ে তবে এই এক্সপ্রেস ওয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কতটা গভীর প্রভাব ফেলবে তা এখনই কিন্তু নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না সবকিছুই নির্ভর করছে সময়ের উপর।

লেখক-মোহাম্মদ জাহিদ হোসেন ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক ও কলাম ।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2019 bhabisyatbangladesh
Developed by: A TO Z IT HOST
Tuhin