রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ০১:৪২ অপরাহ্ন

ইসলাম ধর্মে পারিবারিক জীবন

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ২৭ আগস্ট, ২০২৩
  • ১৬৩ Time View

পরিবারের মূল ভিত্তি হলো বিয়ে। বিয়ের মাধ্যমেই গড়ে ওঠে একটি পরিবার। স্বামী-স্ত্রী, সন্তান-সন্ততি, পিতা-মাতা সবাইকে নিয়ে পরিবার। এদের নিয়েই তৈরি করতে হয় সভ্যতার মূল ভিত্তি। সে জন্যই ইসলাম ধর্মে বিয়ে করাকে উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে। এমনকি চারটি বিয়ের ব্যাপারেও কোরআনে বলা হয়েছে, তবে তাদের প্রতি সমান আচরণ ও সুযোগ-সুবিধাকে নিশ্চিত করারও তাগিদ দেওয়া হয়েছে।

আল্লাহ বলেন, ‘আর যদি আশঙ্কা কর যে তাদের মধ্যে ন্যায় ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করতে পারবে না তাহলে একজনকে বিয়ে কর।’ (সুরা নিসা, আয়াত ৩)।

আল্লাহ আরও বলেন, ‘হে মানুষ আমি তোমাদের সৃষ্টি করেছি এক পুরুষ ও এক নারী থেকে। তারপর তোমাদের বিভক্ত করেছি বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে, যাতে তোমরা পরস্পরে পরিচিতি লাভ করতে পার।’ (সুরা হুজরাত, আয়াত ১৩)। এ আয়াতের মাধ্যমে এটাই প্রতীয়মান  যে, পারিবারিক বন্ধন থেকেই মানব বংশবৃদ্ধি পেয়েছে।

যদি সব জাতি ও গোত্রের লোকেরা বিভিন্ন পরিবারে বিভক্ত হয়ে নিজ নিজ দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করে তবে সে পরিবার সমাজে সর্বোত্তম আদর্শ পরিবার হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করবে। সেখানে থাকবে শান্তি ও আল্লাহর রহমত। পারিবারিক জীবনে সুখী হওয়ার প্রথম শর্ত হলো সুখী দাম্পত্য জীবন। বিয়ের পর স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যে দাম্পত্য জীবন গড়ে ওঠে তাতে দুজনের মধ্যে সমঝোতা ও সহনশীলতা অপরিহার্য।

শান্তিপূর্ণ সমাজ নির্মাণ করার জন্য পরিবার হলো প্রথম স্তর। পরিবার বলতে আমরা বুঝি আমাদের পিতা-মাতা, ভাই-বোন আর নিকটাত্মীয়। চাচা, মামা, খালা, খালুসহ পরম নিকটাত্মীয়রা। এদের সমন্বয়ে সুন্দর সমাজ নির্মাণ সহজ হয়। সে কারণে পারিবারিক জীবনের গুরুত্ব অত্যধিক। আজকের সমাজে এত অনাচার, ব্যভিচার, অশ্লীলতা বেড়ে যাওয়ার জন্য দায়ী পরিবার। আমাদের সন্তানরা কে কী করছে, কোথায় কার সঙ্গে মিশছে, কোন অপরাধে জড়িত হচ্ছে তা সম্পর্কে আজ আমরা বেখেয়াল। আবার অনেক পরিবার এ ব্যাপারে চরম উদাসীন। সে জন্যই সমাজে বেড়ে গেছে অনাচার আর উচ্ছৃঙ্খলতা।

আল্লাহ রব্বুল আলামিন বলেন, ‘সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি এ দুনিয়ার জীবনের সৌন্দর্য।’ (সুরা কাহাফ, আয়াত ৪৬)।

রসুল (সা.) বলেন, তোমরা প্রত্যেকে দায়িত্বশীল আর প্রত্যেকেই তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে মানবজীবনের প্রথম ভিত্তি হচ্ছে পরিবার। ব্যক্তি পরিবারের একটি অংশ। আর পরিবার সমাজের অংশ। সমাজকে বাদ দিয়ে রাষ্ট্র কল্পনা করা যায় না। ব্যক্তি ঠিক হলে পরিবার ও সমাজ ঠিক হয়ে যায়।

আল্লাহ বলেন, ‘হে মানুষ তোমরা তোমাদের প্রতিপালককে ভয় কর যিনি তোমাদের এক ব্যক্তি হতেই সৃষ্টি করেছেন ও যিনি তা হতে তার স্ত্রী সৃষ্টি করেছেন এবং যিনি তাদের থেকে বহু নর-নারী ছড়িয়ে দিয়েছেন।’ (সুরা নিসা, আয়াত ১)।

এ আয়াত থেকে স্পষ্টত প্রতীয়মান হচ্ছে যে, এভাবেই মানুষের সামাজিক জীবনের যাত্রা শুরু এবং যুগে যুগে মানুষ তার পারিবারিক বন্ধন ও অগ্রযাত্রাকে এভাবেই এগিয়ে নিয়ে সামাজিক কর্মকান্ড সদ্ভাব বজায় রাখতে হবে। পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ও সম্মান দিয়ে সম্পর্ক গভীর করতে হবে।

আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা আল্লাহর ইবাদত করবে, কোনো কিছুকে তাঁর সঙ্গে শরিক করবে না এবং পিতা-মাতা, আত্মীয়স্বজন, এতিম, অভাবগ্রস্ত, নিকট ও দূর প্রতিবেশী, সঙ্গী সাথি, মুসাফির ও তোমাদের অধিকারভুক্ত দাস-দাসীদের প্রতি সদাচরণ করবে।’ (সুরা নিসা, আয়াত ৩৬)।

সুতরাং পরিবারকে ইসলামী অনুশাসনের মাধ্যমে পরিচালিত করতে পারলে সামাজিক অস্থিরতা ও সব ধরনের কুপ্রবৃত্তি থেকে বিরত রাখা সম্ভব। এতে সমাজ ও রাষ্ট্র দুটোই উপকৃত হবে। মৃত্যুর পর মানুষকে আল্লাহ পুনরুত্থিত করবেন। তাকে জিজ্ঞেস করা হবে সে আল্লাহর দেওয়া জীবন বিধান অনুযায়ী জীবনযাপন করেছে কি না?

কারণ একজন মুমিন বান্দার বৈশিষ্ট্য হলো আল্লাহকে সন্তুষ্ট করা। আর এ সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারবে পারিবারিক জীবনে ইসলামের আদর্শ অনুসরণের মাধ্যমে। আল্লাহ আমাদের সবাইকে পরিবারে ইসলামী অনুশাসন মেনে জীবন পরিচালনা করার তৌফিক দান করুন।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2019 bhabisyatbangladesh
Developed by: A TO Z IT HOST
Tuhin