মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ০৩:২৩ পূর্বাহ্ন

বাদ দেওয়া হলো ঘণ্টার পর ঘণ্টা চুমুর রেকর্ড

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ১০ জুলাই, ২০২৩
  • ১৩৪ Time View

বেচারা চুমু! উপন্যাসের বইয়ে এক চুমুর প্রত্যাশায় থাকা এক প্রেমিকের গল্প পড়ে হা হুতাশ করা অনেকেই কল্পনায় ভেবে বসেন প্রেমিকাকে গভীর আলিঙ্গনে দীর্ঘ চুমু দেবেনই। অনেকের কাছে তা ইতিহাসের সবচেয়ে দীর্ঘ চুমুও হয়ে ওঠার প্রত্যাশা থাকে। অর্থাৎ রেকর্ডের খাতাতে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে প্রেমের বহিঃপ্রকাশের এই স্মারক। তবে রেকর্ডের খাতায় উঠতে গেলে সাক্ষী থাকতে হয়। তা না হলে কি আর বহিঃপ্রকাশ বোঝা যায়? সেই কিংবদন্তী চুমুর রেকর্ড কিন্তু গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে ঠিকই ছিল। ছিল মানে এই রেকর্ড বাদ দেওয়া হয়েছে।

দীর্ঘস্থায়ী চুমুর রেকর্ড করার শর্ত প্রেমিকার মন জয়ের চেয়েও কঠিন ছিল। এই শর্ত শুনেও অনেক দুঃসাহসী তা পূরণ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু রেকর্ডের খাতার বদলে তাদের অনেককেই হাসপাতালের রেকর্ড-বুকে নাম লেখাতে হয়েছে। তাজ্জব হওয়ার কিছু নেই। শর্তগুলো একবার দেখলেই বুঝতে পারবেন কেন সেটি অসাধ্য সাধন।

প্রথম শর্ত, চুমু হতে হবে অবিরত এবং দুজনের ঠোঁট আলাদা হওয়া যাবে না। ভুলে একবার ঠোঁট আলাদা হলেই প্রতিযোগিতা থেকে বাদ। এখন ভাবুন। চুমুরত অবস্থায় হাঁচি বা হেঁচকি উঠলেই হলো। ব্যাস। কেল্লা ফতে। আবার চুমুরত অবস্থায় দীর্ঘক্ষণ থাকলে খাওয়াদাওয়া বাদ। কিন্তু তৃষ্ণা? সমস্যা নেই। গিনেজ বুক সেখানে একটু স্বস্তি দিয়েছিল (যদি একে স্বস্তি বলা যায় আরকি)। চুমুরত অবস্থায় ছোট পাইপ দিয়ে তরল নেওয়ার সুযোগ আছে। অন্য শর্তগুলো হলো চুমুর পুরো সময় প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া যুগলকে জেগে থাকতে হবে। থাকতে হবে দাঁড়িয়ে ও কোনো কিছুতে হেলান বা কোনো কিছুর সাহায্য নিয়ে দাঁড়ানো যাবে না। চুমুর মাঝখানে কোনো বিরতি থাকবে না। টয়লেটে যেতে পারবেন, তবে সেটা চুমুরত অবস্থাতেই। ভেবে দেখুন অবস্থা।

তবে এই রেকর্ড বন্ধ করে দেওয়া হয় দ্রুতই। গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষ বলেছে, চুমুর মধ্যে বিরতি না থাকা ও পাল্লা দিয়ে রেকর্ড ভাঙার প্রতিযোগিতা শুরু হওয়ায় অংশগ্রহণকারীদের সাইকোসিসের মতো নিদ্রাহীনতাবিষয়ক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরির প্রবণতাও বাড়ছিল।

১৯৯৯ সালের একটি ঘটনা। ইসরায়েলের কারমিত জুবেরা ও রোর অরপাজ পৌনে ৩১ ঘণ্টা চুমুর পর প্রায় অচেতন হয়ে যান। রেকর্ড তো গড়ে ফেললেন। কিন্তু চুমু থেকে মুক্ত হওয়ার পর তাদের দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল। সেই রেকর্ড গড়ে পুরস্কার হিসেবে বিশ্ব-ভ্রমণ ও আড়াই হাজার ডলার জিতেছিলেন এই যুগল। তবে পরবর্তীতে আবার ভালোবেসে একে অপরকে দীর্ঘক্ষণ চুমু খেতে পেরেছিলেন কি-না সন্দেহ আছে। ঘটনা এখানেই শেষ নয়। ২০০৪ সালে ঘটে আরেকটি ঘটনা।

দীর্ঘস্থায়ী চুমুর রেকর্ড ভাঙার প্রতিযোগিতায় নামেন ইতালির তরুণ আন্দ্রেয়া সারতি ও তার প্রেমিকা থাইল্যান্ডের নাগরিক আন্না চেন। কিন্তু টানা ৩১ ঘণ্টা ১৮ মিনিট অবিরত চুমুর পরে অসুস্থ হন তারা। কৃত্রিমভাবে অক্সিজেন দিতে হয়েছিল তাদের। ২০১১ সালে তো এ রেকর্ড গড়তে প্রতিযোগিতায় নেমে মাত্র আধা ঘণ্টায় অচেতন হন এক নারী। তাকেও নিতে হলো হাসপাতালে। অর্থাৎ আগের রেকর্ড আর ভাঙা হলো না। ২০১৩ সালে সবশেষ এই রেকর্ড ভাঙেন এক্কাচাই ও লাকসানা তিরানারাত নামে থাইল্যান্ডের এক যুগল। ৫৮ ঘণ্টা ৩৫ মিনিট অবিরত চুমু দেন তারা। পুরস্কার হিসেবে পান প্রায় আড়াই হাজার মার্কিন ডলার ও সমমূল্যের দুটি হীরার আংটি। ওই বছর থেকে রেকর্ডটি রাখা বন্ধ করে দেওয়া হয়।

প্রতিযোগীর স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়টি বিবেচনায় দীর্ঘস্থায়ী চুমুর বিশ্ব রেকর্ড বন্ধ করে দেওয়া হলো। কিন্তু গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষের অন্তত অদ্ভুত রেকর্ডের প্রতি মমত্ব গাঢ়। তারা ‘দীর্ঘস্থায়ী চুমুর ম্যারাথন’ নামে নতুন একটি প্রতিযোগিতা চালু করে। আগেরটির চেয়ে এর প্রধান পার্থক্য এ ক্ষেত্রে এক ঘণ্টা পরে পাঁচ মিনিটের জন্য বিরতি দেওয়া হয়। তাও ভালো। আগের মতো হলে ভবলীলা সাঙ্গ হয়তো সম্প্রতিই দেখা যেত।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2019 bhabisyatbangladesh
Developed by: A TO Z IT HOST
Tuhin