বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ০২:৫৯ অপরাহ্ন

গণভোটের মাধ্যমে কাশ্মীর সমস্যা সমাধানের আহ্বান ওআইসির !

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৯
  • ১১৫৬ Time View

অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কোঅপারেশনের (ওআইসি) জেনারেল সেক্রেটারিয়েট জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে একটি গণভোটের মাধ্যমে কাশ্মীর সমস্যা সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে। ইসলামি সংস্থাটি শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই আহ্বান জানায় বলে জানিয়েছে পাকিস্তানের গণমাধ্যম ডন।

কাশ্মীরকে আন্তর্জাতিকভাবে দেয়া মর্যাদার কথাও উল্লেখ করে সংস্থাটি। ওআইসির জেনারেল সেক্রেটারিয়েট বিজ্ঞপ্তিটিতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবনায় আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত জম্মু ও কাশ্মীর বিতর্ক মর্যাদার কথা জোর দিয়ে উল্লেখ করে।

মুসলিম দেশগুলোর এই সংস্থা কাশ্মীরের জনগণের প্রতি সংহতি জানিয়ে ওআইসি সম্মেলনের সিদ্ধান্তগুলো এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে নেয়া প্রস্তাবগুলোর কথা মনে করিয়ে দিয়েছে। ওআইসি তাৎক্ষণিক অধিকৃত কাশ্মীর থেকে কারফিউ তুলে নেয়ার, যোগাযোগ ব্যবস্থা পুনর্বহালের এবং কাশ্মীরের জনগণের মৌলিক অধিকারগুলোর প্রতি সম্মান দেখানোর আহ্বান জানিয়েছে।

ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপের মাধ্যমে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পর থেকে অঞ্চলটিতে বিরাজমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন বলেও উল্লেখ করে ওআইসি। গত ৫ আগস্ট রাষ্ট্রপতির নির্দেশ জারির মাধ্যমে ভারত সরকার সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপ এবং কাশ্মীর ভেঙে জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখ নামের দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিভক্ত করে।

ভারতের এসব পদক্ষেপের প্রেক্ষিতে ৭ আগস্ট পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে দেশটির ন্যাশনাল সিকিউরিটি কমিটি (এনএসসি) পাঁচটি সিদ্ধান্ত নেয়। সিদ্ধান্তগুলো হলো- ভারতের সঙ্গে সব দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য স্থগিত করা, দেশটির সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক সীমিত করা; পাকিস্তান ও ভারতের দ্বিপক্ষীয় কর্মসূচিগুলো পর্যালোচনা করা;

বিষয়টি জাতিসংঘে নিয়ে যাওয়া এবং পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবসে কাশ্মীরিদের প্রতি সংহতি জানানোর পাশাপাশি ভারতের স্বাধীনতা দিবসকে কালো দিবস হিসেবে পালন করা। এছাড়া পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি বলেন, আমাদের রাষ্ট্রদূতরা আর নয়াদিল্লিতে থাকবেন না এবং তাদের রাষ্ট্রদূতদেরকে ফেরত পাঠানো হবে।

কাশ্মীরে অবরুদ্ধ কারাগারে বন্দি ৭০ লাখ মুসলিম !

তাদের এখন অসুস্থ হতেও মানা। অসুস্থ হলে হাসপাতালে যাওয়া বেশ কঠিন। এক মাকে সন্তান প্রসবের জন্য পায়ে হেটে যেতে হয়েছে কয়েক মাইল। ঘর থেকে বের হওয়াও কার্যত নিষিদ্ধ। নেতারা গৃহবন্দি হয়েছিলেন আগেই। এখন দৃশ্যত ৭০ লাখ কাশ্মীরির প্রত্যেকেই বন্দি। কাশ্মীর যেন এক কারাগারের নাম।

বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেয়ার পর সামরিক বাহিনী দিয়ে কাশ্মীর দখলই করে নিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। গণতন্ত্রের নামে রীতিমতো সার্কাস দেখাচ্ছেন তিনি। ও বলতে ভুলে গেছি, কাশ্মীরিদের ভালোর জন্যই এতোসব করছেন তিনি। ভদ্রলোক কী করবেন! কাশ্মীরিরাতো আর নিজেদের ভালো বুঝে না যে কারণে তাদের মতামত নেয়া হয়নি।

ভারতের স্বাধীনতা দিবস পালিত হয়ে গেলো কাশ্মীরে। এবং এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে সে অনুষ্ঠানে কাশ্মীরের সাধারণ কোন মানুষ অংশ নেয়নি। বিবিসি রিপোর্ট বলছে, কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে রাজধানী শ্রীনগরের একটি সুরক্ষিত স্টেডিয়ামে ভারতের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেছেন জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের রাজ্যপাল।

তবে সেখানে শুধু নিরাপত্তা বাহিনী, সরকারি কর্মকর্তা বা তাদের পরিবারের সদস্যদেরই দেখা গেছে। কাশ্মীর থেকে বিবিসি সংবাদদাতারা আরও জানাচ্ছেন, শ্রীনগর শহরের কেন্দ্রস্থলে কিছু বিজেপি সমর্থক ভারতের পতাকা উত্তোলনের চেষ্টা করলেও তাদের চেষ্টা সফল হয়নি। এদিকে স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের পর শহরের কোনও কোনও জায়গায় কারফিউ কিছুটা শিথিল করা হয়েছে বলেও খবর আসছে।

ঠিক দশদিন আগে ভারত সরকার তাদের সংবিধানের ৩৭০ ধারা বিলোপ করার পর আজই ছিল সে দেশের প্রথম স্বাধীনতা দিবস। শ্রীনগরে বরাবরই ভারত সরকারের পক্ষ থেকে যেখানে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করা হয়, সেটা হল শহরের বকশি স্টেডিয়াম।

গ্যালারিতে ঘেরা একটি সুরক্ষিত স্টেডিয়াম এটি, আর সেখানেই এবারেও ভারতের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেছেন জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের বর্তমান গভর্নর সত্যপাল মালিক। শ্রীনগর থেকে বিবিসি উর্দুর রিয়াজ মাসরুর জানাচ্ছেন, মাছি গলতে পারবে না এমন কঠোর নিরাপত্তা ছিল গোটা স্টেডিয়ামে।

তবে গ্যালারিতে কিন্তু আম কাশ্মীরিদের, বা শহরের সাধারণ লোকজনকে একেবারেই দেখা যায়নি। সেখানে ছিলেন নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তারা, জম্মু ও কাশ্মীর সরকারের সিনিয়র অফিসার কিংবা তাদের স্ত্রী-ছেলেমেয়েরাই।

আর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকতে দেখা গেছে ভারতের এনএসএ বা জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালকেও, যিনি গত বেশ কয়েকদিন ধরে কাশ্মীর ভ্যালিতেই ঘাঁটি গেড়ে আছেন। গভর্নর মালিক তার ভাষণে বলেছেন, ‘কাশ্মীর এখন এক নতুন ভবিষ্যতের দিকে দ্রুত এগিয়ে যাবে, উন্নয়ন হবে, বিনিয়োগ আসবে।

এমন কী পুলিশকর্মীদের বেতনভাতা বাড়ানোর কথাও ঘোষণা করেছেন তিনি। কিন্তু যে আম কাশ্মীরিদের উদ্দেশে কথাগুলো বলা, সেটা শোনার জন্য আজ তারাই শুধু হাজির ছিলেন না। এদিকে ভারতের শাসক দল বিজেপির কিছু সদস্য এদিন শ্রীনগরের কেন্দ্রস্থলে ভারতের জাতীয় পতাকা উত্তোলনেরও চেষ্টা করেছিলেন, তবে তাদের সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।

আসলে শ্রীনগর শহরের প্রাণকেন্দ্রে যে লালচক – সেখানে ভারতের তেরঙা ঝান্ডা ওড়ানোর স্বপ্ন দেখেন বিজেপির বহু নেতা-কর্মীই। কাশ্মীর যে ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ, সেটা প্রমাণ করার জন্য তাদের কাছে এই লালচকে জাতীয় পতাকা ওড়ানোর একটা প্রতীকী তাৎপর্যও আছে। এবারে যেটা হয়েছে, হরিয়ানার – ওই রাজ্যে দুচারমাসের মধ্যেই ভোট – সেখান থেকে বিজেপির জনাবিশেক নেতা-কর্মী গতকালই শ্রীনগরে এসে হাজির হয়েছিলেন।

তাদের ঘোষিত উদ্দেশ্য ছিল প্রধানমন্ত্রী মোদী যখন দিল্লির লাল কেল্লা থেকে স্বাধীনতা দিবসের ভাষণ দেবেন – তখন তারাও শ্রীনগরের লালচক থেকে তেরঙা ঝান্ডা ওড়াবেন। কিন্তু কাশ্মীরের পুলিশ এদিন তাদের লালচকের ধারেকাছেই ঘেঁষতে দেয়নি।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2019 bhabisyatbangladesh
Developed by: A TO Z IT HOST
Tuhin