জামালপুর জে’লা প্রশাসক আহমেদ কবীরের যৌ’ন কেলেঙ্কারির ভিডিও প্রকাশের পর তাকে ওএসডি করেছে জনপ্রশা*সন মন্ত্রণালয়। এ খবর জানাজানির পর থেকেই জে’লা প্রশাসক কার্যালয়ের অফিস সহায়ক (পিয়ন) সানজিদা ইয়াসমিন সাধনাকে নিয়ে কথা বলতে ডিসি অফিসের কর্মক’র্তা-কর্মচারীরা সাহসী হতে শুরু করেছেন। যারা ভয়ে এতদিন আহমেদ কবীর ও তার শয্যাসঙ্গিনী নিয়ে কোনো কথা বলেননি, তারাও মুখ খুলতে শুরু করেছেন।
ডিসির সঙ্গে বিয়ের গুঞ্জন, যা বললেন সাধনার মা
ভুক্তভোগীদের কয়েকজন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, সানজিদা ইয়াসমিন অফিসে দোর্দ’ণ্ড প্রতাপে দাপিয়ে বেড়াতেন। শুধু কর্মচারীরাই নন, ঊর্ধ্বতন কর্মক’র্তাদেরও তিনি পাত্তা দিতেন না। চাকরি হা’রানোর শ’ঙ্কায় প্রতিবাদ করতে সাহস পেতেন না কেউ।
অফিস সহায়ক পদে সাধনা যোগদান করার পর জে’লা প্রশাসকের অফিস কক্ষের পাশে ‘খাসকাম’রা’ হয়ে ওঠে মিনি বেডরুমে। যেখানে খাট ও অন্যান্য আসবাবপত্র দিয়ে সাজসজ্জা করা হয়। সে রুমেই চলত আহমেদ কবীর-সাধনার রঙ্গলীলা। অফিস চলাকালে তাদের রঙ্গলীলা অবাধ ও নির্ঝঞ্ঝাট করতে সেই কাম’রার দরজায় বসানো হয় লাল ও সবুজ বাতি। রঙ্গলীলা চলাকালে ‘লালবাতি’ জ্বলে উঠত। সে সময় দরজার সামনে পাহারায় থাকতেন তাদেরই বিশ্বস্ত কোনো অফিস সহকারী।
যতক্ষণ লালবাতি জ্বলত সাক্ষাৎপ্রার্থী তো দূরের কথা কর্মক’র্তা-কর্মচারীদেরও প্রবেশাধিকার নিষেধাজ্ঞা ছিল। এ সময় তার অফিসের বাইরে ফাইলপত্র নিয়ে অ’পেক্ষায় থাকতেন কর্মক’র্তা-কর্মচারীসহ সাক্ষাৎপ্রার্থীরা। লীলা শেষ করে পরিপাটি হয়ে যখন চেয়ারে বসতেন, তখন জ্বলে উঠত সবুজ বাতি। ‘সবুজ বাতি’ জ্বলে ওঠার পরই শুরু হতো তাদের দাপ্তরিক কার্যক্রম।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মক’র্তা-কর্মচারী জানিয়েছেন, ২০১৮ সালে উন্নয়ন মেলায় হস্তশিল্পের স্টল বরাদ্দ নেওয়ার জন্য জে’লা প্রশাসক আহমেদ কবীরের সঙ্গে দেখা করেন সাধনা। সে সময় সাধনার রূপে মুগ্ধ হয়ে বিনামূল্যে স্টল বরাদ্দ দেন ডিসি আহমেদ কবীর। পরে উন্নয়ন মেলা চলাকালে আহমেদ কবীরের সঙ্গে শখ্য আরও গভীর হয়। একপর্যায়ে সে শখ্য রূপ নেয় শারীরিক স’ম্পর্কে। সম্প্রতি সেই অ’বৈধ স’ম্পর্কের একটি ভিডিওচিত্র ভাইরাল হয়। তারপর থেকে ‘ট’ক অব দ্য কান্ট্রি’তে পরিণত হন তারা।
যেভাবে চাকরি পান সাধনা : চলতি বছর জানুয়ারিতে ডিসি অফিসে ২৭ জনকে অফিস সহায়ক (পিয়ন) পদসহ ৫৫ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। সেই স’ম্পর্কের সূত্র ধরে ডিসি অফিসে পিয়ন (অফিস সহায়ক) পদে নিয়োগ পান সানজিদা ইয়াসমিন সাধনা। সেই সঙ্গে তার দুই আত্মীয় রজব আলী ও সাবান আলীকে অফিস সহায়ক পদে নিয়োগ পাইয়ে দেন তিনি।
কে এই সাধনা? সাধনার জন্ম জামালপুর শহরের পাথালিয়া গ্রামে। মা ফেলানী বেগম। বাবা অহিজুদ্দিন। বাবার পেশা ছিল ঘোড়ার গাড়ি দিয়ে মালামাল আনা-নেওয়া। সাধনার জন্মের সময় অহিচুদ্দিনের ঘরে দেখা দেয় অভাব।
সাধনা
সাধনার বয়স যখন সাত দিন, তখন অভাবের তাড়নায় তাকে দত্তক দেন মাদারগঞ্জ উপজে’লার বালিজুড়ি ইউনিয়নের সুখনগরী গ্রামের নিঃসন্তান খাজু মিয়া ও নাছিমা আক্তার দম্পতির কাছে। তাদের লালন-পালনে বেড়ে ওঠা সাধনার লেখাপড়া চলাকালেই বিয়ে হয় একই উপজে’লার জোনাইল গ্রামের বেসরকারি কোম্পানির কর্মচারী জাহিদুল ইস’লামের সঙ্গে। তাদের ঘরে পূর্ণ নামের এক পুত্র সন্তানের জন্ম হয়।
২০০৯ সালে মা’রা যান সাধনার স্বামী। স্বামীর মৃ’ত্যুর পর তার পালক পিতামাতার সঙ্গে জামালপুর শহরের বগাবাইদ গ্রামে বসবাস শুরু করেন। পরে টাঙ্গাইলের এক পু’লিশ কনস্টেবলের সঙ্গে পালিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করেন তিনি। সাধনার ঊশৃঙ্খল জীবনযাপন ও অবাধ চাল-চলনের কারণে টেকেনি দ্বিতীয় বিয়েটিও।
দ্বিতীয় বিয়ে ভেঙে যাওয়ার পর তিনি নিজ ঘরেই দোকান দিয়ে বিক্রি করতেন দেশি-বিদেশি প্রসাধনী। সেই ব্যবসাতেও টিকতে না পেরে শুরু করেন হস্তশিল্পের ব্যবসা। ২০১৮ সালের উন্নয়ন মেলায় হস্তশিল্পের স্টল বরাদ্দ নিয়েই ডিসি আহমেদ কবীরের সঙ্গে গড়ে স’ম্পর্ক।
‘ছায়াডিসি’: ডিসি অফিসে গুঞ্জন রয়েছে- অ’বৈধ রঙ্গলীলার সুবাদে আর আহমেদ কবীরের আশকারা পেয়ে ‘ছায়াডিসি’ হয়ে গিয়েছিলেন সাধনা। ডিসির প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন দফতরে বদলি, নিয়োগ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি বাণিজ্য করে হাতিয়ে নেন লাখ লাখ টাকা।
সামান্য ওই অফিস সহায়কের হাতে লা’ঞ্ছিত হয়েছেন একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মক’র্তা। জে’লা প্রশাসকের স্বাক্ষরিত কাজে স্বার্থসিদ্ধি হাসিলের জন্য সবার আগে সাধনাকে ম্যানেজ করতেন সুবিধাভোগীরা। তাকে সামনে রেখে কাজ আদায় করা হতো। এ কারণে সবার মাঝেই ‘ছায়াডিসি’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছিলেন সাধনা।
সাধনার মাথায় চুল নেই : সাধনার মাথায় চুল নেই, সে পরচুলা পরে মাথা ঢেকে রাখে হিজাবে। কোন একটি বিশেষ রোগে আক্রান্ত হওয়ার কারণে শি’শুকালে মাথার চুল ও ভ্রু উঠে যায় তার। বিভিন্ন সময় চিকিৎসা নিলেও সাধনার মাথায় চুল উঠেনি আর।