শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০১:৪৮ অপরাহ্ন

ওষুধে লাভ হয় না, আল্লাহ আমাদের বাঁচাচ্ছে: হাইকোর্ট

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ২১ আগস্ট, ২০১৯
  • ১১৩৬ Time View

ডেঙ্গু প্রতিরোধে সরকারের দীর্ঘমেয়াদি কী ধরনের পরিকল্পনা রয়েছে, তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের কর্মীরা কখন কীভাবে কোন ওয়ার্ডে কী কাজ করেন এবং ডেঙ্গু রোগীর প্রকৃত সংখ্যাসহ এ বিষয়ে সিটি করপোরেশনের ভূমিকাও প্রতিবেদন আকারে হাইকোর্টে জমা দিতে বলা হয়েছে। আগমী ২৬ আগষ্টের মধ্যে দুই সিটি করপোরেশনের মেয়রসহ সংশ্নিষ্ট বিবাদীদের এই প্রতিবেদন জমা দিতে হবে।

বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি মো. সোহরাওয়ারদী সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার এই আদেশ দেন। এর আগে শুনানিতে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা না কমায় ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের কার্যক্রমে অসন্তোষও প্রকাশ করে হাইকোর্ট বলেন, ‘প্রতিদিনই নতুন নতুন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। ওষুধ দিলে তো লাভ হয় না। আল্লাহ আমাদের বাঁচাচ্ছে।’

শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল (ডিএজি) কাজী মাইনুল হাসান আদালতে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দুই সিটি করপোরেশনকে টাকা দেওয়া হয়েছে।’ তখন হাইকোর্ট বলেন, যে টাকা দেওয়া হয়েছে তা ঠিকমতো ব্যবহার করা হচ্ছে কি না, তা দেখা হচ্ছে কি না?

জবাবে ডিএজি বলেন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে উত্তর সিটি করপোরেশনকে ১ হাজার ৬২০ জন কর্মী এবং দক্ষিণ সিটি করপোরেশনকে ২ হাজার ২৫০ জন কর্মী অস্থায়ীভাবে নিয়োগ দেওয়ার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া একটি মনিটরিং টিমও (পর্যবেক্ষণ দল) করা হয়েছে। তিনি জানান, এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে নতুন ওষুধও আনা হয়েছে। তখন আদালত বলেন, ‘আপনি অ্যাকটিভ হলে তো হবে না। ওষুধ এনেছেন কি না? নতুন জনবল কী কাজ করছে? কোন উন্নতি হয়েছে কি না?’

ডিএজির কাছে এর সদুত্তর না পেয়ে এ পর্যায়ে সিটি করপোরেশনের আইনজীবী তৌফিক ইনামের উদ্দেশে আদালত বলেন, ‘ওষুধ মারার পর কার্যকর কী ফলাফল আসছে? আগের ওষুধে কি মশা মরছে। নাকি দক্ষিণের মশা উত্তরে যাচ্ছে। এটা টোটালি আপনাদের গাফিলতি। প্রতিদিনই নতুন করে মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে।’

জবাবে তৌফিক এনাম আদালতকে জানান, সারা দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কমছে। আদালত তখন বলেন, ‘উত্তর সিটি করপোরেশন তো আর সারা দেশে ওষুধ ছিটাচ্ছে না। ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা কমছে। এর কারণ প্রকৃতি।’ তখন তৌফিক ইনাম বলেন, ঢাকায়ও ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা কমছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশকৃত মশা মারার ওষুধ আনা হয়েছে।

এ পর্যায়ে নতুন ওষুধের কার্যকারিতা নিয়ে আদালত বলেন, ‘হাসপাতালে নতুন ডেঙ্গু রোগী না এলে আমাদের কনসার্ন (উদ্বেগ) থাকবে না।’ এক পর্যায়ে আইনজীবী তৌফিক ইনাম আদালতকে জানান, যারা ওষুধ ছিটাচ্ছেন তাদের কার্যক্রম মনিটরিং করা হচ্ছে। মোবাইল ট্র্যাকিং করা হচ্ছে। আদালত বলেন, ভবিষ্যতে যাতে এই ধরনের পরিস্থিতি তৈরি না হয়, সে জন্য তদন্ত হওয়া দরকার। পরে আদেশ দিয়ে ২৬ আগষ্ট ফের শুনানির দিন ধার্য করেন হাইকোর্ট।

রাজধানীতে জীবানুবাহক মশার বিস্তার এবং ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে রোগীর মৃত্যু নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন আমলে নিয়ে গত ১৪ জুলাই রুলসহ স্বঃপ্রণোদিত আদেশ দেন হাইকোর্ট। আদেশে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া নির্মুূলে দুই সিটি করপোরেশন কী পদক্ষেপ নিয়েছে, তা এক সপ্তহের মধ্যে হলফনামা আকারে অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ের মাধ্যমে বিবাদীদের জানাতে বলা হয়। এর ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবারও শুনানি গ্রহণ করেন হাইকোর্ট। বর্তমানে হাইকোর্টে দুটি পৃথক বেঞ্চে ডেঙ্গু ইস্যুতে শুনানি চলছে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2019 bhabisyatbangladesh
Developed by: A TO Z IT HOST
Tuhin