প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শতভাগ শিক্ষা ও পরিপূর্ণ পুষ্টি নিশ্চিত করতে দেশের সব স্কুলে দুপুরের খাবার সরবরাহের নীতি গ্রহণ করেছে সরকার। আগামী ২০২৩ সালের মধ্যে এই পদক্ষেপ পুরোপুরি বাস্তবায়ন সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন সরকার। মন্ত্রিসভার ১৩তম বৈঠকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এমন একটি নীতি উত্থাপনের পর সেটি অনুমোদন পেয়েছে। একই বৈঠকে তিনটি আইনের খসড়া, দুটি কম্পানি গঠন ও একটি নীতিমালা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
গতকাল সোমবার (১৯ আগস্ট) মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠক শেষে গতকাল মন্ত্রিপরিষদসচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
জাতীয় স্কুল মিল নীতি ২০১৯’-এর বিষয়ে তিনি বলেন, বর্তমানে সরকারি ও বেসরকারি সহযোগিতায় ১০৪টি উপজেলায় প্রাথমিকের শিশুরা দুপুরের খাবার পাচ্ছে। তা সমন্বিতভাবে সারা দেশে শুরু করার লক্ষ্যে এই নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ছে এমন শিশুদের জন্য এই নীতিমালা। সে অনুযায়ী, শিশু শিক্ষার্থীদের প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় শক্তি চাহিদার ক্যালরির ন্যূনতম ৩০ শতাংশ স্কুল মিল থেকে আসা নিশ্চিত করতে হবে। খাদ্যতালিকার বৈচিত্র্য ঠিক রাখতে মোট ১০ পদের খাবারের আয়োজনের কথা বলা হয়েছে নীতিমালায়। সপ্তাহ ঘুরে দশ পদের মধ্যে অন্তত চারটি পদ রাখলে প্রত্যাশিত পুষ্টি চাহিদা পূরণ হবে।
শফিউল আলম জানান, এই কর্মসূচিতে চর ও হাওর এলাকাকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। ভবিষ্যতে সারা দেশের সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে সপ্তাহে পাঁচ দিন রান্না করা খাবার এবং এক দিন উচ্চ পুষ্টিমানসম্পন্ন বিস্কুট সরবরাহ করা হবে। দেশে ৬৬ হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক কোটি ৪০ লাখ শিক্ষার্থী রয়েছে। পর্যায়ক্রমে ২০২৩ সালের মধ্যে এই কর্মসূচি পূর্ণাঙ্গতা পাবে। এর আগে ২০২০ সাল পর্যন্ত পরীক্ষামূলক কর্মসূচি চলবে এবং ২০২১ সাল থেকে নীতিমালা অনুযায়ী অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত এলাকাগুলোতে টিফিন দেওয়া শুরু হবে।
এদিকে ব্রিফিংয়ে উপস্থিত প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব গিয়াস উদ্দিন বলেন, রান্না করা খাবার দিলে উপস্থিতির হার ১১ শতাংশ বাড়ে। আর শুধু বিস্কুট দিলে উপস্থিতি বাড়ে ৬ শতাংশ। শুধু বিস্কুট দিলে প্রতিদিন শিক্ষার্থীপ্রতি ৯ টাকা হারে বছরে দুই হাজার ৮৩৫ কোটি টাকা লাগবে। পাঁচ দিন রান্না করা খাবার ও এক দিন বিস্কুট দিলে খরচ হবে পাঁচ হাজার ৫৬০ কোটি ৮০ লাখ টাকা। বিস্কুট এবং ডিম, কলা ও রুটি দিলে ২৫ টাকা হারে খরচ হবে সাত হাজার ৪৭৫ কোটি টাকা। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এলাকার ভিত্তিতে সুবিধা অনুযায়ী আইটেম দেওয়া হবে। ২০২৩ সালের মধ্যে সারা দেশে সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুপুরের খাবার সরবরাহ সম্ভব হবে।