চীনের জিনজিয়াংয়ে উইঘুর মুসলিমদের বিরুদ্ধে চীন সরকারের মানবতাবিরোধী অপরাধের নিন্দা করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।
উইঘুরদের ওপর চীনের নিপীড়ন বিষয়ে প্রকাশিত বিভিন্ন খবর সম্পর্কে ইমরান খানকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, চীন ‘অন্যতম বড় বন্ধু হিসেবে আমাদের সবচেয়ে কঠিন সময়ে পাশে ছিল’ এবং জিনজিয়াং বিষয়ে বেইজিংয়ের সঙ্গে যে কোনো সংলাপ ‘রুদ্ধদ্বারে’ অনুষ্ঠিত হবে। রোববার মার্কিন সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।
মার্কিন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, চীন জিনজিয়াংয়ে গত কয়েক বছরে ২০ লাখ উইঘুরদের বন্দী শিবিরে প্রেরণ করেছে। অতীতে আটককৃত অনেক উইঘুর অভিযোগ করেছেন যে তাদেরকে শারীরিক নির্যাতন এমনকি জোর করে বন্ধ্যা করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশকিছু ইউরোপীয় দেশের সরকার জিনজিয়াংয়ে চীনের কর্মকাণ্ডকে সম্প্রতি গণহত্যা হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।
তবে ইসলামাবাদ ও বেইজিং উভয়েই উইঘুর মুসলিমদের ওপর নিপীড়নের কথা অস্বীকার করে আসছে।
সাক্ষাৎকারে ইমরান খান বলেন, ‘তারা যেভাবে চলছে সেটাকে আমরা শ্রদ্ধা করি। এটা কেন পশ্চিমা দেশগুলোর জন্য এত বড় ইস্যু? কেন কাশ্মীরের জনগণকে উপেক্ষা করা হয়? এটি আরও বেশি প্রাসঙ্গিক।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি সারা বিশ্বের দিকে তাকাই… ফিলিস্তিন, লিবিয়া, সোমালিয়া, সিরিয়া, আফগানিস্তানে কী হচ্ছে। আমি কি সবকিছু নিয়েই কথা বলা শুরু করব?’
উল্লেখ্য, চীনের সঙ্গে পাকিস্তানের দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বের ইতিহাস রয়েছে। দেশটির অন্যতম বাণিজ্যিক অংশিদারও চীন। বিশেষ করে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বৈশ্বিক বেল্ট ও সড়ক তৈরির উদ্যোগে পাকিস্তানের অবকাঠামো খাতে চীনের অর্থায়নের ফলে দেশটি ব্যাপকভাবে উপকৃত হয়েছে।
গত বছরের অক্টোবরে মুসলিম দেশগুলোর উদ্দেশে এক খোলা চিঠি লিখেছিলেন ইমরান খান। সেখানে তিনি পশ্চিমাদের ‘ক্রমবর্ধমান ইসলামভীতি’র (ইসলামোফোবিয়া) বিরুদ্ধে মুসলিম দেশগুলোকে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।
তবে ইমরান খানের পক্ষ থেকে জিনজিয়াংয়ে চীনের কর্মকাণ্ড অস্বীকারের এটিই প্রথম নজির নয়। ২০১৯ সালের মার্চে তিনি ফাইনান্সিয়াল টাইমসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, উইঘুরদের ওপর চীন সরকারের নিপীড়নের অভিযোগের বিষয়ে তিনি ‘বেশি কিছু জানেন না’।
সূত্র : সিএনএন, অ্যাক্সিওস