অভিনয়ে তার যাত্রা শুরু মাত্র ১৭ বছর বয়সে। দেখতে দেখতে পেরিয়ে গেছে ২০ বছরেরও বেশি। অভিনয়ে না থাকলেও নিজের ভক্তদের মাতিয়ে রেখেছেন তিনি। বলছি বাংলা চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেত্রী পূর্ণিমার কথা।
মিডিয়াতে তেমন দেখা না গেলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখা মেলে তার। প্রায়ই নিজের অসাদারপণ ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দিয়ে মাতিয়ে রাখেন ভক্তদের। আর তার এসব ভিডিও দেখতে হুমড়ি খেয়ে পড়েন ভক্তরা।
সম্প্রতি নিজের ইনস্টাগ্রামে একটি ১০ সেকেন্ডের ভিডিও আপলোড করেন৷ যেখানে তাকে একটা গানের সঙ্গে ঠোঁট মেলাতে দেখা যায়। সেটাই রীতিমতো নেট দুনিয়া তোলপাড় করে ফেলেছে। অল্প সময়ে ভিডিওটি লক্ষাধিক মানুষ দেখে ফেলে।
১৯৯৭ সালে জাকির হোসেন রাজুর ‘এ জীবন তোমার আমার’ ছবি দিয়ে বাজিমাত করেছিলেন তিনি। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। দিনে দিনে নিজেকে তিনি প্রতিষ্ঠিত করেছেন ঢাকাই ছবির অন্যতম একজন অভিনেত্রী হিসেবে। তিনি চিত্রনায়িকা পূর্ণিমা।
২০০৩ সালে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ প্রযোজনায় ‘মনের মাঝে তুমি’ তার অভিনীত অন্যতম সফল ছবি।
চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে ১৯৮১ সালের এই দিনে জন্মগ্রহণ করেন পূর্ণিমা। সেখানেই কেটেছে তার শৈশবের দিনগুলো। এরপর চলে আসেন ঢাকায়। তারপর নাম লেখান সিনেমার খাতায়।
অভিনয় ক্যারিয়ারে শতাধিক দর্শকনন্দিত ছবি উপহার দিয়েছেন। পাশাপাশি ছোট পর্দায়ও করেছেন চমৎকার কিছু কাজ। কাজী হায়াৎ পরিচালিত ‘ওরা আমাকে ভালো হতে দিলো না’ ছবির জন্য পূর্ণিমা সেরা অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও অর্জন করেছেন।
নায়ক রিয়াজের সঙ্গে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে অভিনয় জগতে পা রাখেন। জনপ্রিয়তাও পান এই নায়কের সাথে জুটি বেঁধে। ‘এ জীবন তোমার আমার’, ‘নিঃশ্বাসে তুমি বিশ্বাসে তুমি’, ‘মনের মাঝে তুমি’, ‘আকাশ ছোঁয়া ভালোবাসা’, ‘হৃদয়ের কথা’, ‘শাস্তি’, ‘খবরদার’, ‘শ্বশুর জামাই’, ‘টক ঝাল মিষ্টি’ ইত্যাদি ছবিগুলো জুটি হিসেবে রিয়াজ-পূর্ণিমাকে অনন্যতা দিয়েছে।
২০০৭ সালের ৪ নভেম্বর পারিবারিকভাবে আহমেদ জামাল ফাহাদের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন পূর্ণিমা। ২০১৪ সালের ১৩ এপ্রিল কন্যাসন্তান জন্ম দেন এ অভিনেত্রী। তার মেয়ের নাম আরশিয়া উমাইজা।
ভিডিও দেখতে ক্লিক করুন
বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে জেল খেটেও পাননি মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে পাকিস্তানে জেল খেটেও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পাননি মোকলেছুর রহমান। (প্রাক্তন বিডি/৫০০১১২, জিডি-অব) বিমান বাহিনীর এমওডিসি কোরের সদস্য ছিলেন তিনি।
মোকলেছুর রহমান জেলার নাজিরপুর উপজেলার শ্রীরামাকাঠী ইউনিয়নের চলিশা গ্রামের মৃত আব্দুল ওহাব ফকিরের ছেলে। ২০১১ সালের ২০ ডিসেম্বর তিনি মারা যান।
তার স্ত্রী ফরিদা ইয়াসমিন (৬৯) এ প্রতিবেদককে বলেন, আমার স্বামী সিপাহী মোকলেছুর রহমান তৎকালীন পাকিস্তান বিমান বাহিনীতে সিপাহী পদে চাকরি করতেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরুর প্রথম দিনেই পাকিস্তানি অফিসাররা তাকে আটক করে পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়ে যায়।
সেখানে প্রথমে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে একই কারাগারে ও পরে অন্য কারাগারে স্থানান্তর করে। কারাগারে তাকে কয়লার পানি খাওয়ানোসহ অনাহারে রেখে অমানবিক নির্যাতন করা হতো। দেশ স্বাধীনের ৪ বছর পরে তিনি দেশে ফিরে এসে আবার চাকরিতে যোগ দেন।
কিন্তু অজ্ঞাত কারণে ৭৮ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন সরকার তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়। চাকরি থেকে অব্যাহতির পরে ৭ সন্তান নিয়ে অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটতো আমাদের।
তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন সময় মুক্তিযোদ্ধার তালিকা তৈরি সময় আমার স্বামীর নাম তালিকাভুক্ত করেনি। পরে তার নাম তালিকাভুক্ত করতে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা নেতারা মোটা অংকের টাকা চান। টাকা দিতে না পারায় স্বামীর নাম তালিকাভুক্ত হয়নি।
আমি কোনো ভাতা চাই না, স্বামীর মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দেখে মরতে চাই। আর স্বামীর মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পেতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
স্থানীয় বীর প্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ওয়ারেন্ট অফিসার পার্শ্ববর্তী শিকদার মল্লিক গ্রামের সোলায়মান মল্লিক জানান, দেশে যুদ্ধ শুরু হলে মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণে ভারত চলে যাই।
দেশে ফিরে জানতে পারি সিপাহী মোকলেছুর রহমান পাকিস্তানে আটক আছেন। যুদ্ধের পর বিমান বাহিনীর এমওডিসি কোরের সব সদস্যরা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পেলেও মোকলেসুর রহমান স্বীকৃতি পাননি।
এ ব্যাপারে উপজেলার শ্রীরামকাঠী ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধা ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার আক্রাম হোসেন হাওলাদার এ প্রতিবেদককে বলেন, সিপাহী মোকলেছুর রহমানের নাম শুনেছি।
কিন্তু তিনি তার চাকরি থেকে বাড়ি ফেরার পর জীবদ্দশায় আমাদের সঙ্গে ওই ভাবে আগ্রহ নিয়ে যোগাযোগ করেননি। এদিকে তার ব্যাপারে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শেখ আব্দুল লতিফ এ বিষয়ে কিছুই জানেন না।