শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৫৭ অপরাহ্ন

সাহেদকেও ছাড়িয়ে গেছে প্রতারক ওসামা আমিন

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ৯ আগস্ট, ২০২০
  • ২৯৭ Time View

সরকারের অনুমোদন না নিয়েই তিন বছর ধরে রাজধানীর উত্তরার আল আশরাফ জেনারেল হাসপাতাল চালিয়ে আসছিলেন ওসামা আমিন। তার বিরুদ্ধে হাসপাতালের অংশীদার করার নামে ১০ লাখ, ৩০ লাখ বা কারোর কাছ থেকে এক কোটি টাকাও হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, তিন বছর আগে আল আশরাফ জেনারেল হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন ওসামা। সরকারের অনুমোদন ছাড়াই চলছিল এ প্রতিষ্ঠান। হাসপাতালের অংশীদার করার নামে ভুক্তভোগীরা মামলা করেও কোনো প্রতিকার পাননি। বর্তমানে লাপাত্তা হয়েছেন প্রতারক ওসামা আমিন।

অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, হাসপাতালে ব্যবসার নামে অবৈধ কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে রোগীদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন ওসামা আমিন। আবার হাসপাতালের অংশীদার করার নামে বহু মানুষের কাছ থেকেও নিয়েছেন টাকা। ভুক্তভোগীদের কেউ ১০ লাখ, কেউ বা ৩০ লাখ, আবার কেউ এক কোটি টাকাও দিয়েছেন।

ওসামা আমিনের প্রতারণার শিকার এক ভুক্তোভোগী বলেন, আমার কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকা নিয়েছেন ওসামা আমিন। হাসপাতালকে লিমিটেড করার কথা ছিল কিন্তু সেটা না করে টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়েছেন। টাকা চাইতে গেলে নানাভাবে হুমকি দিতেন। প্রতারণার অভিযোগে ওসামা আমিনের বিরুদ্ধে অনেকে মামলাও করেছেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আরো হুমকি দিতেন।

ওসামা আমিনের প্রতারণার শিকার অপর একজন ভুক্তোভোগী বলেন, আমি এক কোটি টাকা পাই। তা চাইতে গেলে তিনি পাজারো গাড়িতে তার পালিত সন্ত্রাসী নিয়ে হুমকি দিতেন। ভয়ে কিছু বলতে পারিনি। মামলা করেও কোনো প্রতিকার পাইনি। প্রতারণায় রিজেন্টের মো. সাহেদকে ছাড়িয়েছেন ওসামা আমিন।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের সহকারী পরিচালক ডা. মোজাফফর হোসেন জানান, উত্তরার আল আশরাফ জেনারেল হাসপাতালের কোনো অনুমতি নেই। প্যাথলজিরও অনুমোদন নেই। এরইমধ্যে লাইসেন্স না থাকা, নিম্নমানের আইসিইউসহ নানান অনিয়মের অভিযোগে হাসপাতালটির কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।

গত ২৮ জুলাই মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) ডা. ফরিদ হোসেন মিঞা স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়।

ওই চিঠিতে বলা হয়, হাসপাতালটির আইসিইউ অত্যন্ত নিম্নমানের, কোনোভাবেই এমন আইসিইউ পরিচালনা গ্রহণযোগ্য নয়। ল্যাবরেটরির পরিবেশ অত্যন্ত নিম্নমানের। অনুমোদনবিহীন ল্যাবরেটরিতে অবৈধভাবে রক্ত পরিসঞ্চালন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছিল। এ অবস্থায় হাসপাতালটির কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হল।

এদিকে, গতকাল শনিবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক আদেশে জানানো হয়, বেসরকারি হাসপাতালের লাইসেন্স নবায়ন করতে আগামী ২৩ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। এ সময়ের মধ্যে নবায়ন করা না হলে হাসপাতাল বন্ধ করে দেয়া হবে বলেও সতর্ক করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, প্রতি বছর ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর লাইসেন্স নবায়নের জন্য পরিবেশগত ছাড়পত্র, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিস্তারিত বিবরণ, সিটি কর্পোরেশনের ছাড়পত্র, কর সার্টিফিকেট এবং অন্যান্য নথি প্রয়োজন হয়। এর আলোকে এসব হাসপাতালে নিয়মিত নোটিশ দেয়ার পাশাপাশি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।

সারাদেশে মোট ১৫ হাজারেরও বেশি বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে। ২০১৮ সালের ৪ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক পরিপত্রে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকের নিবন্ধন ফি এবং নিবন্ধন নবায়ন ফি ৫ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে সর্বনিম্ন ৫০ হাজার ও সর্বোচ্চ আড়াই লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2019 bhabisyatbangladesh
Developed by: A TO Z IT HOST
Tuhin