জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে পাকিস্তানে জেল খেটেও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পাননি মোকলেছুর রহমান। (প্রাক্তন বিডি/৫০০১১২, জিডি-অব) বিমান বাহিনীর এমওডিসি কোরের সদস্য ছিলেন তিনি।
মোকলেছুর রহমান জেলার নাজিরপুর উপজেলার শ্রীরামাকাঠী ইউনিয়নের চলিশা গ্রামের মৃত আব্দুল ওহাব ফকিরের ছেলে। ২০১১ সালের ২০ ডিসেম্বর তিনি মারা যান।
তার স্ত্রী ফরিদা ইয়াসমিন (৬৯) এ প্রতিবেদককে বলেন, আমার স্বামী সিপাহী মোকলেছুর রহমান তৎকালীন পাকিস্তান বিমান বাহিনীতে সিপাহী পদে চাকরি করতেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরুর প্রথম দিনেই পাকিস্তানি অফিসাররা তাকে আটক করে পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়ে যায়।
সেখানে প্রথমে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে একই কারাগারে ও পরে অন্য কারাগারে স্থানান্তর করে। কারাগারে তাকে কয়লার পানি খাওয়ানোসহ অনাহারে রেখে অমানবিক নির্যাতন করা হতো। দেশ স্বাধীনের ৪ বছর পরে তিনি দেশে ফিরে এসে আবার চাকরিতে যোগ দেন।
কিন্তু অজ্ঞাত কারণে ৭৮ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন সরকার তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়। চাকরি থেকে অব্যাহতির পরে ৭ সন্তান নিয়ে অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটতো আমাদের।
তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন সময় মুক্তিযোদ্ধার তালিকা তৈরি সময় আমার স্বামীর নাম তালিকাভুক্ত করেনি। পরে তার নাম তালিকাভুক্ত করতে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা নেতারা মোটা অংকের টাকা চান। টাকা দিতে না পারায় স্বামীর নাম তালিকাভুক্ত হয়নি।
আমি কোনো ভাতা চাই না, স্বামীর মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দেখে মরতে চাই। আর স্বামীর মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পেতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
স্থানীয় বীর প্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ওয়ারেন্ট অফিসার পার্শ্ববর্তী শিকদার মল্লিক গ্রামের সোলায়মান মল্লিক জানান, দেশে যুদ্ধ শুরু হলে মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণে ভারত চলে যাই।
দেশে ফিরে জানতে পারি সিপাহী মোকলেছুর রহমান পাকিস্তানে আটক আছেন। যুদ্ধের পর বিমান বাহিনীর এমওডিসি কোরের সব সদস্যরা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পেলেও মোকলেসুর রহমান স্বীকৃতি পাননি।
এ ব্যাপারে উপজেলার শ্রীরামকাঠী ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধা ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার আক্রাম হোসেন হাওলাদার এ প্রতিবেদককে বলেন, সিপাহী মোকলেছুর রহমানের নাম শুনেছি।
কিন্তু তিনি তার চাকরি থেকে বাড়ি ফেরার পর জীবদ্দশায় আমাদের সঙ্গে ওই ভাবে আগ্রহ নিয়ে যোগাযোগ করেননি। এদিকে তার ব্যাপারে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শেখ আব্দুল লতিফ এ বিষয়ে কিছুই জানেন না।