বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:৪১ পূর্বাহ্ন

ধ’র্ষণ থেকে বাঁচতে কিশোরীর নদীতে ঝাঁপ

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ৬ জুলাই, ২০২০
  • ২২৮ Time View

লঞ্চ স্টাফদের হাত থেকে নিজেকে বাঁচাতে মেঘনা নদীতে ঝাঁপ দিলেন ভোলার তজুমদ্দিনের এক কিশোরী। প্রায় ৩ ঘণ্টা নদীতে ভাসার পর জেলেদের স’হায়তায় ফিরে পান নতুন জীবন।

১৬ বছর বয়সী ওই কিশোরী কাজের সন্ধানে কর্ণফুলী-১৩ লঞ্চের যাত্রী হয়ে ঢাকায় যাওয়ার পথে শনিবার (০৪ জুলাই) সন্ধ্যায় তজমুদ্দিনের ভুঁইয়া গ্রাম সংলগ্ন মেঘনা নদীতে এ ঘটনা ঘটে।

এ’দিকে লঞ্চ-স্টাফরা তাকে উদ্ধার না করেই গন্তব্য ঢাকায় চলে যায়। বর্তমানে তিনি তজুমদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছে। মেঘনার মধ্যবর্তী তেলিয়ার চরের কবির হোসেনের মেয়ে ওই কিশোরী।

হাসপাতালে ভর্তি কি’শোরী জানান, কাজের সন্ধানে ঢাকায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে শনিবার সন্ধ্যায় তজুমদ্দিন ঘাট থেকে কর্ণফুলী-১৩ লঞ্চে উঠেন।

লঞ্চে উঠার পর থেকেই কয়েকজন স্টাফ তাকে বিভিন্ন কুপ্রস্তাব দেয় এবং উত্যক্ত করতে থাকে। এক পর্যায়ে লঞ্চের কেবিনে ঢোকানের জন্য টানা-হেঁচড়া শুরু করলে নিরুপায় হয়ে মেঘনা নদীতে ঝাঁপ দেন তিনি।

লঞ্চ কর্তৃপক্ষ তাকে উদ্ধার করতে একটি বয়া ফেললেও পানির স্রোত বেশি থাকায় বয়া ধরতে পারেনি। পরবর্তীতে তাকে উদ্ধার না করেই ঢাকার উদ্দেশ্যে চলে যায় লঞ্চটি।

নদীতে ঝাঁপ দেয়ার প্রায় ৩ ঘণ্টা পর জেলেদের ট্রলার এসে তাকে উদ্ধার করে তজুমদ্দিন হাসপাতালে ভর্তি করে।

উদ্ধার করা নৌকার জেলে রায়হান জানান, তারা নদীতে মাছ ধরার জন্য ট্রলার প্রস্তুত করছিলেন। এমন সময় নদীর মাঝে মেয়েটির ‘বাঁচাও বাঁচাও’ বলে চিৎকার শুনে তারা এগিয়ে যান এবং মেয়েটিকে উদ্ধার করে।

পরে তাকে মিজান তালুকদারসহ স্থা’নীয়রা হাসপাতালে ভর্তি করে।

তজুমদ্দিন উপজেলা ভাইস চে’য়ারম্যান মহিউদ্দিন পোদ্দার জানান, জেলেরা উদ্ধারের পর বিষয়টি তাকে জানায়। পরে তিনি ইউএনও এবং ওসির সাথে কথা বলে হাসপাতাল ভর্তি করান। তার সামনেও লঞ্চ স্টাফদের টানা হেঁচড়ার কথা মেয়েটি বলেছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কবির সোহেল জানান, কিশোরী নদীতে ঝাঁপ দেয়ার সময় ডান হাতে আঘাত পেয়েছে।

জেলেরা নদী থেকে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে আনার পর থেকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। বর্তমানে ঝুঁকিমুক্ত আছে।

তজুমদ্দিন থানার ওসি এস এম জিয়াউল হক জানান, চিকিৎসা শেষে কিশোরীর বক্তব্য নেয়ার পর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া অভিভাকদের খুঁজে তাদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

তজুমদ্দিন উপজেলা নির্বাহী অফিসার আল নোমান জানান, কিশোরীকে সুস্থ করতে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিতে হাসপাতালকে বলা হয়েছে।

মেয়ের বক্তব্য অনুযায়ী দায়ীদের চিহ্নিত করে শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। প্রয়োজনে লঞ্চের সকল স্টাফদের ডেকে পাঠানো হবে।

কর্ণফুলী-১৩ লঞ্চের মালিক মো. ছালাউদ্দিন মিয়া জানান, লঞ্চের কোন স্টাফ এ ধরনের ঘটনার সাথে জড়িত ছিল না।

মেয়েটি ঝাঁপ দেয়ার পর লঞ্চ থেকে বয়া ফেলা হয়েছিল। ধরতে পারেনি। সাথে সাথে অন্য একটি জেলে ট্রলারে তাকে উদ্ধার করা হয়েছে।

লঞ্চ স্টাফদের দেয়া তথ্যের বরাত দিয়ে তিনি আরও বলেন, ওই কিশোরী ইঞ্জিন রুমের কাছে সিট নিয়েছিল। তার পাশে সিট নেয়া কিছু ছেলে মেয়েটিকে বিরক্ত করছিল বলে স্টাফরা জানিয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2019 bhabisyatbangladesh
Developed by: A TO Z IT HOST
Tuhin