শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০১:০৬ পূর্বাহ্ন

‘নাকে স্প্রে করা ভ্যাকসিন করোনায় বেশি কার্যকর’

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ২৯ জুন, ২০২০
  • ২৭৫ Time View

বিশ্বের ১ কোটির বেশি মানুষ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই আরো কয়েক কোটি মানুষ আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বিশ্ববাসী এখন অনেকটাই তাকিয়ে রয়েছে ভ্যাকসিনের দিকে।

যুক্তরাজ্যের শীর্ষ ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি আসথ্রাজেনিকার হাত ধরে তৈরির পথে অক্সফোর্ডের বিজ্ঞানীদের আবিষ্কৃত ভ্যাকসিন। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে এ বছরের আগস্ট-সেপ্টেম্বরের মধ্যেই তা বাজারে আশার সম্ভাবনা রয়েছে।

অক্সফোর্ডের তৈরি ভ্যাকসিনটি ইনজেকশনের মাধ্যমে মানবদেহে প্রয়োগ করা হচ্ছে। যুক্তরাজ্যের ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনও তৈরি করেছে ইনজেকশন মাধ্যমে প্রয়োগ করার একটি ভ্যাকসিন।

দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ই ইনজেকশনধর্মী ভ্যাকসিন তৈরি করলেও উভয় প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানীরা মনে করেন, ভ্যাকসিনটি ইনজেকশনের চেয়ে ইনহেলার কিংবা নাকে স্প্রে করলেই করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে বেশি কার্যকর হবে।

ঐ বিজ্ঞানীরা বলছেন, ইনহেলার কিংবা নাকে স্প্রে করা হলে ভ্যাকসিনটি সরাসরি ফুসফুসে পৌঁছে মানুষকে করোনা ভাইরাস থেকে সুরক্ষা দেবে। তাদের মতে, করোনা ভাইরাস যেহেতু ফুসফুসের ওপর বেশি আক্রমণ করে, তাই সেখানেই এর যুদ্ধটা বেশি লড়তে হবে।

দুটি বিশ্ববিদ্যালয়েরে পক্ষ থেকেই বর্তমানে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধী ইনজেকশনধর্মী ভ্যাকসিন তৈরির কাজ করা হচ্ছে। ইনজেকশনের মাধ্যমে সাধারণত শরীরের পেশিতে প্রয়োগ করা হয় ভ্যাকসিন। বর্তমানে এই পদ্ধতিতেই মানবদেহে করোনার ভ্যাকসিন প্রয়োগ করে পরীক্ষা চালানো হচ্ছে।

নাকে স্প্রে করা বা ইনহেলারের মাধ্যমে প্রয়োগ করার ভ্যাকসিনের সুবিধা হিসেবে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডন উভয় প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানীদের যুক্তি—শরীরের অভ্যন্তরের বিভিন্ন অঙ্গ যেমন—ফুসফুস ও শ্বাসনালির বহির্ভাগ মিউকাস মেমব্রেনের তৈরি সুরক্ষা টিস্যু দ্বারা আবৃত থাকে।

এছাড়া নাক ও মুখের প্রান্তভাগ যেখানে সাধারণত পরজীবীদের আক্রমণের শিকার হয়, সেখানে এ ধরনের স্প্রে ভ্যাকসিনটি প্রয়োগ করা হলে তা করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে খুবই কার্যকর হবে।

শরীরের অভ্যন্তরে প্রবেশের আগেই ভ্যাকসিনটি কোভিড-১৯ শনাক্ত করে আটকে দিতে সক্ষম হবে। সাধারণত বাচ্চাদের ইনফ্লুয়েঞ্জার ক্ষেত্রে এ ধরনের ইনহেলার নাকে স্প্রে করা হয়।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তৈরি ভ্যাকসিনটি ইতিমধ্যে ব্রিটেন, ব্রাজিল ও দক্ষিণ আফ্রিকার দেশগুলোর ১০ হাজার মানুষের ওপর প্রয়োগ করা হচ্ছে। ব্রাজিলের সাও পাওলোয় ২ হাজার এবং রিও ডি জেনিরোয় ১ হাজার স্বেচ্ছাসেবীর দেহে প্রয়োগ করা হচ্ছে অক্সফোর্ডের তৈরি করা ভ্যাকসিনটি।

আর গত সপ্তাহেই প্রথম স্বেচ্ছাসেবীর শরীরে প্রয়োগ করা হয়েছে ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের সম্ভাব্য ভ্যাকসিনটি। পরীক্ষা কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছেন ৩০০ স্বাস্থ্যবান স্বেচ্ছাসেবী। ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডন জানিয়েছে,

তাদের সম্ভাব্য ভ্যাকসিন পশ্চিম লন্ডনে এক স্বেচ্ছাসেবীর ওপর প্রয়োগ করা হয়েছে। ঐ স্বেচ্ছাসেবীর শারীরিক অবস্থা সর্বশেষ পর্যবেক্ষণ পর্যন্ত ভালো ছিল; কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।

গবেষকেরা বলছেন, ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের ভ্যাকসিনটি যদি নিরাপদ বলে প্রমাণিত হয় এবং স্বেচ্ছাসেবীদের শরীরে রোগ প্রতিরোধব্যবস্থার প্রত্যাশিত সাড়া পাওয়া যায়, তাহলে চলতি বছরের শেষ নাগাদ আরো বড় পরিসরে পরীক্ষা শুরু হবে।

এর আগে ভ্যাকসিনটি প্রাণীর ওপর পরীক্ষা করে নিরাপদ বলে প্রমাণিত হয়েছে। ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের বিজ্ঞানীদের দাবি, ইউরোপকে দ্বিতীয় দফা করোনা সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে ভূমিকা রাখবে তাদের তৈরি ভ্যাকসিনটি।—ডেইলি মেইল

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2019 bhabisyatbangladesh
Developed by: A TO Z IT HOST
Tuhin