হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর ম্যাচে লড়াই করতেও পারল না বাংলাদেশ। প্রথম দু্ই ম্যাচের মতো শেষ ম্যাচেও বাংলাদেশকে উড়িয়ে শ্রীলঙ্কা পেল ৩-০ ব্যবধানে জয়ের স্বাদ। কলম্বোর আর প্রোমাদাসা স্টেডিয়ামে ১২২ রানে হেরে গেছে টাইগাররা।
স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার ছুঁড়ে দেয়া ২৯৫ রানের বিশাল চ্যালেঞ্জ টপকাতে নেমে সৌম্য ছাড়া স্বাগতিক বোলারদের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি কোনো বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান। যার ফলশ্রুতিতে ৩৬ ওভারে ১৭২ রানেই অলআউট হয়ে যায় টাইগাররা।
শেষ দিকে তাইজুল ইসলাম ব্যাটিং শেখালেন জেনুইন ব্যাটসম্যানদের। তার স্বল্পস্থায়ী ঝড়ের ওপর ভর করে বাংলাদেশের স্কোর দেড়শ’ পার হয়। শেষ পর্যন্ত থামে ১৭২ রানে। তাইজুল ইসলাম অপরাজিত থাকেন ২৭ বলে ৩৯ রান করে। ৫টি বাউন্ডারি এবং ১টি ছক্কার মার মারেন তিনি।
লক্ষ্য তাড়ায় শুরুতেই ফিরে যান তামিম। বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক বিদায় নিলেন দ্বিতীয় ওভারেই। টানা ৬ ম্যাচে বোল্ড হওয়ার পর এবার অন্যভাবে আউট হলেন তামিম। তবে থেকে গেলেন বাজে সময়ের চক্রেই। আউট হলেন ৬ বলে ২ রান করে।
টানা দুটি বাউন্ডারিতে জেগে ওঠার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন এনামুল হক। কিন্তু আরেকটির চেষ্টায় বিদায় নিলেন। পারলেন না দলে ফেরার সুযোগটি কাজে লাগাতে।
নিজের প্রথম ওভারেই বাংলাদেশকে বড় ধাক্কা দিলেন দাসুন শানাকা। বিদায় করে দিলেন মুশফিকুর রহিমকে। সিরিজে বাংলাদেশের সেরা ব্যাটসম্যান মুশফিক। আগের দুই ম্যাচে করেছিলেন ৬৭ ও অপরাজিত ৯৮। কিন্তু এবার আর পারলেন না বিপদ থেকে দলকে উদ্ধার করতে। বরং আলগা শটে বিদায় নিলেন তিনিও।
সিরিজে টানা তৃতীয়বার ব্যর্থ হলেন মোহাম্মদ মিঠুন। বিদায় নিলেন দলের বিপদ আরও বাড়িয়ে। দাসুন শানাকার শর্ট অব লেংথ বলটি অফ স্টাম্পের বাইরে থেকে পুল খেললেন মিঠুন। একটু বেশি উঁচুতেও ছিল বল। তাতেই নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলেন না শট।
৬০ রানে চার উইকেট হারিয়ে ফেলা দলকে পথ দেখানোর ইঙ্গিত দেন সৌম্য ও অপফর্মে থাকা মাহমুদুল্লাহ। কিন্তু ফের ব্যর্থ দলের অভিজ্ঞ এই খেলোয়াড়। অপফর্মের বৃত্তটা ভাঙতে পারলেন না তিনিও।
আগের দুই ম্যাচের মতোই দলের বিপদ আরও বাড়িয়ে অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান বিদায় নিলেন আলগা শটে। স্রোতের বিপরীতে এক লড়াই করে যাচ্ছেন সৌম্য সরকার। সেই পথচলায় স্পর্শ করলেন ফিফটি।
সহজাত আগ্রাসী ব্যাটসম্যান সৌম্য এ দিন পুরো ভিন্ন চেহারায়। তিনে নেমে শুরুটা করেছিলেন অনেক মন্থর। প্রথম বাউন্ডারির আগে ৩৫ বলে রান ছিল ১৭। পরে ছক্কা মেরে ইঙ্গিত দেন ছন্দে ফেরার। আরেক পাশে নিয়মিত উইকেট পড়লেও সৌম্য চালিয়ে গেছেন লড়াই। ফিফটি ছুঁয়েছেন ৬১ বলে।
রিভিউ নিয়ে একবার টিকে গেলেও খুব বেশি দূর এগোতে পারলেন না সাব্বির রহমান। বদলি ফিল্ডার ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার অসাধারণ ক্যাচ ফেরাল তাকে। একের পর এক উইকেট হারানোর লড়াইয়ে সামিল হলেন মেহেদী হাসান মিরাজও। উইকেট পতনের স্রোতে একা বাঁধ দিয়েছিলেন যিনি, সেই সৌম্য সরকার বিভ্রান্ত হলেন আকিলা দনাঞ্জয়ার লেগ ব্রেকে। বোল্ড হয়ে শেষ হলো তার লড়াই।
শেষ দিকে থানিকটা বিনোদন দিলেন তাইজুল ইসলাম। তার ২৮ বলে ৩৯ রানের ইনিংস ব্যবধান কমাল খানিকটা। এরপরও পরাজয়ের ব্যবধান বাংলাদেশের জন্য যারপরনাই হতাশার।