বিনোদন ডেস্ক : বাইরে কেবলই অ্যাম্বুলেন্সের চিৎকার। মৃ’ত্যুভ’য় ছাড়া যেন আর কোনো অনুভূতি নেই শ্রাবন্তীর। যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী বাংলাদেশের এই টেলিভিশন তারকার দিনরাত এক হয়ে গেছে। দুই শতাধিক বাঙালি মা’রা গেছেন সেখানে। ব্রুকল্যান্ডের চেয়ে কুইন্সের অবস্থা বেশি ভ’য়াব’হ। নিউইয়র্কে মৃত্যুহার কমেছে বটে, কিন্তু সং’ক্র’মণের হার প্রতিদিনই বাড়ছে। এ অবস্থায় মানুষ কেমন থাকে?
শ্রাবন্তীর মনে হচ্ছিল, মানসিক রোগী হয়ে যাচ্ছেন। এপ্রিলের শুরুতে বড় বোনের মেরিল্যান্ডের বাড়িতে পার হন তিনি। একসময়কার জনপ্রিয় মডেল ও অভিনেত্রী শ্রাবন্তী। প্রায় পাঁচ বছর হলো তিনি যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন। ২০১০ সালে স্যাটেলাইট চ্যানেলের কর্মকর্তা খোরশেদ আলমকে বিয়ে করেছিলেন। ২০১৮ সালে তাদের বিচ্ছে’দ হয়ে যায়। সেই সংসারে তাদের আছে দুটি মেয়ে। মায়ের সঙ্গে তারা থাকে নিউইয়র্কে। করোনা মহামা’রিতে এখন তাদের নিয়ে অনি’শ্চয়তার দিন কাটাচ্ছেন বাংলাদেশের এই প্রিয়মুখ।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে মুঠোফোনে শ্রাবন্তী বললেন, ”যুক্তরাষ্ট্রের সরকার শুরুতে তেমন পা’ত্তা দেয়নি। এখন বুঝতে পারছে যে কী ভ’য়াব’হ বিপ’র্যয়ের মধ্যে পড়েছে তারা।” বাংলাদেশের অভিনয়শিল্পীদের অনেকেই সেখানে থাকেন। তাদের সঙ্গে কি যোগাযোগ হয়েছিল শ্রাবন্তীর? পরস্পরের খবর কি জানেন তারা? শ্রাবন্তী বলেন, ”খাইরুল আলম পাখি, টনি ডায়েস, প্রিয়া ডায়েস, তমালিকা কর্মকার, তানিয়া আহমেদ, রিচি, মিলা, মোনালিসা, নওশিন, হিল্লোল—সবার সঙ্গেই যোগাযোগ হয়। সবাই মিলে মেসেঞ্জারে একটা গ্রুপ খুলেছি। সব সময়ই তাদের সঙ্গে যোগাযোগ হচ্ছে। এতে মানসিক শক্তি পাচ্ছি। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকেও অনেক সহকর্মী খোঁ’জ নিচ্ছেন।”
ওয়ালমার্টে চাকরি নিয়েছিলেন শ্রাবন্তী। এক বছর পর সেটা আর ভালো লাগেনি তার। তিনি বলেন, ”যদিও আমেরিকায় কোনো কাজই ছোট না, তারপরও ওয়ালমার্টে কাজ করতে আমার কেমন যেন লাগত। তাই ছেড়ে দিলাম। মেডিকেল সহকারীর নয় মাসের একটা কোর্সে ভর্তি হয়েছিলাম। সবকিছু ঠিক থাকলে সেটা শেষ করে এত দিন ইন্টার্নশিপ করার কথা ছিল। কিন্তু করোনার কারণে আ’টকে গেছে।”
এত বিষয় থাকতে মেডিকেল সহকারীর কোর্স কেন? জানতে চাইলে শ্রাবন্তী বলেন, ”আমার যে বয়স, তাতে অন্য কোনো কোর্সে ভর্তি হয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব না। বাচ্চা দুটোকে দেখাশোনা করতে হয়। এ ছাড়া মেডিকেল সহকারীর কাজটা সেবামূলক, কোর্সটা তাই আমার পছন্দ হয়েছিল। তা ছাড়া এখানে মেডিকেল সহকারী কোর্সের সনদ ও লাইসেন্স থাকলে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার ভালো সুযোগ আছে।”
গত পাঁচ বছরে দুবার বাংলাদেশে এসেছিলেন শ্রাবন্তী। শেষবার এসেছিলেন ২০১৮ সালে, বিচ্ছে’দের সময়। বিচ্ছে’দের পর অনেক দিন হয়ে গেল। নতুন করে সংসার শুরু করার ইচ্ছে আছে তার? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ”বিয়ের আর বিন্দুমাত্র সাধ নেই, বিয়ের সাধ মিটে গেছে আমার। মেয়ে দুটোকে পড়াশোনা করাব, এটাই আমার জীবন।” সূত্র : প্রথম আলো