সাইদুর রহমান পান্থ, বরিশাল ব্যুরো: শেবাচিম হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের সিনিয়র কনসালট্যান্ট (সহকারী অধ্যাপক) ডা. এমএ আজাদ সজলের মৃ’ত্যু নিয়ে নতুন র’হস্য সৃষ্টি হয়েছে। সোমবার তার ম’রদেহ মমতা স্পেশালাইজড হাসপাতালের লিফটের নিচ থেকে উ’দ্ধার করা হয়।
আই’নশৃঙ্খলা বা’হিনীর সামনে এসে পড়েছে দুটি গুরুত্বপূর্ণ আ’লামত। যার একটি- মমতা স্পেশালাইজড হাসপাতালের তৃতীয় তলায় অপারেশন থিয়েটারের সামনে লিফটের দরজায় র’ক্তের দাগ ও অপরটি লিফটের দরজায় আ’ঘাতের চি’হ্ন।
এ দুটি আ’লামত রহ’স্যের জা’ল আরও ঘনী’ভূত করে তুলেছে ঘটনা’স্থলে তদ’ন্তে যাওয়া র্যা’ব ও পুলি’শের দুটি টিমকে। তাদের মতে ‘যিনি আগে লিফটে উঠতে চেয়েছেন, তিনি আগে থেকেই আ’হত ছিলেন। তার হাত থেকেই এ র’ক্ত লাগতে পারে।
আবার ধ’স্তাধ’স্তির কারণে দরজায় আঘা’ত লাগতে পারে। অবশ্য এটি দুর্ঘ’টনা কিনা সে বিষয়টিও ত’দন্তের ক্ষেত্রে প্রাধান্য পাচ্ছে।’ তবে ‘লিফট দরজার অর্ধেকে এসে থেমে ছিল, ডাক্তার আজাদ দরজা খুলে লিফট না দেখে পা বাড়ানোয় নিচে পড়ে যান, সেটিও ত’দন্ত টিমের কাছে খাপছাড়া লাগছে।
যদি লিফট দরজার মাঝে থেমে থাকে, তবে ভুল করে উঠতে গেলে তার মাথায় আ’ঘাত পাওয়ার কথা। অথবা হাতের কবজিতে। কিন্তু তার মাথায় আ’ঘাত ছিল না। বরং হাতের সোল্ডার ভা’ঙা ছিল।’ এ র’হস্যের জা’ল ভেদ করতে ৩ দিন ধরে তদন্ত করছে র্যা’ব ও পুলি’শের পৃথক টিম।
এদিকে তদন্তকারীরা এসব রহ’স্যের উত্তর খুঁজতে মমতা স্পেশালাইজড হাসপাতালে লিফট সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের লোকেদের বরিশালে আনার বিষয়টিতে গুরুত্ব দিচ্ছেন। এছাড়া রহ’স্য উ’দ্ঘাটনে জি’জ্ঞাসাবাদ কার্যক্রম থেমে নেই। হেফাজতে নেয়া মমতা স্পেশালাইজড হাসপাতালের ৯ জন কর্মকর্তা কর্মচারীকে এখনও জিজ্ঞা’সাবাদ চলছে।
সর্বশেষ বৃহস্পতিবারও দিনভর তাদের জি’জ্ঞাসাবাদ করা হয়। জানা গেছে, ডা. আজাদ মমতা হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় ব্যক্তিগত চেম্বারে রোগী দেখতেন। আর একই ভবনের সপ্তম তলার একটি কক্ষে ব্যাচেলর জীবনযাপন করতেন।
গু’ঞ্জন রয়েছে ওই কক্ষেই তার দুই মাসের সঞ্চিত প্রচুর টাকা ছিল। যা রোগী দেখা ও অপারেশনের ফি বাবদ তিনি উপার্জন করেছিলেন।তবে এমন গুঞ্জনকে গু’জব বলে উড়িয়ে দিয়েছেন হাসপাতালটির কর্ণধার বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের প্রধান ডা. জহিরুল হক মানিক।
তিনি বলেন, ‘ডা. আজাদের রোগীর সংখ্যা নিতান্তই কম ছিল। আর ২ মাসে ২টি অপা’রেশনও করেননি তিনি। তার কাছে অনেক টাকা থাকার বিষয়টি ঠিক নয়। তাই এখনও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন এটি দু’র্ঘটনা ছাড়া কিছু নয়।’
তবে ডা. এমএ আজাদকে প’রিকল্পি’তভাবে হ’ত্যা করা হয়েছে বলে মনে করছেন তার পরিবারের লোকেরা। নি’হতের ভাই ডা. শাহরিয়ার বাদী হয়ে মঙ্গলবার রাতে কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি হ’ত্যা মাম’লাও করেছেন।
কোতোয়ালি মডেল থা’নার ওসি নুরুল ইসলাম বলেন, ‘ত’দন্ত এখনও চলছে। জিজ্ঞা’সাবাদের জন্য আনা ৯ জনের মধ্যে ৭ জনকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। দু’জনকে এখনও জি’জ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তবে এখনও কোনো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য-উপাত্ত আসেনি।র্যা’ব ৮-এর অধিনায়ক ও কমান্ডিং অফিসার আতিকা ইসলাম বলেন, র্যা’ব ও পুলিশ ত’দন্ত এখনও চালিয়ে যাচ্ছে। এখনও কোনো গু’রুত্বপূর্ণ তথ্য আসেনি।
সোমবার ইফতারের পূর্বে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ থাকা ডা. এমএ আজাদ সজলের মৃ’তদেহ মঙ্গলবার সকালে নগরীর কালীবাড়ি রোডের বেসরকারি মমতা স্পেশালাইজড হাসপাতালের লিফটের নিচ থেকে উদ্ধার করা হয়। এ সময় তার ডান পা ভা’ঙা ছিল। পিঠে আ’ঘাতের চি’হ্ন ছিল, দুই হাতের শো’ল্ডারও ভা’ঙা ছিল। সুত্র: দৈনিক যুগান্তর