শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ১০:৪৩ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ-ট্রায়ালে যাচ্ছে গণস্বাস্থ্যের কিট

Reporter Name
  • Update Time : শুক্রবার, ১ মে, ২০২০
  • ৪০৭ Time View

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত করোনাভাইরাস শনাক্তে ‘জি র‍্যাপিড ডট ব্লট’ কিটের ট্রায়ালের অনুমতি দিয়েছে সরকার। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (বিএসএমএমইউ) গণস্বাস্থ্যের কিট পরীক্ষা করা হবে।

আর এই হাসপাতালে পরীক্ষার অনুমতি দিয়েছে সরকারের ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র ও ওষুধ প্রশাসন সূত্র বাংলা ট্রিবিউনকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।

বৃহস্পতিবার (৩০ এপ্রিল) গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘আজ ওষুধ প্রশাসন থেকে আমাদের চিঠি দিয়ে বিএসএমএমইউতে কিট পরীক্ষার অনুমতি দেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়। আমরা এজন্য তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই।’

অন্যদিকে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর ইতোমধ্যে বিএসএমএমইউর উপাচার্যকেও চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানিয়েছে বলে জানান ডা. জাফরুল্লাহ।

তিনি আরও বলেন, ‘আগামী শনিবার (২ মে) কিটের ট্রায়াল চালানোর বিষয়ে বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ বসবে। আশা করি, আগামী ১০ দিনের মধ্যে এই প্রক্রিয়া শেষ হবে এবং আগামী মাসের মধ্যে আমরা দেশবাসীকে সুখবর দিতে পারবো।’

জাফরুল্লাহ বলেন, কিট পরীক্ষার অংশ হিসেবে বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদে (বিএমআরসি) ৫০ হাজার টাকা ফি দিয়ে আবেদন করতে হয়। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র ইতোমধ্যে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে। অন্যদিকে বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ গণস্বাস্থ্যের কিট নিয়েছে।

ট্রায়ালের অনুমতি দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুবুর রহমানও।

তিনি বলেন, বিএসএমএমইউ বা আইসিডিডিআর,বিতে অথবা দুই জায়গাতেই গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কিটের ট্রায়াল কার্যক্রম (কার্যকারিতা পরীক্ষা বা পারফরমেন্স ট্রায়াল) চালানো হবে। তারা এ দুই জায়গাতে করতে চেয়েছেন, আমরা তাদের ট্রায়ালের জন্য অনুমতি দিয়েছি। পারফরমেন্স ট্রায়ালের পর তার ফলাফল আমাদের দিলে আমরা তা মূল্যায়ন করবো, এরপরের ধাপে রয়েছে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া।

তার মানে কোভিড-১৯ পরীক্ষার জন্য আপনারা অনুমতি দেননি, এ বিষয়ে জানতে চাইলে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘এর তো এখনও রেজিস্ট্রেশনই হয়নি, বাণিজ্যিকভাবে অনুমোদন তো তার আগে দেওয়া যায় না। তার আগে ট্রায়াল করে দেখতে হবে সেটা কার্যকর, নাকি নয়, ভালো নাকি খারাপ।

যদি ভালো হয় তাহলে রেজিস্ট্রেশন হবে, আর যদি কার্যকর না হয় তাহলে রেজিস্ট্রেশনই হবে না। কিট ভালো কাজ করে কিনা সেটা দেখতে হবে আগে, সেটা দেখার জন্যই পারফরমেন্স ট্রায়াল। এ বিষয়ে ভালো রিপোর্ট আসলে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়াতে যাবো।’

গত ২৫ এপ্রিল গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিদের কাছে করোনা টেস্টের কিট হস্তান্তর করা হয়। এরপর থেকে ওষুধ প্রশাসনের কাছে কিটের ট্রায়াল চালানোর অনুমতির জন্য দেনদরবার করে আসছে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র।

এক পর্যায়ে দুই পক্ষ একে অপরকে দোষারোপ শুরু করে। গণস্বাস্থ্য অভিযোগ তোলে ওষুধ প্রশাসন কিটের ট্রায়ালের বিষয়ে সহায়তা করছে না। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এমন অভিযোগ অস্বীকার করা হয়।

এর  আগে ১৭ মার্চ করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের পরীক্ষার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক গবেষণায় কিট উৎপাদনের কথা জানায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। পরে ১৯ মার্চ কিট উৎপাদনে যায় প্রতিষ্ঠানটি।

করোনাভাইরাস শনাক্তকরণের ‘জিআর র‌্যাপিড ডট ব্লট ইমিউনোঅ্যাসি’ কিট তৈরি করেছে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের গবেষক ড. বিজন কুমার শীলের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি দল। দলের অন্য সদস্যরা হলেন ড. নিহাদ আদনান, ড. মোহাম্মদ রাঈদ জমিরউদ্দিন, ড. ফিরোজ আহমেদ।

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র  উদ্ভাবিত টেস্টিং কিট ‘জিআর কোভিড-১৯ ডট ব্লট’ র্যা পিড টেস্টিং কিটের মাধ্যমে একই সঙ্গে এন্টিজেন-এন্টিবডি শনাক্ত করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন এই কিট উদ্ভাবনকারী দলের প্রধান অণুজীব বিজ্ঞানী ড. বিজন কুমার শীল।গণস্বাস্থ্যের করোনা ভাইরাস শনাক্তের কিট বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি একথা জানান।

ড. বিজন কুমার শীল বলেন, আমরা এন্টিজেন ডিটেক্ট করেছি। কেউ যদি এন্টিজেন পজিটিভ হয়, তাহলে তিনি ১০০ শতাংশ পজিটিভ। এতে কোনো সংশয় নেই যে তার শরীরে মধ্যে ভাইরাস গ্রো করছে। এন্টিবডি হচ্ছে যে, কেউ ভাইরাস আক্রান্ত হয়েছেন, কিন্তু জানতেই পারেননি। যেমন ডেঙ্গুর ক্ষেত্রে আমরা অনেক সময় দেখছি একজনের ডেঙ্গু হয়েছে, তার মধ্যে ডেঙ্গুর লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। কিন্তু তার আশপাশের বাকি পাঁচজন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়নি, কিন্তু তাদের শরীরে এন্টিবডি দেখা গিয়েছে।

‘ডেঙ্গুর এখনও প্রাইমারি চেইন ইনফেকশন আছে। সব সময় একটা কথা স্মরণ রাখবেন, ভাইরাস ও শরীরের ইমিউন সিস্টেমের ইন্টার রিঅ্যাকশান না হলে কখনও কোনো রোগীর শরীরে রোগের কোনো লক্ষণ দেখা দেবে না। সামান্যতম হলেও লক্ষণ দেখা দেবে। হয়তো একটু কাশি বা জ্বর হয়ে আবার ভালো হয়ে যাবে।’

তিনি বলেন, অনেকেই অনেক ধরনের কথা বলছেন। আমি তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, ভাইরাস যে মুহূর্তে মানুষের শরীরে প্রবেশ করে করে, সেই মুহূর্ত থেকে ইমিউন সিস্টেম কাজ করা শুরু করে দেয় সময় বিলম্ব না করে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2019 bhabisyatbangladesh
Developed by: A TO Z IT HOST
Tuhin