শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ০৯:৩০ পূর্বাহ্ন

করোনা প্রতিরোধে রেমডেসিভিরের কার্যকারিতা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত: ড. ফাউচি

Reporter Name
  • Update Time : শুক্রবার, ১ মে, ২০২০
  • ৩৭৩ Time View

করোনা ঠেকাতে রেমডেসিভিরের কার্যকারিতার ‘সুস্পষ্ট প্রমাণ’ পাওয়ার কথা জানালেন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজ’-এর পরিচালক ডা. অ্যান্থনি ফাউচি। যুক্তরাষ্ট্রের এই স্বনামধন্য বিজ্ঞানী জানিয়েছেন, আক্রান্তদের মধ্যে রেমডেসিভির গ্রহণকারীরা অন্যদের তুলনায় কম সময়ের মধ্যে সুস্থ হয়ে ওঠে। তবে এই ওষুধ মৃত্যুহার কমাতে ভূমিকা রাখে কিনা, তা এখনও প্রমাণিত নয়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সত্যি হলে এটি একটি ‘দুর্দান্ত ঘটনা’, তবে ‘ম্যাজিক বুলেট’ নয়। প্রসঙ্গত, ‘ম্যাজিক বুলেট’ বলতে সেই ধরনের প্রতিষেধককে বোঝানো হয়, যা অন্য কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই শরীরের ভেতরকার সুনির্দিষ্ট অণুজীবকে ধ্বংস করতে পারে। বুধবার (২৯ এপ্রিল) হোয়াইট হাউসে ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজ-এর তত্ত্বাবধানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের ১০৬৩ মানুষের ওপর পরিচালিত একটি গবেষণার তথ্য তুলে ধরেন ফাউচি। এদের একাংশকে রেমডেসিভির দেওয়া হয়েছিল। বাকীদের দেওয়া হয়েছিল ভুয়া ওষুধ (প্লেসেবো)। রেমডেসিভির গ্রহণকারীরা গড়ে ১১ দিনের মধ্যে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছে। অন্যদিকে প্লেসেবো গ্রহণকারীদের ছাড়া পেতে সময় লেগেছে গড়ে ১৫ দিন। ফাউচি বলেন, প্রাপ্ত তথ্য থেকে প্রমাণিত হয়েছে, করোনাভাইরাস থেকে মুক্ত হওয়ার সময়সীমাকে কমিয়ে নিয়ে আসার ক্ষেত্রে রেমিডেসিভির সুস্পষ্ট, গুরুত্বপূর্ণ ও ইতিবাচক ভূমিকা রাখে। গবেষণায় দেখা গেছে, রেমডেসিভির গ্রহণকারীদের মৃত্যুহার যেখানে ৮ শতাংশ ছিল, প্লেসেবো গ্রহণকারীদের মৃত্যুহার ছিল ১১.৬ শতাংশ। তবে এই ফলাফল পরিসংখ্যনিকভাবে প্রমাণিত নয়। এর অর্থ হলো, এই পার্থক্য দিয়ে বিজ্ঞানীরা বলতে পারবেন না আসলেই রেমডেসিভির মৃত্যু প্রতিরোধ করে কিনা। ফাউচি বলেন ‘প্রমাণ করা গেছে যে কোনও একটি ওষুধ করোনাভাইরাস প্রতিরোধ করতে সক্ষম’ তারমানে এলো এখন আমাদের চিকিৎসা দেওয়ার সুযোগ উন্মুক্ত হচ্ছে।

তবে ফাউচির বক্তব্য থেকে অনেক বিষয়েই স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়নি। বিবিসির প্রতিবেদনে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, রেমডেসিভির কি কেবল দ্রুত সুস্থ করে, নাকি এটি গ্রহণ করলে নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে চিকিৎসা নিতে হয় না, এটি তরুণ নাকি বয়স্কদের মধ্যে ভালো কাজ করে, অন্য রোগে আক্রান্তদের বেলায় এর আচরণ কী রকম; এমন অনেক প্রশ্নেরই উত্তর জানা যায়নি। ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে প্রাপ্ত ফলাফল অন্যান্য বিশেষজ্ঞের পর্যালোচনাসমেত কোনও মেডিক্যাল জার্নালে প্রকাশ করতে হয়। তবে ফাউচি রেমডেসিভিরের কার্যকারিতার কথা জানাতে দেরি করতে চাননি। তিনি বলেছেন, ফলাফল এতোটাই আশাব্যঞ্জক ছিল যে, গবেষণার স্বার্থে যাদেরকে প্লেসেবো দেওয়া হয়েছিল, নৈতিকভাবেই তাদেরকে রেমডেসিভিরের কার্যকারিতার কথা দ্রুত জানিয়ে দেওয়া দরকার। যেন তারা ওষুধটি গ্রহণ করতে পারে। করোনাভাইরাস আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য এখন পর্যন্ত কোনও অনুমোদিত ওষুধ নেই। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ কার্যকর ওষুধ নিয়ে গবেষণা করছে। এরই একটি হলো রেমডেসিভির। গিলিড সায়েন্সেস-এর তৈরি এ ওষুধটি অতীতে ইবোলার বিরুদ্ধে পরীক্ষা করা হলেও তেমন সফলতা মেলেনি। তবে বিভিন্ন সময়ে পশুর শরীরে চালানো বেশ কয়েকটি পরীক্ষায় দেখা গেছে, সার্স ও মার্স-এর মতো করোনা প্রজাতির ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধ ও চিকিৎসায় এ ওষুধ কার্যকর হতে পারে। তাই এবার করোনাপ্রজাতির নতুন ভাইরাস কোভিড-১৯ এর সংক্রমণের চিকিৎসায় রেমডেসিভির কার্যকর কিনা তা নিয়ে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশ কয়েকটি দেশ পরীক্ষা চালাচ্ছে। সদ্যপ্রকাশিত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক খসড়া প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, চীনে চালানো ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে রেমডেসিভিরের কার্যকরিতা প্রমাণিত হয়নি।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2019 bhabisyatbangladesh
Developed by: A TO Z IT HOST
Tuhin