করোনা ভাইরাসের কারণে বন্ধ থাকা পুঁজিবাজার চালু রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালনা পর্ষদ। সরকারি ছুটির মেয়াদ বাড়লে আগামী ১০ মে থেকে লেনদেন কার্যক্রম শুরু হবে। এইক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সম্মতি নিতে হবে। বৃহস্পতিবার (৩০ এপ্রিল) অনলাইনে আয়োজিত ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদ সভায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গত মার্চে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর ২৬ মার্চ থেকে পুঁজিবাজারের লেনদেন বন্ধ হয়েছে। সরকারি ছুটির মেয়াদ বৃদ্ধির সঙ্গে পুঁজিবাজার বন্ধের সময়ও বেড়েছে। তবে করোনার সংকটে পুঁজিবাজার বন্ধ থাকায় নানামুখী শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ব্রোকারেজ হাউসের আয় না থাকায় কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন দিতে হিমশিম খাচ্ছে। ইতোমধ্যে মার্চের বেতন পরিশোধ করা হয়েছে কিন্তু পুরো এপ্রিল জুড়ে ব্রোকারেজ হাউজের কোনো আয় না থাকায় শঙ্কায় পড়েছেন মালিকরা।
করোনার সংকট উতরিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ পুঁজিবাজারে লেনদেন চালু করলেও কারিগরি সক্ষমতা অভাবে দেশের পুঁজিবাজারে লেনদেন সম্ভব হচ্ছে না। কারণ শেয়ার ক্রয়-বিক্রয়ে সেটেলমেন্ট সংক্রান্ত জটিলতায় লেনদেন ঝুলে আছে। প্রযুক্তির উৎকর্ষ সাধন হলেও ডিএসইর সেটেলমেন্ট অনেকটায় এনালগ রয়ে গেছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন বলেন, লাখ লাখ মানুষের আয়ের উৎস শেয়ারবাজার। তবে করোনাভাইরাসের কারণে গত ২৬ মার্চ থেকে সরকারি সাধারন ছুটির সঙ্গে সঙ্গে এই বাজারও বন্ধ রয়েছে। এতে বিশেষ করে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ ব্রোকারেজ হাউজগুলো ও ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা।’
তিনি বলেন, লেনদেন বন্ধ থাকায় এই ব্রোকারেজ প্রতিষ্ঠানগুলোর কোন আয় নেই। কিন্তু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতনা-ভাতা দিতে হবে। আর ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা আর্থিক সংকটে ভুগছেন। এছাড়া লেনদেন বন্ধ থাকার কারণে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অনাস্থা তৈরি হচ্ছে। তাই লেনদেন চালু করার বিষয়ে আজ ডিএসইর অনানুষ্ঠানিক পর্ষদ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় লেনদেন চালু করার সুবিধা-অসুবিধার বিষয়গুলো তুলে ধরা প্রতিবেদন উপস্থাপনে পর চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ডিএসই ব্যবস্থাপনা বিভাগ থেকে লেনদেন চালুর বিষয়ে একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করে। সর্বোপরি আগামী ১০ মে থেকে লেনদেন চালু করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। করোনাভাইরাসে সরকারি ছুটি বাড়লেও ওইদিন লেনদেন চালু হবে।’
তিনি বলেন, করোনায় দেশে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি হলে লেনদেন চালু করা সম্ভব হবে না। এজন্য সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আরেকটি রিপোর্ট তৈরী করার জন্য বলা হয়েছে। এরমধ্যে বিশেষভাবে ব্যাংকিং সময়ের স্বল্পতার সঙ্গে লেনদেন চালুর সম্ভাব্যতা, স্বাস্থ্য ঝুঁকির বিষয়, সিডিবিএলের সক্ষমতা, স্টক এক্সচেঞ্জের সক্ষমতা ইত্যাদি তুলে ধরার জন্য বলা হয়েছে।